অপরাধআইন-আদালতবাংলাদেশব্রাহ্মণবাড়িয়া

গভীর রাতে নারীকে বাসে উঠিয়ে বাসে ও করাতকলে দুইবার ধর্ষণ

গভীর রাতে গন্তব্যে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলে এক নারীকে (৪১) বাসে উঠিয়ে নেন চালক ও সহকারী। এরপর বাসটি নির্জন স্থানে নিয়ে তাঁকে ধর্ষণ করেন তাঁরা। এ দৃশ্য দেখে ফেলেন পাশের একটি করাতকলের মালিকের ছেলে। এরপর তিনি ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে করাতকলের কার্যালয়ে নিয়ে ধর্ষণ করেন। গত শুক্রবার গভীর রাতে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার বিয়াল্লিশ্বর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

মামলার সূত্রে জানা যায়, ওই নারীর বাড়ি কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলায়। চাকরির সূত্রে তিনি স্বামী-সন্তান নিয়ে ঢাকার কামরাঙ্গীরচর এলাকায় থাকেন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় ঢাকার কমলাপুর থেকে ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস পরিবহনের বাসে চড়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় আসেন ওই নারী।

তিনি আখাউড়ায় একটি মাজার জিয়ারত করতে যাচ্ছিলেন। বাসটি যখন ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শহরের কাউতলী পৌঁছায়, তখন অনেক রাত হয়ে যায়। এর মধ্যে বাসে চালকের সহকারী আশরাফুল ওই নারীর সঙ্গে বিভিন্নভাবে কথা বলার চেষ্টা করেন।

রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে কাউতলী এলাকায় নেমে আখাউড়ার কোনো যানবাহন পাচ্ছিলেন না ওই নারী। কিছুক্ষণ পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস পরিবহনের আরেকটি বাস নিয়ে কাউতলী মোড়ে আসেন চালকের সহকারী আশরাফুল। এ সময় তাঁর সঙ্গে ছিলেন চালক নজরুল।

তাঁরা ওই নারীকে বাসে তুলে সদর উপজেলার বিয়াল্লিশ্বর এলাকার একটি নির্জন স্থানে নিয়ে যান। সেখানে দুজনে তাঁকে ধর্ষণ করেন। এ দৃশ্য পাশের করাতকলের কেফায়েত উল্লাহ দেখে ফেলেন। এরপর তাঁদের ভয় দেখিয়ে ওই নারীকে করাতকলে নিয়ে ধর্ষণ করেন কেফায়েত।

পরে তাঁরা ওই নারীকে বাসে করে শহরের কাউতলী এলাকায় নামিয়ে দিয়ে ট্রেনে ঢাকা চলে যেতে বলেন। কিন্তু রাত তিনটার দিকে ওই নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় গিয়ে ঘটনাটি পুলিশকে জানান। রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে প্রথমে কেফায়েত ও শনিবার বিকেলে নজরুলকে গ্রেপ্তার করে।

পুলিশ জানায়, শুক্রবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ধর্ষণের শিকার নারী ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় গিয়ে পুলিশকে ঘটনাটি জানান। এরপর ওই রাতে ও গতকাল শনিবার বিকেলে দুজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এরপর শনিবার রাতে ওই নারী সদর থানায় মামলা করেন।

গ্রেপ্তার দুজন হলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়া এক্সপ্রেস নামের বাসের চালক নরসিংদীর শিবপুর উপজেলার ঘাশিরদিয়া গ্রামের নজরুল ইসলাম (২৬) ও বিয়াল্লিশ্বর এলাকার তামিম টিম্বার মিলের মালিকের ছেলে কেফায়েত উল্লাহ ওরফে তামিম (২১)। এ ঘটনায় বাসের চালকের সহকারী শিবপুর উপজেলার আশরাফুল ইসলাম (৩০) পলাতক।গ্রেপ্তার দুজন আজ রোববার বিকেলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের দ্বিতীয় আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।

জানতে চাইলে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. এমরানুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তার দুজন আজ (রোববার) আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেনারেল হাসপাতালে ধর্ষণের শিকার নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো হয়েছে।

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button