এক্সক্লুসিভপিরোজপুরবরিশালবাংলাদেশস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

টয়লেটের প্যানে কন্যাশিশু প্রসব, প্যানের পাইপ ভেঙে শিশুকে উদ্ধার

হাসপাতালের টয়লেটে কন্যাশিশু প্রসব করেছেন মা। সেই শিশুকে উদ্ধার করা হয়েছে টয়লেটের প্যানের পাইপ ভেঙে। দুই ঘণ্টা চেষ্টার পর পরে তাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়েছে। অবিশ্বাস্য এই ঘটনাটি ঘটে গতকাল শনিবার বিকেল পৌনে ৪টায় বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নবজাতক ও গাইনি ওয়ার্ডে।

নবজাতকের বাবা নেয়ামত উল্লাহ এবং মা শিল্পী বেগম। পিরোজপুর জেলার স্বরূপকাঠি উপজেলার গণমান শেখপাড়া বাজার সংলগ্ন তাদের বাড়ি।নেয়ামত উল্লাহ বলেন, আমার স্ত্রী পেটে বাচ্চা নড়াচড়া না করা এবং রক্তক্ষরণ হওয়ায় প্রথমে তাকে স্বরূপকাঠি হাসপাতালে ভর্তি করাই। কিন্তু অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সেখানকার চিকিৎসকরা আমাদের বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করেন।

সেখানে নেওয়ার পর ডাক্তার সিজারিয়ানের (অস্ত্রপচারের) সিদ্ধান্ত নেন। দুপুরে অপারেশনের ওষুধ কিনে আনতে বললে আমি সেগুলো কিনে আনতে যাই। ওষুধ নিয়ে ফিরে এসে দেখি টয়লেটে অনেক লোকজন ভিড় করে আছেন।

লোকজন আমাকে জানায় আমার স্ত্রী টয়লেটে গেছিলেন। প্যানে বসতেই প্রসব হয়ে গেছে। হাসপাতালের একজন আমাকে টয়লেটের মধ্যে হাত দিতে বললে আমি পুরো হাত ঢুকিয়ে দিয়েও কিছু পাইনি। কান দিয়ে শুনি টয়লেটের পাইপের মধ্য থেকে কান্নার আওয়ার।

তাই কারো অপেক্ষা না করে দ্রুত দোতলায় গিয়ে টয়লেটের পাইপ ভেঙে আমার মেয়ে সন্তানকে উদ্ধার করি। আল্লাহর কাছে শুকরিয়া ওকে জীবিত উদ্ধার করতে পেরেছি। তিনি তার সন্তান ও স্ত্রীর জন্য সকলের কাছে দোয়া প্রার্থনা করেছেন।

ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালে পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম। শিশু ওয়ার্ডের স্ক্যানু বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে ওই নবজাতক ও তার মা শিল্পী বেগম দুজনই সুস্থ আছেন বলে জানিয়ে শেবাচিম।  

হাসপাতালের পরিচালক ডা. এইচএম সাইফুল ইসলাম জানান, শনিবার দুপুরের দিকে পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে শিল্পী বেগমকে শেবাচিম হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়। হাসপাতালে নবজাতক ও গাইনি ওয়ার্ডে শিল্পী বেগম পর্যবেক্ষণে ছিলেন। দুপুর ২টার দিকে তার প্রসববেদনা উঠলে তিনি টয়লেটে যান। এসময় টয়লেটের প্যানে বসতেই প্রসব হয়ে যায় শিল্পী বেগমের।

নবজাতটি টয়লেটের পাইপের ভেতর ঢুকে যায়। বিকেল ৪টার দিকে ওই নবজাতককে পাইপের ভেতর থেকে জীবিত উদ্ধার করে হাসপাতালের স্ক্যানু বিভাগে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। বর্তমানে নবজাত ও তার মার সুস্থ ও স্বাভাবিক রয়েছেন। এদের চিকিৎসায় সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

শিল্পী বেগমের ভাবী ফেরদৌসি আক্তার তন্নী বলেন, তার ননদ শিল্পীকে হাসপাতালে তিনতলায় গাইনী ও নবজাতক ওয়ার্ডের এবং শিশুটিকে দ্বিতীয় তলায় স্ক্যানু বিভাগের রেখে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে। তারা দুজনেই সুস্থ আছে। এখন পর্যন্ত নবজাতকের নাম নির্ধারণ করা হয়নি।   

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button