কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে পর্যটক দম্পতিকে হয়রানির অভিযোগে ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রী আটক

কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতে ভ্রমণে আসা পর্যটক দম্পতিকে হয়রানির অভিযোগে মো. ইউনুস (২৪) নামের একজন ভ্রাম্যমাণ আলোকচিত্রীকে আটক করেছে ট্যুরিস্ট পুলিশ।গতকাল শনিবার বিকেলের এ ঘটনায় আজ রোববার বেলা একটার দিকে সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্ট থেকে তাঁকে আটক করা হয়।

ভুক্তভোগী পর্যটক মো. সিফাত মাহমুদ অভিযোগ করে বলেন, শনিবার বিকেলে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি সৈকতের সুগন্ধা পয়েন্টে যান। ওই সময় কয়েকজন আলোকচিত্রী তাঁদের ঘিরে ধরেন এবং ছবি তোলার জন্য জোরাজুরি শুরু করেন। এর মধ্যে আলোকচিত্রী ইউনুস তাঁদের পিছু নেন এবং ছবি তোলার অনুরোধ করতে থাকেন।

একপর্যায়ে বাধ্য হয়ে তাঁরা ছবি তোলেন। তখন ওই আলোকচিত্রীকে ৪০টি ছবি তোলার জন্য ৩২০ টাকা (ছবিপ্রতি আট টাকা) দেবেন বলে জানান তাঁরা। তবে আলোকচিত্রী ইউনুস ২৫০টি ছবি তোলার জন্য ২ হাজার টাকা দাবি করেন। এই টাকা না দিলে মারধরের হুমকি দেন তিনি। তখন ওই টাকা পরিশোধ করে পরিস্থিতি সামাল দেন পর্যটক দম্পতি। এরপর ঘটনাটি ট্যুরিস্ট পুলিশকে জানান তাঁরা।

আটক মো. ইউনুসের বাড়ি কক্সবাজার পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ ঘোনারপাড়া এলাকায়। ট্যুরিস্ট পুলিশ জানায়, আটক করার সময় ইউনুসের পরনে জেলা প্রশাসনের সরবরাহ করা আলোকচিত্রীর পোশাক ছিল। সৈকতে এ রকম পোশাকধারী আলোকচিত্রীর সংখ্যা ছয় শতাধিক।

সৈকত জেলা প্রশাসনের অনুমতিপত্র পাওয়া ছয় শতাধিক আলোকচিত্রী রয়েছেন জানিয়ে পুলিশ কর্মকর্তা রেজাউল করিম বলেন, ট্যুরিস্ট পুলিশের কাছে এসব আলোকচিত্রীর তথ্য বা ডেটাবেজ নেই। জেলা প্রশাসন যাঁদের অনুমতিপত্র দিয়েছে, তাঁদের অনেকে মাঠে নেই। লাইসেন্স ভাড়া নিয়ে লাল পোশাক পরে কেউ কেউ ক্যামেরা কাঁধে নিয়ে সৈকতে নেমে পড়েন। তাঁদের ছবি তোলার অভিজ্ঞতা বা প্রশিক্ষণও নেই।

অভিযোগ পাওয়ার পরপরই ট্যুরিস্ট পুলিশ সদস্যরা সৈকতে নেমে ওই আলোকচিত্রীকে খুঁজতে থাকেন বলে জানিয়েছেন ট্যুরিস্ট পুলিশ কক্সবাজারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. রেজাউল করিম। তিনি বলেন, গতকাল না পেয়ে আজ সকাল থেকে আবার অভিযানে নামে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

একপর্যায়ে বেলা একটার দিকে আলোকচিত্রী ইউনুসকে পাওয়া যায় সুগন্ধা পয়েন্টে। এরপর তাঁকে আটক করে ট্যুরিস্ট পুলিশ কার্যালয়ে আনা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে ইউনুস ঘটনার কথা স্বীকার করেন। এ ঘটনায় তাঁর বিরুদ্ধে মামলা করা হবে। আগামীকাল সোমবার সকালে ইউনুসকে কক্সবাজার সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পাঠানো হবে।

পর্যটকদের হয়রানি ঠেকাতে প্রকৃত লাইসেন্সধারীকে বিশেষ পরিচয়পত্র বা কার্ড প্রদানের উদ্যোগ নিয়েছেন জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম বলেন, আলোকচিত্রীদের ডেটাবেজ তৈরি করে প্রশিক্ষণেরও ব্যবস্থা করবে ট্যুরিস্ট পুলিশ।

Exit mobile version