আজ মঙ্গলবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে যাওয়া নবগঠিত ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয় শাখা কমিটির সদস্যদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটেছে।রাজধানীর নীলক্ষেত ফাঁড়ির সামনে এ হামলার ঘটনা ঘটে। হামলায় ছাত্রদলের অন্তত ২০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। হামলায় ছাত্রলীগের নেতার্মীরা জড়িত বলে অভিযোগ আছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে আজ বিকেল সাড়ে চারটায় দেখা করতে চেয়েছিলেন ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা। গতকাল সোমবার ছাত্রদলের পক্ষ থেকে এ কথা বলার পরপরই শিক্ষার্থীদের সমস্যা-সংকট সমাধানে উপাচার্যকে স্মারকলিপি দেওয়ার কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রলীগ। পাশাপাশি তারা ছাত্রদলকে প্রতিহত করার ঘোষণা দেয়। ঘোষণা অনুযায়ী, আজ বিকেলে ক্যাম্পাসে ঢুকতে গেলে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালান ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ছাত্রলীগের স্যার এ এফ রহমান হল শাখার নেতাকর্মীরা স্মৃতি চিরন্তন চত্বরে অবস্থান নেন। বিকেল ৪টা ২০ মিনিটে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে নীলক্ষেত মোড় হয়ে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করেন। এসময় এফ রহমান হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি রিয়াজ ও সাধারণ সম্পাদক মুনের নেতৃত্বে ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের লাঠিসোটা দিয়ে হামলা করা হয়।
ছাত্রদলের নেতার্মীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে তরুণ চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে তারা এফ রহমান হলের সামনে পৌঁছান। এসময় ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা রড লাঠি নিয়ে এলোপাতাড়ি হামলা চালান।ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় সংসদের ১নং যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাকিবুল ইসলাম রাকিব জানান, হামলায় ২০ জন নেতাকর্মী রক্তাক্ত হয়েছেন। তাদেরকে ইসলামী ব্যাংক সেন্ট্রাল হসপাতালসহ বিভিন্ন হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ছাত্রলীগের এ হামলাকে ন্যক্কারজনক বলে আখ্যা দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে তিনি বলেন, ‘ছাত্রলীগের হামলায় আমাদের বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন।১৫-২০ জনের বেশি নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানাই ও হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’
তবে ছাত্রদলের ওপর হামলার ঘটনা অস্বীকার করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেন। তিনি বলেন, ‘আজ ছাত্রলীগের সব নেতা-কর্মীর মনোযোগ ছিল শিক্ষার্থীদের সমস্যা-সংকট সমাধানে প্রশাসনের সঙ্গে দর-কষাকষির দিকে। ছাত্রদলের সঙ্গে কিছু ঘটে থাকলে তা তাদের অভ্যন্তরীণ কোন্দলের বহিঃপ্রকাশ।’
হামলার বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগের এফ রহমান হল শাখার সভাপতি রিয়াজুল ইসলাম বলেন, আজকে আমাদের পূর্বনির্ধারিত কর্মসূচি ছিল। সেটা শেষ করে আসার পথে ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা একজনকে হয়রানি করতে দেখি। তখন সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাদের প্রতিহত করে।
ভিসির সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য ছাত্রদলের নতুন কমিটির সোমবার সকাল ১০টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার কথা ছিল। কিন্তু খবর পেয়ে আগে থেকেই বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন প্রবেশমুখে অবস্থান নেন ছাত্রলীগ নেতাকর্মীরা। পরে ছাত্রদল তাদের ক্যাম্পাসে আসার সিদ্ধান্ত স্থগিত করে। মঙ্গলবার পুনরায় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে সাক্ষাৎতের কর্মসূচি ঘোষণা করে ছাত্রদল। ছাত্রলীগও নিকটতম সময়ে পাল্টা কর্মসূচি ঘোষণা করে। দুই প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছাত্র সংগঠনের এমন পাল্টাপাল্টি অবস্থানে দিনভর ক্যাম্পাসে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছিল, যা বিকালে হামলা ও সংঘর্ষে রূপ নেয়।
বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ