আওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভচট্টগ্রামজাতীয়বাংলাদেশরাজনীতি

নেতাকর্মীদের চাঙ্গাভাব ধরে রাখতে চায় আওয়ামী লীগ

প্রায় ১১ বছর পর আগামী ৪ ডিসেম্বর দলীয় প্রধান ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উপস্থিতিতে চট্টগ্রামের পলোগ্রাউন্ডে জনসভা করতে যাচ্ছে আওয়ামী লীগ। সমাবেশের পর ১২ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা ও ১৮ ডিসেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সম্মেলন।

কাছাকাছি সময়ে সমাবেশ ও সম্মেলন ঘিরে নেতাকর্মীরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নির্বাচন সামনে রেখে সংগঠনের এই চাঙ্গাভাব ধরে রাখতে তৎপর দলের নেতারা।আওয়ামী লীগ নেতারা জানান, জনসভা ও সম্মেলন ঘিরে চট্টগ্রাম আওয়ামী লীগের (নগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা) নেতাকর্মীদের মধ্যে ব্যাপক চাঙ্গাভাব দেখা যাচ্ছে।

আগামী এক মাসের বেশি সময় ধরে রাজনৈতিক এসব কর্মসূচিকে ঘিরে সৃষ্ট চাঙ্গাভাব ও সাংগঠনিক তত্পরতা ও কর্মী-সমর্থকদের মনোবল ধরে রাখতে চায় ক্ষমতাসীন দল।আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে চট্টগ্রামে সংগঠন গোছাতে কেন্দ্রের নেওয়া নানামুখী উদ্যোগ তৃণমূলে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

চট্টগ্রামের একই মাঠে সারা দেশে বিভাগীয় পর্যায়ের গণসমাবেশের প্রথমটি করেছে বিএনপি। গত ১২ অক্টোবর অনুষ্ঠিত বিএনপির লোকসমাগম থেকে আরো ব্যাপক জনসমাগমের টার্গেট নিয়ে এগোচ্ছে আওয়ামী লীগ।

রাজনীতির মাঠে আলোচনা চলছে, লোকসমাগমের মাধ্যমে বিএনপিকে জবাব দিতে আওয়ামী লীগ একই স্থানে জনসভার আয়োজন করেছে। একই ধারাবাহিকতায় নগর ও জেলা কমিটির সম্মেলনের আগে আওয়ামী লীগের আওতাধীন তৃণমূলের (ইউনিট, ওয়ার্ড, থানা; উপজেলা) সম্মেলন শেষ করতে কেন্দ্রীয় নির্দেশনা আছে।

৪ ডিসেম্বর জনসভার প্রস্তুতির অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার বিকেলে নগরের দোস্তবিল্ডিং দলীয় কার্যালয়ে চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভা করে। এ ছাড়া জনসভা ও তৃণমূলের সম্মেলন ঘিরে গতকাল চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগ দফায় দফায় তৃণমূলের নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেছে বলে সংগঠন সূত্রে জানা যায়।

এর আগে ৯ নভেম্বর নগরের ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন হলে জনসভার প্রস্তুতি উপলক্ষে চট্টগ্রাম মহানগর, উত্তর ও দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের যৌথ প্রতিনিধি সভায় কেন্দ্রীয় প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুবউল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক ও হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপনসহ বেশ কয়েকজন নেতা উপস্থিত থেকে জনসভায় ব্যাপক লোক সমাগমের জন্য স্থানীয় নেতাদের দিকনির্দেশনা দেন।

চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, ‘ঢাকার বাইরে আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রথম জনসভা করবেন এই চট্টগ্রামে। জনসভার মাধ্যমে আমরা জানান দিতে চাই—বিএনপিকে চট্টগ্রামবাসী চায় না। জনসভার পাশাপাশি আমরা দল গোছানোর জন্য নানা উদ্যোগ নিয়েছি। এরই মধ্যে সংগঠনের সব পর্যায়ে কর্মীদের মধ্যে উত্সাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। আমরা প্রতিদিনই সভা-সমাবেশ করছি। ’

চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক দেবাশীষ পালিত বলেন, ‘উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন আগে সম্পন্ন হয়েছে। আমরা এখন শুধু দলীয় প্রধান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভা সফল করতে প্রস্তুতি নিচ্ছি। জনসভা সামনে রেখে আজও (গতকাল) আমাদের সভা হয়েছে। এরপর আমরা ইউনিট থেকে উপজেলা পর্যন্ত প্রস্তুতি সভা করব। লক্ষ্য একটাই, তা হলো নেত্রীর জনসভায় গণজোয়ার সৃষ্টি করা। ’

জানতে চাইলে চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দীন বলেন, ‘৪ ডিসেম্বর নগরের পলোগ্রাউন্ডে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জনসভায় স্মরণকালের বৃহত্তম লোকসমাগমের টার্গেট নিয়ে আমরা ব্যাপক প্রস্তুতি নিচ্ছি।

প্রায় ১১ বছর পর নেত্রীর উপস্থিতিতে ওই মাঠে আমরা জনসভা করতে যাচ্ছি। বিএনপি গত ১২ অক্টোবর ঢাকঢোল পিটিয়ে যে বিভাগীয় গণসমাবেশ করেছিল, সেখানে লোকসমাগম হয়নি। আমরা সেখানে চট্টগ্রামের তিন সাংগঠনিক কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত জনসভাকে জনসমুদ্রে পরিণত করব। ’

নগর ও তৃণমূলের সম্মেলন প্রসঙ্গে নাছির বলেন, ‘জনসভার পাশাপাশি আমরা সম্মেলনেরও প্রস্তুতি নিচ্ছি। নগর সম্মেলনের আগে আগামী ১৬ নভেম্বর থেকে আমরা ওয়ার্ড সম্মেলন শুরু করব। ২৮ নভেম্বর পর্যন্ত ওয়ার্ড সম্মেলন চলবে। এরপর আবার কয়েক দিন টানা প্রধানমন্ত্রীর জনসভার প্রস্তুতি চলবে।

জনসভার পর বাকি ওয়ার্ড ও থানা সম্মেলন শেষ করে ১৮ ডিসেম্বর মহানগর সম্মেলনের জন্য আমাদের প্রস্তুতি থাকবে। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের আগে জনসভা ও সম্মেলনের মাধ্যমে গড়ে ওঠা কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে চাঙ্গাভাব আমরা ধরে রাখতে চাইছি। ’

দলীয় সূত্রে জানা যায়, আগামী ১৬ নভেম্বর চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের আওতাধীন ১৪ নম্বর লালখানবাজার ওয়ার্ড, ১৭ নভেম্বর ৩৯ নম্বর দক্ষিণ হালিশহর এবং ১৯ নভেম্বর ৩২ নম্বর আন্দরকিল্লা ওয়ার্ডের সম্মেলনের তারিখ গতকাল নির্ধারণ করা হয়।

একইভাবে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের আওতাধীন সম্মেলনের বাকি থাকা চারটি উপজেলার মধ্যে আগামী ৬ ডিসেম্বর বাঁশখালী, ৮ ডিসেম্বর বোয়ালখালী, ৯ ডিসেম্বর কর্ণফুলী ও ১০ ডিসেম্বর আনোয়ারা উপজেলা আওয়ামী লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে। নেতারা জানান, তৃণমূলের এসব সম্মেলনের কারণে এখন নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসাহ-উদ্দীপনা সৃষ্টি হয়েছে। সেই সঙ্গে ৪ ডিসেম্বর অনুষ্ঠেয় জনসভারও প্রস্তুতি হয়ে যাচ্ছে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button