অপরাধএক্সক্লুসিভডিফেন্স খবরঢাকাবাংলাদেশমানিকগঞ্জ

সহকারী পুলিশ সুপারের বিরুদ্ধে অনৈতিক সম্পর্কের অভিযোগ

মানিকগঞ্জ সিংগাইর সার্কেল সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হকের বিরুদ্ধে এক নারীকে বিয়ে প্রলোভন দেখিয়ে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের অভিযোগ ওঠেছে।  ভুক্তভোগী ওই নারী পুলিশ সুপারের কাছে অভিযোগ করেছেন। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে রয়েছেন অভিযুক্ত সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হক।

মঙ্গলবার সকাল থেকে সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হকের ব্যক্তিগত ও সরকারি মোবাইল বন্ধ থাকার কারণে ভুক্তভোগী নারী মানিকগঞ্জ পুলিশ সুপারের সাথে কথা বলতে আসেন। কিন্তু পুলিশ সুপার মিটিংয়ে থাকার কারণে সেই সাক্ষাৎ হয়নি। এরপর তিনি সিংগাইর থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে তার কেড়ে নেয়া মোবাইল ফোন ফেরত চান।

ওই সময় সিংগাইর থানার অফিসার ইনচার্জ থানায় না থাকায় তিনি সাংবাদিকদের বলেন, পুলিশ তাকে কোন সাহায্য করবে না। তিনি একদিনের জন্য হলেও সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হককে বিয়ে করবেন। বিয়ে যদি না করেন তবে থানায় এসে গায়ে আগুন ধরিয়ে আত্মহত্যা করবেন। সেই সঙ্গে তিনি ও তার পরিবার নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছেন বলে জানান।

একটি পোশাক কারখান উচ্চ পদে কর্মরত ওই নারী  সাংবাদিকদের জানান, ৯ মাস আগে একটি ঘটনার জেরে সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হকের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। এরপর দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিয়ে কথা বলে তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক হয় একাধিক বার। মার্চ মাসে তাদের সম্পর্কের বিষয়টি রেজাউলের স্ত্রী জেনে যায়।

রেজাউল তাকে বলেছিলো তার সন্তান একটু বড় হলে স্ত্রীসহ সন্তানকে কানাডা পাঠিয়ে দিবেন। তাদের মাঝে-মধ্যে ঝগড়া হলেও আবার মধুর সম্পর্কের সৃষ্টি হয়। গত রোববার রাতে রেজাউলকে কয়েকবার ফোন করার পর সে বারবার কেটে দেয়। এরপর রাত ১টার দিকে আবার ফোন দেয়া হলে ওই ফোন রেজাউল হকের স্ত্রী ধরে।

এসময় তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করে রেজাউলের স্ত্রী। পরের দিন সোমবার সকাল ১০টার দিকে রেজাউলের বাসায় গেলে তার স্ত্রী মহিলা পুলিশ দিয়ে তাকে মারধর করে ও মোবাইল ফোন কেড়ে রাখে। পরে পুলিশ এসে তাকে থানায় নিয়ে যায়। বিকেলের দিকে রেজাউল হক থানায় এসে ওসির রুমে ওসি ও তার মায়ের সামনে তাকে আগামী ৮ই আগস্ট বিয়ে করবেন ও রাত সাড়ে ৮টার দিকে তাদের বাড়িতে আসবেন বলে প্রতিশ্রুতি দেন।

তার ওই প্রতিশ্রুতি পাওয়ার পর তিনি থানায় থেকে বাড়ি চলে যান। রাতে রেজাউল হক তাদের বাড়িতে না এসে স্থানীয় চেয়ারম্যান রিপন দেওয়ান ও সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সায়েদুল ইসলামকে পাঠান। তারা এসে তাকে টাকার বিনিময়ে বিষয়টি মীমাংসার প্রস্তাব দেন।

তাদের প্রস্তাবে রাজি না হওয়াতে রেজাউল হকের চাকরি রক্ষার স্বার্থে তার কাছ থেকে একটি লিখিত অভিযোগ নেন রেজাউল হকের সঙ্গে তার  কোন সম্পর্ক নেই। চেয়ারম্যান রিপন দেওয়ান  ও আওয়ামী লীগ নেতা সায়েদুল ইসলাম সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হকের পক্ষে তাকে একটি লিখিত দেন যে আগামী ৮ই আগস্ট রেজাউল বিয়ে করবেন, যদি বিয়ে না করেন তবে সে আইনগত ব্যবস্থা নিতে পারবেন।

অভিযুক্ত সহকারী পুলিশ সুপার  রেজাউল হকের  অফিসে গেলেও তাকে পাওয়া যায়নি। তার সরকারী মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। তবে সোমবার তিনি বলেছিলেন ওই নারীর সাথে তার কোন সম্পর্ক নেই। একটি ভুলবোঝা বুঝির কারণে ওই নারী তার বাসায় এসেছিলো। এসময় তার স্ত্রী সাথে একটু ঝামেলা হয়।

সিংগাইর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সায়েদুল ইসলাম জানান, সহকারী পুলিশ সুপার রেজাউল হকের সঙ্গে কথা বলেই তিনি ওই নারীর সঙ্গে সোমবার রাতে দেখা করতে যান। তবে ওই নারীর সঙ্গে মীমাংসা করার জন্য সময়ে চেয়ে একটি বিয়ে তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছিলো। কিন্তু ওই নারী সময় না দিয়েই সাংবাদিকসহ পুলিশ সুপাররের কাছে অভিযোগ করেছেন। এখন আইনগতভাবে যা হয় তাই হবে।

এদিকে মঙ্গলবার বিকেলে ওই ভুক্তভোগী নারী পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খানের অফিসে দেখা করেন। সেখানে তিনি পুলিশ সুপারের কাছে সমস্ত ঘটনা খুলে বলেন।পুলিশ সুপার মোহাম্মদ গোলাম আজাদ খান সাংবাদিকদের জানান, ওই নারীর সঙ্গে তার কথা হয়েছে। ওই নারী মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। তাকে লিখিতভাবে অভিযোগ দেয়ার জন্য বলা হয়েছে। অভিযোগ পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button