অপরাধঅর্থ ও বাণিজ্যএক্সক্লুসিভএশিয়াবাংলাদেশব্যাংকিং

ইডি’র জেরায় পি কে হালদার জানিয়েছেন তার বাংলাদেশে বিপুল সম্পদের কথা

ভাঙছে কিন্তু মচকাচ্ছে না। কলকাতার ব্যাংকশাল কোর্ট থেকে বাংলাদেশের ব্যাংক জালিয়াত পি কে হালদারকে তিনদিনের রিমান্ডে নেয়ার পর ইডির তদন্তকারী অফিসারদের এই ধারণা। মঙ্গলবার আদালতে তোলা হবে পি কে হালদার ওরফে প্রশান্ত কুমার হালদার সহ আরও পাঁচজনকে।

তার আগে লাগাতার জেরা করে যতটা সম্ভব তথ্য আহরণ করার চেষ্টা করছেন ইডির ইনভেস্টিগেশন অফিসাররা। কিন্তু, এক ইডি জেরাকারীর কথায়, পি কে হালদার এ হার্ড নাট টু ক্র্যাক অন। জেরায় ভাঙছে, কিন্তু মচকাচ্ছে না। 

ইডি সূত্রে জানা গেছে, জেরায় ভারত, বাংলাদেশ ও কানাডার পাসপোর্ট থাকার কথা কবুল করেছেন পি কে হালদার। এটাও জানিয়েছেন যে ইন্টারপোলের রেড কর্নার অ্যালার্ট জারি হওয়ার এক ঘন্টা আগে তিনি বেনাপোল সীমান্ত দিয়ে ভারতে চলে আসেন।

তারপর ভারতীয় পাসপোর্টের সাহায্যে কানাডা যান। ফিরে এসে শিবশঙ্কর নামের আড়ালে অশোকনগরে জাঁকিয়ে বসেন। তার আধার, ভোটার, প্যান সব কার্ড শিবশঙ্কর নামে। জেরায় পি কে হালদার নাকি কবুল করেছেন তার বাংলাদেশে বিপুল সম্পদের কথা। 

নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, আটজন ইডি অফিসার পালা করে জেরা করছেন পি কে হালদারদের। কখনও একা, কখনও দুজনকে একসঙ্গে বসিয়ে অথবা মিলিতভাবে। কিন্তু, কিভাবে ভারতে ভুয়া সব পরিচয়পত্র করিয়েছিলেন পি কে হালদার তার হদিন এখনও মেলেনি।

মঙ্গলবার কোর্টে তোলা হতে পারে পি কে হালদারদের। ভারতে ভুয়ো পরিচয়পত্র ব্যবহার, ভুয়া কোম্পানি খোলা এবং হাওয়ালায় কোটি কোটি টাকা বাংলাদেশে পাচার করা নিয়ে ভারতে মামলা হবে। ২০১৩ সালে ভারত-বাংলাদেশ বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুযায়ী পি কে হালদারকে বাংলাদেশের হাতে তুলে দিতে আরও তিন থেকে ছয় মাস লাগতে পারে।    

হাওয়ালার কোটি কোটি টাকা কিভাবে বাংলাদেশ গিয়েছিলো তারও তথ্য মেলেনি। পি কে হালদারের সঙ্গে যাদের জেরা চলছে এদের মধ্যে আছে স্বপন মৈত্র ওরফে মিস্ত্রি, উত্তম মৈত্র ওরফে মিস্ত্রি, ইমাম হোসেন ওরফে ইমন হালদার, আমানা সুলতানা ওরফে শর্মি হালদার ও প্রাণেশ হালদার। ইডির সন্দেহ ধৃত নারী পি কে হালদারের স্ত্রী সুস্মিতা সাহা হতে পারে।

পি কে হালদারের বাংলাদেশে বিপুল সম্পদের মধ্যে সমুদ্র সৈকত কক্সবাজারে দুশো কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হোটেল, নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিঘার পর বিঘা জমি, ময়মনসিংহে চার একর জমি, ঢাকার পূর্বাচলে ষাট বিঘা জমি, ১১তলা একটি মার্কেট প্লাজা, রাঙামাটিতে তিনশো কোটি টাকা ব্যয় করে নির্মিত রিসোর্ট, কয়েকটি ফ্ল্যাট যার মূল্য প্রায় ২০ কোটি টাকা।

এছাড়াও ব্যাংকে একশো কোটি টাকা থাকার কথা নাকি জেরায় জানিয়েছেন পি কে হালদার। এক ইডি আধিকারিকের কথায় জেরায় বারবার উঠে এসেছে অমিতাভ অধিকারী ও অতসী মিস্ত্রির নাম। ইডি বাংলাদেশ দুর্নীতি দমন কমিশনকে সবটাই জানাচ্ছে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button