আওয়ামী লীগজাতীয়ঢাকানির্বাচনবাংলাদেশবিএনপিরাজধানীরাজনীতি

তুমি তো বলেছিলে ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে,আজকে চালের দাম ৯০ টাকা কেন?

বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, বিদেশ থেকে ঋণ নিয়ে, ধার করে যে কাজ করেছে, সেই ঋণ এখন সরকার শোধ করতে পারছে না। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে। এতে সরকার খুব ঘাবড়ে গেছে। তিনি বলেছেন, আজকে শেখ হাসিনা এত ঘাবড়ে গেছেন যে তাঁরা ভয়ে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের চাকরি থেকে বিদায় দেওয়া শুরু করেছেন।

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির মহাসচিব সরকারপ্রধানকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ‘তুমি তো বলেছিলে ১০ টাকায় চাল খাওয়াবে। আজকে চালের দাম ৯০ টাকা কেন? ডালের দাম বেশি কেন; লবণের দাম, চিনির দাম বেশি কেন? সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এই সরকার সর্বক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়েছে। কারণ একটাই—লুট। লুট করে মানুষের পকেটের টাকা বিদেশে পাচার করেছে।’

আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে রাজধানীর নয়াপল্টনে এক বিক্ষোভ সমাবেশে মির্জা ফখরুল ইসলাম এ কথা বলেন। চলমান কর্মসূচিতে ‘আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলা, পুলিশের হামলা, গ্রেপ্তার এবং উচ্চ আদালতের নির্দেশ অমান্য করে নিম্ন আদালতে জামিন মঞ্জুর না করার’ প্রতিবাদে ঢাকাসহ সারা দেশে এই বিক্ষোভ সমাবেশ হয়। নয়াপল্টনে ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ কমিটি যৌথভাবে সমাবেশের আয়োজন করে।

প্রধানমন্ত্রীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের উদ্বোধনের কথা উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, বলা হচ্ছে, বাংলাদেশের গর্ব করা উচিত পারমাণবিক পাওয়ার প্ল্যান্ট তৈরি করার জন্য। যে দেশে বিদ্যুৎটা ঠিকমতো দিতে পারে না, সঞ্চালন করতে পারে না, বিতরণ করতে পারে না। সেখানে এত বিদ্যুৎ উৎপাদন করার একটিমাত্র কারণ, সেটা করতে গেলে তারা প্রচুর পরিমাণ কমিশন পায়। সে জন্যই তারা এ পদ্ধতি অবলম্বন করেছে। আজ মেগা প্রজেক্টে মেগা দুর্নীতি করে দেশকে পুরোপুরি পঙ্গু বানিয়ে ফেলেছে।

বিদ্যুৎ পরিস্থিতির উল্লেখ করে বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা—তিনি বলছেন ধৈর্য ধরেন, বিদ্যুৎ পেয়েছেন, আবারও বিদ্যুৎ পাবেন। কিন্তু আমাদের তো জীবন অতিষ্ঠ। লোডশেডিং, লোডশেডিং, লোডশেডিং। প্রতিদিন চারবার-পাঁচবার করে লোডশেডিং হয়। আমাদের হাসপাতালগুলো চলে না, ফ্যাক্টরিগুলো বন্ধ হয়ে যাচ্ছে, গার্মেন্টস বন্ধ হচ্ছে। গার্মেন্টস–মালিকেরা বলছেন, এইভাবে যদি চলতে থাকে, তাহলে ফ্যাক্টরি বন্ধ করে দিতে হবে। ফ্যাক্টরি বন্ধ হলে হাজার হাজার, লাখ লাখ শ্রমিক বেকার হয়ে যাবে।’

মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, ‘খবরের কাগজে বেরিয়েছে, এই যে ঋণ নিয়ে কাজ করে, বিদেশের কাছ থেকে ধার নেয়, এখন আর শোধ করতে পারছে না। যার ফলে কী হবে, সব বিদেশি সংস্থা বন্ধ করে দেবে। রিজার্ভ শূন্যের কোঠায় চলে যাচ্ছে। খুব ঘাবড়ে গেছে। আজকে হাসিনা এত ঘাবড়ে গেছে যে প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তাদের তাঁরা চাকরি থেকে বিদায় দেওয়া শুরু করেছেন ভয়ে।’

অবিলম্বে সংসদ বিলুপ্ত করে পদত্যাগ এবং নির্বাচনকালীন নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে আবারও সরকারের প্রতি আহ্বান জানান বিএনপির মহাসচিব। তিনি বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকারের পরিচালনায় একটা নতুন নির্বাচন কমিশন গঠিত হবে। তারা নির্বাচন পরিচালনা করবে সব দলের অংশগ্রহণে। সেই নির্বাচনের মধ্য দিয়ে জনগণের সরকার গঠিত হবে।

বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকা হবে সমাবেশের শহর। যাত্রাবাড়ী থেকে গাবতলী যেখানেই বাধা, সেখানেই সমাবেশ হবে।সভাপতির বক্তব্যে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের আহ্বায়ক আবদুস সালাম বলেন, ‘পত্রিকার সম্পাদক ও বুদ্ধিজীবীদের বলতে চাই, বিএনপির ব্যাপারে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে লেখেন, কিন্তু বিএনপির সমাবেশ ঠেকাতে যে গণপরিবহনে হরতাল ডেকেছে, সে ব্যাপারে দু-একটি পত্রিকা ছাড়া কেউ মুখ খোলেনি।’ তিনি সাংবাদিক-বুদ্ধিজীবীদের জনতার কাতারে আসার আহ্বান জানান।

খুলনায় বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশে গণপরিবহন বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির জন্য সরকারের সমালোচনা করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম। তিনি বলেন, এতে করে কী লাভ হয়? মানুষ কি থেমে থাকে? মানুষ ঠিকই দলে দলে বিভিন্নভাবে সমাবেশে উপস্থিত হয়। খুলনাতেও একই ঘটনা ঘটবে। খুলনাতেও লাখ লাখ মানুষ উপস্থিত হবে।

মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আপনাদের আর এই দেশে শাসন করার কোনো অধিকার নেই। দুর্নীতি-দুঃশাসনের মধ্য দিয়ে দেশকে একটি ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণত করেছেন। দয়া করে মানে মানে সরে পড়ুন। যদি সরে না পড়েন, তাহলে এ দেশের মানুষ কীভাবে সরাতে হয়, তারা তা জানে।’

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button