কাঠের গুঁড়া ও ধানের কুঁড়ার সঙ্গে রং মিশিয়ে মরিচের গুঁড়া ও হলুদের গুঁড়া

কাঠের গুঁড়ার সঙ্গে লাল রং মিশিয়ে মরিচের গুঁড়া, ধানের কুঁড়ার সঙ্গে বাসন্তি রং মিশিয়ে তৈরি করা হচ্ছিল হলুদের গুঁড়া। আর চালের গুঁড়ার সঙ্গে বাদামি রং মেশালেই তৈরি হচ্ছিল ধনিয়াগুঁড়া। সিলেটের দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে জরাজীর্ণ একটি টিনের ঘরে এসব কর্মযজ্ঞ চলছিল। দীর্ঘদিন ধরে ভেজাল ও ক্ষতিকারক উপকরণ দিয়ে মসলা তৈরি করছিল ঝর্ণা মসলা মিল নামের স্থানীয় একটি প্রতিষ্ঠান।

অভিযান সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুরে ভোক্তা সংরক্ষণ অধিদপ্তর ও র‌্যাবের উপস্থিতি পেয়ে কারখানার শ্রমিকেরা পাশের ডোবায় নেমে সাঁতরে পালিয়ে যান। তবে এ সময় ফজলুল হক নামের এক শ্রমিককে আটক করে র‍্যাব। ফজলুল হক এসব অপকর্মের বিষয় স্বীকার করেন। পরে কারখানার মালিক নাজিম উদ্দিনকে হাজির হওয়ার নির্দেশনা দেওয়া হলে তিনি কারখানায় তাঁর প্রতিনিধি পাঠান। এ সময় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইনে প্রতিষ্ঠানকে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। পরে কারখানা থেকে জব্দ করা ভেজাল মসলা ও রং ধ্বংস করা হয়।

গতকাল বৃহস্পতিবার বেলা দুইটা থেকে বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত দক্ষিণ সুরমার লালাবাজারে র‍্যাব ও জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের যৌথ অভিযান পরিচালনা করে। এ সময় ঝর্ণা মসলা মিল থেকে ২০০ বস্তা ভেজাল মসলা এবং ১২ ব্যাগ ক্ষতিকারক রং জব্দ করা হয়। পরে প্রতিষ্ঠানের মালিককে তিন লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক মো. আমিরুল ইসলামের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।

জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর সিলেটের সহকারী পরিচালক বলেন,কারখানার এক শ্রমিক পালিয়ে যাওয়ার সময় আটক করা হয়। পরে ওই ব্যক্তি রং দিয়ে ভেজাল মরিচগুঁড়া, হলুদগুঁড়া  ও ধনিয়ার গুঁড়া তৈরির পদ্ধতি দেখিয়েছেন। পরে কারখানার মালিকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে। তবে তিনি সিলেটের বাইরে অবস্থান করায় তাঁর প্রতিনিধির কাছ থেকে তিন লাখ টাকা জরিমানা আদায় করা হয়েছে। পাশাপাশি ভবিষ্যতে এমন কর্মকাণ্ড করবেন না বলে মুচলেকা নেওয়া হয়েছে।অভিযান শেষে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে ভোক্তা অধিকারবিষয়ক সচেতনতামূলক লিফলেট বিতরণ করা হয়। জনস্বার্থে এ ধরনের অভিযান অব্যাহত থাকবে বলেও জানিয়েছেন আমিরুল ইসলাম।

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে

Exit mobile version