আওয়ামী লীগআমেরিকাকূটনীতিজাতীয়নির্বাচনবাংলাদেশবিএনপিরাজনীতি

সামরিক শাসক হিসেবে ক্ষমতায় আসার এখন আর কোনো সুযোগ নেই

সামরিক শাসক হিসেবে ক্ষমতায় আসার এখন আর কোনো সুযোগ নেই বলে সাফ জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।গতকাল মঙ্গলবার যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম ভয়েস অব আমেরিকাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে এ কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

সাক্ষাৎকারে বিএনপির শাসনামলের সমালোচনা করেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিএনপি শাসনামলে সরকারের লুটপাট, দুর্নীতি, স্বজনপ্রীতির কারণে দেশে চরম অরাজকতার সৃষ্টি হয়। তখন ইমার্জেন্সি ডিক্লিয়ার হয়। ইমার্জেন্সি পিরিয়ড দুই বছর চলে এবং এ সময় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। তখন বন্দি অবস্থায় বসে ২০২১ সাল পর্যন্ত দেশের শিক্ষা, সড়কসহ বিভিন্ন খাতের উন্নয়ন নিয়ে একটি নোট করি। পরে ক্ষমতায় এসে এর ওপর ভিত্তি করেই রাষ্ট্র পরিচালনা শুরু করি।’

সরকারপ্রধান বলেন, ‘সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭-এ বলা হয়েছে, প্রজাতন্ত্রের মালিক হচ্ছে জনগণ। ২০০৯ সালে আমরা সেখানে আরেকটা ধারা যুক্ত করেছি। সেখানে বলা হয়েছে, সামরিক কেউ যদি নির্বাচিত প্রতিনিধিকে জোর করে ক্ষমতা থেকে হটায় বা ক্ষমতা দখলের চেষ্টা করে, তবে তা হবে শাস্তিযোগ্য অপরাধ। গণতন্ত্রের নিরাপত্তার জন্যই আমরা এই ব্যবস্থা গ্রহণ করেছি।’‘গণতান্ত্রিক ধারার সুরক্ষার জন্য এই কঠোর আইন করেছি। কেউ যদি হত্যা, ষড়যন্ত্র কিংবা ক্যু করে, তবে এই অপরাধে তার বিচার হবে। এ অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ডের বিধান রয়েছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘২০০৯ সালের নির্বাচনে আমরা নিজেদের পরিকল্পনা অনুযায়ী রূপকল্প-২০২১ বাস্তবায়নে কাজ করি। পরে জনগণ আমাদের কাজে খুশি হয়ে ২০১৪ সালে আবারও ক্ষমতায় নিয়ে আসে। এর ফলে আমরা দেশের উন্নয়নে ধারাবাহিকভাবে কাজ করতে পারি।’

দেশের উন্নয়ন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের কাজের ভিত্তিটাই হলো আমাদের যতটুকু সম্পদ আছে, তার যথাযথ ব্যবহার করা। নিজেদের উৎপাদন বাড়ানো এবং সুপরিকল্পিতভাবে কাজ করেছি বলেই আজ আমরা উন্নতি করতে পেরেছি।’

ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘টেলিভিশনে টকশোতে সবাই সরকারের বিরুদ্ধে বিভিন্ন কথা বলছে এবং বাসায় গিয়ে বলছে, তারা কথা বলতে পারে না। এ বিষয়ে তবে আর কী বলার আছে? কিন্তু ১৯৭৫ সাল থেকে ১৯৮৬ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশে ১৯টা ক্যু হয়েছে। এরপরও কয়েক দফা ক্যুয়ের চেষ্টা করা হয়েছে। সে সময় তো কোনো মানুষেরই মতপ্রকাশের অনুমতি ছিল না।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এখন নির্বাচন কমিশন মুক্ত। আগে নির্বাচন কমিশন সরকার করত। তবে এখন আইনের মাধ্যমে কমিশন গঠন হয়। এখন তবে এই দাবিটা কেন? আসলে ব্যাপার হচ্ছে, সামরিক ব্যক্তিদের মাধ্যমে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি গঠন করা হয়েছে। তারা অভ্যুত্থান বা জোর করে দখলের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছে।’

কেয়ারটেকার সরকার প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিএনপির শাসনামলে শুধু ক্ষমতায় থাকার জন্য এক কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার তালিকা করেছিল। এ বিষয়ে জানার পর আমরা যখন কেয়ারটেকার সরকারের জন্য আন্দোলন করেছিলাম তখন খালেদা জিয়া বলেছিলেন, ‘পাগল আর শিশু ছাড়া কেউ নিরপেক্ষ নয়।’ আর আজ তারাই (বিএনপি) কেয়ারটেকার সরকারের দাবি করছে।”

তিনি বলেন, ‘আমার কথা হচ্ছে, মানুষ স্বাধীনভাবে ভোট দেবে। আওয়ামী লীগসহ আমরা বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নিরপেক্ষ নির্বাচনের জন্য কিছু সংস্কার করি। এর মধ্যে আইডি কার্ড, ছবিসহ ভোটার তালিকা ও ট্রান্সপারেন্ট বক্সের ব্যবস্থা করলাম। তারা (জনগণ) যদি আমার কাজের প্রতি খুশি হয়, ভোট দেয় তবে আমি আবার ক্ষমতায় থাকব। আমরাই মানুষের সাংবিধানিক অধিকার বজায় রাখতে এ সংস্কার করেছি।‘

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button