Bangla News

পাসপোর্ট, এমআরপি উঠিয়ে দেয়ার চিন্তা

বাংলা ম্যাগাজিন ডেস্ক : দেশের সমস্ত নাগরিককে ই-পাসপোর্ট দেয়ার উদ্যোগ নিচ্ছে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর। একই সঙ্গে এমআরপি (মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট) উঠিয়ে দেয়ার চিন্তা করছে কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশি পাসপোর্টকে আন্তর্জাতিক মানের শীর্ষ অবস্থানে নিয়ে যাওয়া, বহির্বিশ্বের বিমানবন্দরে দ্রুত ইমিগ্রেশন সুবিধা নেয়া, হাতে লেখা পাসপোর্ট উঠিয়ে দেয়া, পাসপোর্ট সেবা ডিজিটালকরণ, নাগরিককে দ্রুত পাসপোর্ট ডেলিভারি দেয়া, পাসপোর্টের অনলাইন কার্যক্রমকে বেগমান করা, পুলিশ ভেরিফিকেশন দ্রুতকরণ ও প্রবাসীদের দাবির বিষয়টি বিবেচনায় নিয়ে সরকার এ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, করোনার থাবায় পাসপোর্টে দীর্ঘ জট লাগে। এমআরপি ও ই-পাসপোর্টসহ প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পাসপোর্ট আটকা পড়ে অধিদপ্তরে। ডেলিভারিতে জট লাগায় বড় চিন্তার মধ্যে পড়ে কর্তৃপক্ষ। ওই সময় এমআরপি ডেলিভারি একেবারে বন্ধ করে দেয়া হয়। করোনা পরবর্তী প্রায় আড়াই বছর পার হয়ে গেলেও এখনো এমআরপি ডেলিভারি বন্ধ রয়েছে। তবে শুধুমাত্র জরুরি ভিত্তিতে বিদেশগামী, অসুস্থ রোগী ও কূটনীতিক পাসপোর্টধারীদের এমআরপি দেয়া হয়ে থাকে। তাও আবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সুপারিশের প্রেক্ষিতে।

যাদের সুপারিশ নেই তাদের আবার পর্যাপ্ত পরিমাণের নথিপত্র দেয়া লাগে। বলা চলে, এমআরপি পাসপোর্ট সেবা প্রায় ৯০ ভাগ বন্ধ রয়েছে। এ কারণে অনেক পাসপোর্টধারী গ্রাহক এখন এমআরপি’র বদলে ই-পাসপোর্ট আবেদন করছেন। কর্তৃপক্ষও গ্রাহকদের উন্নত পাসপোর্ট ই-পাসপোর্ট নিতে উৎসাহিত করছেন। এ কারণে ই-পাসপোর্টের ডেলিভারি দিন দিন বাড়ছে। নতুন প্রজন্মের গ্রাহকরা হাতেগোনা ছাড়া কেউ এমআরপি আবেদন করছেন না। তবে যাদের বয়স ৬৫ পার হয়েছে তাদের ই-পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে না। এমআরপি একেবারে উঠিয়ে দিলে তাদের ই-পাসপোর্র্টের আওতায় আনা হবে। এমআরপি একেবারে উঠিয়ে দিলে অধিদপ্তর কী সমস্যার মধ্যে পড়বে তার একটি কারিগরি মতামত প্রস্তুত করেছে। সমস্যা আসলে তা কী উপায়ে সমাধান হবে তার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ও বিশেষজ্ঞ মতামত নিচ্ছেন তারা।
এ বিষয়ে ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তরের পরিচালক (পাসপোর্ট, ভিসা, ইমিগ্রেশন) মো. সাইদুল ইসলাম জানান, ‘করোনার পর থেকেই এমআরপি খুব জরুরি না হলে দেয়া হচ্ছে না। শুধু ই-পাসপোর্ট দেয়া হচ্ছে। সবাইকে ই-পাসপোর্টের আওতায় আনার চিন্তা আছে।’

ইমিগ্রেশন ও পাসপোর্ট অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, করোনায় বাংলাদেশে প্রাণঘাতী ছোবল পড়ার পর পাসপোর্টে জট লাগে। করোনার প্রথম দিকে প্রায় ১ লাখ ৭০ হাজার পাসপোর্টের জট শুরু হয়। এখন পর্যন্ত দেশে ই-পাসপোর্টের জন্য প্রায় ৪১ লাখ আবেদন পড়েছে। এরমধ্যে কর্তৃপক্ষ ৩৭ লাখ ই-পাসপোর্ট বিতরণ করেছে। ডেলিভারির জন্য ঢাকাসহ সারা দেশের পাসপোর্ট অফিসগুলোতে ১ লাখ ২ হাজার পাসপোর্ট রয়েছে। যেগুলো আজ-কালের মধ্যে বিতরণ করা হবে। আর ১ লাখ ৪০ হাজার ই-পাসপোর্ট প্রিন্টের অপেক্ষায় রয়েছে। নানা সমস্যার কারণে এই প্রিন্টে জট সৃষ্টি হয়েছে বলে কর্তৃপক্ষ দাবি করেছে। আর প্রতিদিন পাসপোর্ট অধিদপ্তর প্রায় ২৫ হাজার পাসপোর্ট প্রিন্ট দিচ্ছে।

সূত্রে জানায়, অনেকের এমআরপি’র মেয়াদ আছে। তারা নতুন করে কেউ এমআরপি’র জন্য আবেদন করেননি। তারা চাচ্ছেন ই-পাসপোর্ট। এ ছাড়াও যারা প্রবাসী তাদের চাহিদার শীর্ষে রয়েছে ই-পাসপোর্ট। কারণ বিদেশে অনেকদিন আগে থেকেই হাতে লেখা পাসপোর্টের সেবা বন্ধ হয়ে গেছে। এমআরপি পাসপোর্ট নিয়ে ইমিগ্রেশন সেন্টারে যখন প্রবাসীরা যান তখন তাদের দীর্ঘ সময়ে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এতে ভোগান্তির শিকার হন তারা। এই ভোগান্তি থেকে রেহাই পেতেই তারা ই-পাসপোর্ট আবেদন করছেন।

সূত্র জানায়, ২০২১ সালের ২৮শে এপ্রিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগ থেকে জারি হওয়া পরিপত্রে উল্লেখ করা হয়, তথ্য সংশোধনপূর্বক দেশে ও বিদেশে পাসপোর্ট রি-ইস্যুর আবেদনে নাম পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এনআইডি, বিআরসি কিংবা শিক্ষা সনদপত্র বিবেচনা করতে হবে। বয়স পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ ৫ বছরের ব্যবধান পর্যন্ত বিবেচনা করা যাবে। বাংলাদেশের অভ্যন্তরে পাসপোর্টের জন্য আবেদনকারীরা এনআইডি ও পাসপোর্টের মধ্যে তথ্যের গরমিল হলে যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে প্রদত্ত তথ্য (নাম, বাবা-মায়ের নাম, বয়স ইত্যাদি) অনুযায়ী পাসপোর্ট দেয়া যাবে। সূত্র : মানবজমিন

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button