আওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভজাতীয়ঢাকানির্বাচনবাংলাদেশরাজধানীরাজনীতি

নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠের কর্মসূচিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ

আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনকে সামনে রেখে মাঠের কর্মসূচিতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। চলতি মাসের শেষের দিকে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন থেকে এই কর্মসূচি শুরু হচ্ছে। এরপর পর্যায়ক্রমে বিভিন্ন জেলায় সমাবেশ হবে। এসব সমাবেশে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী  ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অংশ নেবেন।

এ ছাড়া সারা দেশে জেলা ও উপজেলা সম্মেলন শেষ করার ক্ষেত্রে দলীয় নির্দেশনা রয়েছে। ইতিমধ্যে বিভিন্ন জেলা ও উপজেলা সম্মেলন শেষ হয়েছে। ডিসেম্বরে দলের জাতীয় সম্মেলন করার লক্ষ্য রয়েছে। ওদিকে বিএনপি ১০ই ডিসেম্বর ঢাকায়  সমাবেশ করার যে ঘোষণা দিয়েছে এর বিপরীতে পাল্টা কোনো কর্মসূচি নেবে না আওয়ামী লীগ। তবে ওইদিন মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছেন নেতারা।  দলটির নেতারা বলেন, বিএনপি অতীতে আন্দোলন ও সমাবেশের নামে জানমালের ক্ষতিসাধন করেছে।

সম্প্রতি ঢাকায় এক সমাবেশে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ আমান বলেন, আগামী ১০ই ডিসেম্বরের পরে বাংলাদেশ চলবে খালেদা জিয়া ও তারেক রহমানের কথায়। এর বাইরে কারও কথায় দেশ চলবে না। গত ১২ই অক্টোবর চট্টগ্রামের সমাবেশে বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন বলেছেন, আগামী ১০ই ডিসেম্বরের পর থেকে খালেদা জিয়ার সরকার চলবে। যারা খালেদা জিয়াকে আবার কারাগারে পাঠানোর হুমকি দিচ্ছেন ১০ই ডিসেম্বরের পর তাদের খুঁজে পাওয়া যাবে না।

বিএনপি নেতাদের এসব বক্তব্য প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম বলেন, ১০ তারিখে তারা দেশের দায়িত্ব নিয়ে নেবে কীভাবে? রাজনৈতিক প্রক্রিয়ায়, গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায়, সন্ত্রাসী প্রক্রিয়ায় নাকি বিরাজনীতিকরণ প্রক্রিয়ায়?

ওইদিন কি তারা রাজনৈতিক গণতান্ত্রিক ধারাবাহিকতায় চরম আঘাত হানতে চায়? খালেদা জিয়াতো দুর্নীতির দায়ে সাজাপ্রাপ্ত আসামি হিসেবে বন্দি। উনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহানুভবতায় সাজা স্থগিত করে বাসায় থেকে চিকিৎসা সেবা নিচ্ছেন।

পেট্রোল বোমা, অগ্নিসংযোগ ও ভাঙচুরের মতো ঘটনা ঘটিয়েছে। সেই অভিজ্ঞতা থেকে আওয়ামী লীগ ওইদিন দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজপথে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করবে। বিএনপি কোনো ধরনের অরাজকতা করার চেষ্টা করলে জনগণকে সঙ্গে নিয়ে তা মোকাবিলা করবে। তারা জানান, আওয়ামী লীগ সবচেয়ে বড় শোডাউন করতে যাচ্ছে ২৯শে অক্টোবর শনিবার। ওইদিন ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে।

ওই সম্মেলনে আওয়ামী লীগ সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উপস্থিত থাকতে পারেন। ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের এই সম্মেলনে বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মীসহ লক্ষাধিক লোকের বেশি সমাগম হবে বলে ধারণা করছেন নেতাকর্মীরা। এর মধ্যদিয়ে ঢাকা জেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উজ্জীবিত হবে বলে আওয়ামী লীগের নেতারা মনে করেন।

বিএনপি’র মহাসমাবেশের প্রায় দুই মাস বাকি থাকায় এ নিয়ে এখনই বড় ধরনের রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নেয়নি আওয়ামী লীগ। তবে পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে রাখা হচ্ছে। সেইসঙ্গে মহাসমাবেশ ঘিরে যেকোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা ঠেকাতে, বিশেষ করে ঢাকা মহানগরের উত্তর ও দক্ষিণের সব থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিটের নেতাকর্মীকে সতর্ক অবস্থানে থাকার নির্দেশনা আসতে পারে- এমনটিও জানিয়েছেন দলের কয়েকজন শীর্ষ নেতা। আওয়ামী লীগের ঢাকা বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম এমপি বলেন, আগামী ১০ই ডিসেম্বরকে টার্গেট করে কারা যেন সমাবেশ ডেকেছে। ষড়যন্ত্রকারীরা এখনও থেমে নেই।

ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতারা জানিয়েছেন, ইতিমধ্যে থানা সম্মেলনের কাজ শেষ পর্যায়ে। সম্মেলনের মাধ্যমে নেতাকর্মীদের উজ্জীবিত করা হচ্ছে। সামনে মাঠের কর্মসূচি আসলে বিরোধীদের মোকাবিলা করতে নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরাই যথেষ্ট।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক রিয়াজ উদ্দিন রিয়াজ জানান, ২৪টি থানার মধ্যে ২০টি থানা সম্মেলন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে। ২৮শে অক্টোবরের মধ্যে বাকি ৪টি থানারও সম্মেলন সম্পন্ন হবে। তিনি বলেন, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ।

সম্মেলনের মাধ্যমে সবাই চাঙ্গা হয়েছে। সামনে বিরোধী দলগুলোর যেকোনো ধ্বংসাত্মক কর্মসূচি আসলে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ সহযোগী সংগঠনগুলোকে নিয়ে তা মোকাবিলা করবে। এ ধরনের কর্মসূচি মোকাবিলায় নগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা সবসময় প্রস্তুত আছে।

ওইদিন আওয়ামী লীগ কি কোনো পাল্টা কর্মসূচি দেবে-এমন প্রশ্নেব বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, আওয়ামী লীগ কখনো পাল্টা কর্মসূচি দেয় না, দেবেও না। কিন্তু আওয়ামী লীগ সবসময় মানুষের পাশে আছে, থাকবে। আশা করি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যেকোনো ধরনের নৈরাজ্যের বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থা নেবে।

আওয়ামী লীগের অপর সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন বলেন, ডিসেম্বর হচ্ছে বিজয়ের মাস, মুক্তিযুদ্ধের মাস, স্বাধীনতার মাস। যারা এদেশে পাকিস্তানিদের এজেন্ডা বাস্তবায়ন করে, পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্ব করে সেই বিএনপি-জামায়াতের জন্য তো বাংলাদেশের রাজপথ না। ডিসেম্বরের রাজপথ তো ওদের জন্য না, বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধাদের জন্য। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে আওয়ামী লীগ রাজপথে থাকবে। জনগণই তাদের ধ্বংসাত্মক কার্যক্রম প্রতিরোধ করবে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button