আইন-আদালতএক্সক্লুসিভএশিয়াবিশ্ব সংবাদরাজনীতি

পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক সংকটে সামনে এলো সর্বোচ্চ আদালত

পাকিস্তানের চলমান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তায় এবার দৃশ্যপটে দেশটির সর্বোচ্চ আদালত। অনাস্থা প্রস্তাব ঘিরে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির দেওয়া সব আদেশ ও কর্মকাণ্ড আদালতের সিদ্ধান্তের অধীন আসবে বলে গতকাল রোববার জানিয়েছেন প্রধান বিচারপতি উমর আতা বান্দিয়াল। খবর ডনের।

প্রধান বিচারপতি বান্দিয়ালের নেতৃত্বে বিচারপতি ইজাজুল হক ও বিচারপতি মোহাম্মদ আলী মাজহারের সমন্বয়ে গঠিত তিন সদস্যের বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হয়। আজ সোমবার পরবর্তী শুনানি হওয়ার কথা রয়েছে।প্রধানমন্ত্রী ও প্রেসিডেন্টের কর্মকাণ্ড নিয়ে প্রধান বিচারপতির দেওয়া পর্যবেক্ষণের পর আইনজীবী আসাদ রহিম বলেন, আদালতের আদেশের আগপর্যন্ত ‘জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার বিষয়টি অমীমাংসিত’।

সুপ্রিম কোর্টের মুখপাত্র বলেন, বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে একটি স্বতঃপ্রণোদিত নোটিশ গ্রহণ করে প্রধান বিচারপতি এ পর্যবেক্ষণ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব জাতীয় পরিষদের ডেপুটি স্পিকার কাসিম খান সুরির নাকচ করে দেওয়া এবং পরবর্তীকালে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ায় এ নোটিশ গ্রহণ করা হয়েছিল।

রোববার দিন শেষে প্রকাশিত লিখিত এক আদেশে জাতীয় পরিষদের অবস্থা সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু বলা হয়নি। তবে সংবিধানের ৫ অনুচ্ছেদের ভিত্তিতে অনাস্থা প্রস্তাব নাকচে ডেপুটি স্পিকারের সিদ্ধান্ত সংবিধানসম্মত কি না, সে বিষয়ে অ্যাটর্নি জেনারেল খালিদ খালিদ জাবেদ খানের প্রতি একটি নোটিশ প্রেরণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

প্রধান বিচারপতি বান্দিয়াল বলেন, রাষ্ট্রীয় কোনো প্রতিষ্ঠান যেন অসাংবিধানিক কোনো পদক্ষেপ গ্রহণ না করে। কেউ যাতে বর্তমান পরিস্থিতির সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা না করে, আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি যাতে সমুন্নত থাকে, সে দিকে নজর রাখতে হবে।

সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৫-এ বলা হয়েছে, প্রত্যেক নাগরিকের মৌলিক দায়িত্ব রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য। সংবিধান ও আইনের প্রতি আনুগত্য প্রত্যেক নাগরিকের জন্য অলঙ্ঘনীয়ভাবে বাধ্যতামূলক; তিনি যেখানেই থাকুন এবং পাকিস্তানে অবস্থান করার সময় প্রত্যেকের জন্যই তা প্রযোজ্য।

শুনানিতে প্রধান বিচারপতি আরও বলেছেন, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যাতে অবনতি না হয়, তাই সব রাজনৈতিক দলকে দায়িত্বশীল আচরণ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।আদেশে প্রধান বিচারপতি বলেছেন, পাকিস্তান পিপলস পার্টির (পিপিপি) আবেদন গ্রহণ করা হয়েছে এবং আদালত ডেপুটি স্পিকারের কর্মকাণ্ড খতিয়ে দেখবে।

তবে ডেপুটি স্পিকারের আদেশ স্থগিত করার আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। বিষয়টি আজ সোমবার উপস্থাপন করতে অ্যাটর্নি জেনারেলকে আদেশ দেওয়া হয়েছে।বান্দিয়াল বলেন, ‘গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হওয়ায়’ এ নোটিশে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভিকেও বিবাদী করা উচিত। স্বতঃপ্রণোদিত এ নোটিশে সুপ্রিম কোর্ট বার কাউন্সিল এবং সব রাজনৈতিক দলকেও বিবাদী করা উচিত।

জাতীয় পরিষদে প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব রোববার ডেপুটি স্পিকার নাকচ করে দেন। এরপর প্রধানমন্ত্রীর সুপারিশে জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন প্রেসিডেন্ট। আগামী ৯০ দিনের মধ্যে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন দেশটিতে নতুন নির্বাচন হওয়ার কথা। তবে পুরো প্রক্রিয়াকে অসাংবিধানিক ঘোষণা দিয়ে আদালতে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বিরোধীরা।

এরপর আদালত অ্যাটর্নি জেনারেল, স্পিকার, ডেপুটি স্পিকার, প্রতিরক্ষাসচিব, স্বরাষ্ট্রসচিব, সব রাজনৈতিক দলের প্রতি নোটিশ জারি করে। সোমবার পর্যন্ত শুনানি মুলতবি করা হয়। আজ বেলা একটায় বৃহত্তর বেঞ্চে এ বিষয়ে শুনানি হবে বলে আদেশে জানায় আদালত।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button