আওয়ামী লীগনারায়ণগঞ্জবাংলাদেশবিএনপিরাজনীতি

নারায়ণগঞ্জের বিএনপির কর্মসূচি ঠেকাতে অস্ত্র হাতে নিয়ে মহড়া ছাত্রলীগের

নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপির কর্মসূচি ঠেকাতে রোববার অন্তত ৩০টি স্পটে অবস্থান নিয়েছিল আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। এসময় অস্ত্র হাতে মহড়া দিতে দেখা যায় ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের। এদিন কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসাবে বিক্ষোভ সমাবেশ করার কথা ছিল বিএনপির।

এর আগে শনিবার রাত ৯টায় উপজেলার ভুলতায় ছাত্রদল ও যুবলীগের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়েছে। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১২ জন আহত হয়েছেন। ওই সময় যুবলীগ নেতাকর্মীরা জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতির বাড়িতে হামলা ও বিভিন্ন ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে লুটপাট চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।

গত রোববার রাতেও পাঁচ নেতার বাড়িতে হামলার অভিযোগ পাওয়া গেছে।এদিকে রূপগঞ্জের ভুলতা এলাকায় গত রোববার দুপুরে চাইনিজ কুড়াল, চাপাতি, রড ও লাঠিসোঁটা হাতে মিছিলে অংশ নেওয়া তরুণেরা ছাত্রলীগের রাজনীতির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বলে স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে।নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে বিএনপি ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মীদের বাড়িতে হামলা–লুটপাট অব্যাহত আছে।

প্রত্যক্ষদর্শী ও স্থানীয় সূত্র জানায়, জ্বালানি ও নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি এবং বিভিন্ন স্থানে হামলার প্রতিবাদে শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জেলা ছাত্রদলের সহসভাপতি ও রূপগঞ্জ উপজেলা ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমানের নেতৃত্বে একটি মশাল মিছিল বের করেন ছাত্রদল নেতাকর্মীরা। মিছিলটি ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের বলাইখা থেকে ভুলতা বাসস্টেশনের দিকে আসছিল। এ সময় যুবলীগ নেতা কামাল হোসেনের নেতৃত্বে নেতাকর্মীরা তাদের ওপর হামলা করে।

পরে উভয়পক্ষে কয়েক দফা ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষ হয়। এতে উভয়পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন। একপর্যায়ে যুবলীগের ধাওয়ায় ছাত্রদল নেতাকর্মীরা পালিয়ে যান। আহতদের মধ্যে যুবলীগ নেতা রুহুল আমিন, ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান, অনিক, মাসুম মিয়া, জাহিদ হাসান হৃদয়, অন্তর, সাহাবুদ্দিন ও রেহানাকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

ছাত্রদল নেতা মাসুদুর রহমান বলেন, যুবলীগ নেতাকর্মীরা আমাদের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে অতর্কিত হামলা করেছে। আমার বাড়িতে হামলা চালিয়ে পরিবারের সদস্যদের আহত করেছে। এছাড়া যুবদল নেতা নুরুর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা ও লুটপাট চালিয়েছে।

সশস্ত্র মহড়ার বিষয়টি জানতে চাইলে ছাত্রলীগ নেতা নাজমুল হাসান বলেন, ‘সমগ্র রূপগঞ্জ থেইকা পজিটিভ-নেগেটিভ অনেকেই মিছিলে আসে। এইখানে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, শ্রমিক লীগসহ সব সংগঠনের মিছিল ছিল। কারা অস্ত্র হাতে এসেছিল জানি না।’ ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার জন্য বিরোধী পক্ষের লোকজনও অস্ত্র নিয়ে মিছিলে ঢুকতে পারে বলে মনে করেন তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শী ও ভুক্তভোগীদের ভাষ্য অনুযায়ী, হামলাকারীরা রূপগঞ্জ থানা আওয়ামী লীগের নেতা ও কায়েতপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বজলুর রহমানের অনুসারী হিসেবে পরিচিত।

বিষয়টি নিয়ে নারায়ণগঞ্জের পুলিশ সুপার গোলাম মোস্তফা রাসেল সাংবাদিকদের বলেন, যাঁরা রামদা, কুড়াল নিয়ে মহড়া চালিয়েছেন, তাঁদের সন্ধান করা হচ্ছে। ঘটনার তদন্ত করে আইনি ব্যবস্থা নিতে থানা-পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

রূপগঞ্জের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ফয়সাল হক বলেন, ‘আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য পুলিশ কী করছে, তা দেখভাল করা আমাদের কাজ। কিন্তু কোনো জায়গায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটলে প্রথমে রেসপন্স করবে (সাড়া দেবে) পুলিশ। তারপর তারা কী ব্যবস্থা নিয়েছে, সেটা আমরা আইনশৃঙ্খলা কমিটির সভায় আলোচনা করি।’

উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক মাহফুজুর রহমান বলেন, এটা ধারাবাহিক হামলার অংশ। ২৯ আগস্ট থেকে এ পর্যন্ত রূপগঞ্জে বিএনপি ও এর সহযোগী সংগঠনের অন্তত ৪২ জন নেতা-কর্মীর বাড়িঘর ও ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানে হামলা হয়েছে বলেও দাবি করেন তিনি।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button