আওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভছাত্রলীগঢাকাবাংলাদেশরাজধানীরাজনীতিশিক্ষাঙ্গন

সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে ইডেন কলেজে দুই পক্ষের সংঘর্ষ

রাজধানী ঢাকার ইডেন মহিলা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি জান্নাতুল ফেরদৌসকে হেনস্তা ও মারধরের ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে গতকাল শনিবার মধ্যরাত থেকে শুরু করে আজ রোববার দিনভর উত্তপ্ত ছিল কলেজ ক্যাম্পাস।

সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের বিরোধী পক্ষ আজ দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করে তাঁদের দুজনকে ‘অবাঞ্ছিত’ ঘোষণা করে তাঁদের বহিষ্কারের দাবি করেছে।পরে সন্ধ্যার আগে সংবাদ সম্মেলন করতে গেলে প্রতিপক্ষের সঙ্গে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক পক্ষের সংঘর্ষ বাধে। এতে দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।

সংবাদ সম্মেলন শুরুর কয়েক মিনিটের মাথায় তামান্না ও রাজিয়ার বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা সেখানে যান। এ সময় দুই পক্ষের মধ্যে তর্কযুদ্ধ শুরু হয়। একপর্যায়ে তা ধাক্কাধাক্কি ও হাতাহাতি থেকে সংঘর্ষে রূপ নেয়। এ সময় দুই পক্ষ পরস্পরকে চেয়ার দিয়ে আঘাত করতে থাকে। শুরু হয় পাল্টাপাল্টি ধাওয়া ও চুল টানাটানি।

বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে কলেজ মিলনায়তনের সামনে অনুসারীদের সঙ্গে নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেন শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি তামান্না জেসমিন ওরফে রীভা ও সাধারণ সম্পাদক রাজিয়া সুলতানা। সংবাদ সম্মেলন চলাকালে পাশেই তাঁদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করছিল বিরোধী পক্ষ।

সংবাদ সম্মেলনে সভাপতি তামান্না জেসমিন বলেন, ‘আমাদের কমিটির শুরু থেকেই কয়েকটা মানুষ অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছেন। যাঁরা প্রত্যাশিত পদ পাননি, তাঁরাই প্রথম থেকে বিশৃঙ্খলা করে আসছেন। আজ সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজিসহ নানা অভিযোগ আনা হয়েছে। আমরা চাই, একটা সুষ্ঠু তদন্ত হোক। তদন্তে যে দোষী হবে, তার যেন সঠিক বিচার হয়।’

সংঘর্ষে তামান্না জেসমিন, তাঁর অনুসারী সহসভাপতি শেখ সানজিদা, বিরোধী পক্ষে থাকা সহসভাপতি সোনালী আক্তার ও সুস্মিতা বাড়ৈ, ঋতু আক্তারসহ দুই পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। তাঁদের মধ্যে তামান্না ও ঋতু ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি আছেন। সংঘর্ষের পর রাজিয়া আত্মগোপন করেন। পরে রাত সাড়ে আটটার দিকে নিরাপত্তার স্বার্থে পুলিশের গাড়িতে করে তাঁকে কলেজের বাইরে নিয়ে যাওয়া হয়।

আন্দোলনকারী পক্ষের নেতা-কর্মীরা ক্যাম্পাসে টাঙানো তামান্না ও রাজিয়ার ব্যানার ছিঁড়ে ফেলেন। একপর্যায়ে তামান্নাকে পেটান প্রতিপক্ষের নেত্রীরা। পরে কলেজ প্রশাসনে থাকা কয়েকজন শিক্ষক গিয়ে তামান্নাকে উদ্ধার করে অ্যাম্বুলেন্সে তুলে দেন। তখন তামান্নার অনুসারীরা ক্যাম্পাসেই তাঁর চিকিৎসার ব্যবস্থার দাবিতে বিক্ষোভ করতে থাকেন।

তাঁদের আশঙ্কা, তামান্না ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হলে আর ঢুকতে পারবেন না। এ পর্যায়ে কলেজ ক্যাম্পাসের সামনে বিপুলসংখ্যক পুলিশের উপস্থিতি দেখা যায়। এ সময় ‘ক্যাম্পাসে পুলিশ কেন, প্রশাসন জবাব চাই’ বলে স্লোগান দেন ছাত্রলীগের কিছু নেতা-কর্মী। শেষমেশ তামান্নাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়।

এদিকে ক্যাম্পাসে অস্থিরতার বিষয়ে সাংবাদিকেরা আজ দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত কয়েক দফায় কথা বলতে চাইলেও দেখা দেননি ইডেন কলেজের অধ্যক্ষ সুপ্রিয়া ভট্টাচার্য। তাঁর মুঠোফোনে একাধিক কল করেও সাড়া মেলেনি। সাংবাদিকেরা অধ্যক্ষের সঙ্গে কথা বলতে গেলে একাডেমিক ভবনে প্রবেশের ফটক বন্ধ করে দেওয়া হয়। ফটক খুলে দেওয়ার অনুরোধ করলেও ভেতরে পরীক্ষা চলছে বলে জানানো হয়।

পরে ইডেন কলেজের একাডেমিক পরিষদের সদস্য মো. জিয়াউল হক সাংবাদিকদের বলেন, ‘আজ পরীক্ষা চলছে, তাই অধ্যক্ষ দেখা করবেন না। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আমরা সর্বোচ্চ ফোরামে কথা বলেছি। বাধ্যবাধকতার কারণে অধ্যক্ষ কথা বলতে পারবেন না। পরে সাংবাদিকদের ডেকে একদিন কথা বলবেন।’

বাংলা ম্যাগাজিন /এসকে

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button