দুর্ঘটনাপঞ্চগড়বাংলাদেশ

পঞ্চগড়ের করতোয়া নদীতে আজও ভেসে উঠছে লাশের জোয়ার

পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলার করোতোয়া নদীতে নৌকাডুবির ঘটনায় আজ তৃতীয় দিনের মতো উদ্ধার অভিযান চলছে। এখন পর্যন্ত ৬৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। আজ সকাল থেকে এই পর্যন্ত নতুন করে ১৬ জনের মরদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। এ ঘটনায় আরও ৯ জন নিখোঁজ রয়েছেন। 

সোমবার গভীর রাত থেকে আজ বেলা ২টা পর্যন্ত আরও ১৬ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। বোদা উপজেলার আউলিয়া ঘাট, দেবীগঞ্জের করতোয়া ঘাট এবং দিনাজপুরের বীরগঞ্জ এলাকায় নদী থেকে এসব লাশ উদ্ধার করা হয়। এ নিয়ে গত তিনদিনে লাশের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬৫ জনে। এখনো নিখোঁজ রয়েছেন ১২ জন।

পঞ্চগড় এবং আশপাশের জেলার ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট এ উদ্ধার অভিযানে অংশ নিচ্ছে। এছাড়া রংপুর, কুড়িগ্রাম ও রাজশাহী থেকে আসা তিনটি দলে ৯ জন ডুবুরি অংশ নিচ্ছেন তল্লশিতে। নিখোঁজদের সন্ধানে আওলিয়া ঘাটসহ করতোয়ার বিভিন্ন অংশে ছুটে বেড়াচ্ছেন স্বজনরা।

পঞ্চগড় ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের স্টেশন অফিসার তুষার কা‌ন্তি রায় বলেন, সকালে লাশগুলো ভেসে উঠলে স্থানীয়রা আমাদের জানায়। পরে আমরা ভোর সাড়ে ৫টা থেকে উদ্ধার অভিযান শুরু করি। তাৎক্ষণিক তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।ফায়ার সার্ভিসের আটটি ইউনিট ও ৯ ডুবুরি উদ্ধার অভিযান চালাচ্ছে বলেও জানান এই কর্মকর্তা।এছাড়া স্থানীয় সংসদ সদস্য ও রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনও এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, এ পর্যন্ত ৫১ জনের মরদেহ পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে।সোমবার পঞ্চগড়ের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক দীপঙ্কর রায় বলেন, আরও প্রায় ৪০ জন নিখোঁজ রয়েছে। তবে নিখোঁজের সংখ্যা নিশ্চিত করে বলা যাচ্ছে না।

স্থানীয়রা জানান, বোদা উপজেলার মাড়েয়া ইউনিয়নের করতোয়া নদীর অন্য পাড়ে বদেশ্বরী মন্দিরে মহালয়া পূজা উপলক্ষে প্রতিবছরের ন্যায় এবারও ধর্মসভার আয়োজন করা হয়। রোববার (২৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরের দিকে মূলত ওই ধর্মসভায় যোগ দিতে সনাতন ধর্মালম্বীরা নৌকাযোগে নদী পার হচ্ছিলেন। তবে ৪০ থেকে ৫০ জনের ধারণ ক্ষমতার নৌকাটিতে দেড় শতাধিক যাত্রী ছিল। অতিরিক্ত যাত্রী বহনের কারণে নদীর মাঝপথে নৌকাটি ডুবে যায়। অনেকে সাঁতার তীরে আসতে পারলেও সাঁতার না জানা নারী ও শিশুরা পানিতে ডুবে যায়।

ঘটনা তদন্তে অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেটকে আহবায়ক করে পাঁচ সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। নিহত সদস্যের প্রতিটি পরিবারকে লাশ সৎকারের জন্য জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২০ হাজার করে টাকা প্রদান করা হচ্ছে।আর আহতদের ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে প্রদান করা হয়েছে।এদিন দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন রেলপথমন্ত্রী অ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম সুজন এবং ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ফরিদুল হক খান। এ সময় ধর্ম প্রতিমন্ত্রী সরকারের পক্ষে নিহতদের পরিবারকে ২৫ হাজার টাকা করে সহায়তা দেওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button