নরসিংদী রেলস্টেশনে তরুণীকে হেনস্তাকারী নারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১

নরসিংদী রেলস্টেশনে তরুণীকে হেনস্তাকারী নারীকে গ্রেপ্তার করেছে র‌্যাব-১১। গতকাল রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে শিবপুর উপজেলার ইটাখোলা এলাকায় এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।

গ্রেপ্তার ওই নারীর নাম মার্জিয়া আক্তার ওরফে শিলা ওরফে সায়মা (৬০)। তিনি পেশায় একজন ঘটক ও শহরের উপজেলা মোড়ের একটি বাড়ির ভাড়াটিয়া ফয়েজ আহমেদের স্ত্রী। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ভিডিও ও সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণ করে ওই নারীকে শনাক্ত করে মামলার আসামি করা হয়।

এই খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন র‌্যাব-১১ নরসিংদী ক্যাম্পের কোম্পানি কমান্ডার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট তৌহিদুল মবিন খান। তিনি বলেন, ১৮ মে ঘটনার দিন ভোর সাড়ে পাঁচটার দিকে স্টেশনটির ১ নম্বর প্ল্যাটফর্মে ওই নারী বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া এক তরুণীকে পোশাক নিয়ে গালিগালাজ, মারধর ও শ্লীলতাহানি করেন এবং মুঠোফোনে ছবি তুলেন। আজ সোমবার ঢাকায় র‍্যাবের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলন করে বিস্তারিত জানানো হবে বলে তিনি জানান।

ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা যায়, ওই তরুণীকে ঘিরে রেখেছে একদল ব্যক্তি। এর মধ্যেই একজন নারী উত্তেজিত অবস্থায় তাঁর সঙ্গে কথা বলছেন। বয়স্ক এক ব্যক্তিও কথা বলছিলেন। একপর্যায়ে ওই তরুণী সেখান থেকে চলে যেতে উদ্যত হলে ওই নারী দৌড়ে তাঁকে ধরে ফেলেন।

তাঁর পোশাক ধরে টান দেন ওই নারী। নিজেকে সামলে দৌড়ে স্টেশনমাস্টারের কক্ষে চলে যান তরুণী। এ সময় তাঁর সঙ্গে থাকা দুই তরুণকেও মারধর করা হয়। তাঁরাও দৌড়ে স্টেশনমাস্টারের কক্ষে চলে যান। পরে ভুক্তভোগী তরুণী জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল দিলে নরসিংদী মডেল থানার পুলিশ রেলস্টেশনে গিয়ে তাঁদের ঢাকার ট্রেনে উঠিয়ে দেয়।

এর আগে তরুণী হেনস্থার ঘটনার দুই দিন পর নরসিংদী রেলওয়ে স্টেশনসংলগ্ন এলাকা থেকে মো. ইসমাইল নামের একজনকে আটক করে জেলা গোয়েন্দা পুলিশ। পরে তাঁকে ভৈরব রেলওয়ে থানা-পুলিশের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

পরের দিন তাঁকে ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে নরসিংদীর অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মেহনাজ সিদ্দিকীর আদালতে তোলা হয়। আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠান এবং এই ঘটনায় মামলা করার নির্দেশ দেন।

ওই রাতে ভৈরব রেলওয়ে থানায় মামলা করেন নরসিংদী রেলওয়ে পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ ইমায়েদুল জাহেদী। মামলায় মো. ইসমাইল ও মার্জিয়া আক্তারের নাম উল্লেখ করে এবং অজ্ঞাতনামা আরও ৮ থেকে ১০ জনকে আসামি করা হয়।

র‌্যাব কর্মকর্তারা জানান, গণমাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে ওই নারী ঘন ঘন বাসা পরিবর্তন করেন। মুঠোফোন নম্বরও পরিবর্তন করেন তিনি। বারবার তাঁর স্থান ও মুঠোফোন নম্বর পরিবর্তনের কারণে তাঁকে গ্রেপ্তারে সময় লেগেছে।

Exit mobile version