বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমধ্যপ্রাচ্য

মক্কার হেরা পর্বতে লেজার লাইটের মাধ্যমে কোরআনের প্রথম আয়াত

সৌদি আরবের পবিত্র নগরী মক্কাতে  হেরা পর্বতে লেজার লাইট ডিসপ্লেতে মহানবী হযরত মোহাম্মদের (স.) কাছে নাজিলকৃত প্রথম কোরআনের আয়াত প্রদর্শন করা হয়েছে। ঐতিহাসিক জাবাল আল নূরে এ আয়োজন করা হয়। খবর আরব নিউজ।

মুসলিমরা বিশ্বাস করেন, হেরা পর্বতের গুহায় মহানবী হজরত মুহাম্মদ (স.)-এর ওপর নাজিল হওয়া প্রথম আয়াত ছিল এটি। সেখানকার হেরা গুহা নামের একটি গুহাতে অবস্থানকালে মহানবীর কাছে সর্বপ্রথম কোরআনের আয়াত নিয়ে আসেন ফেরেশতা জিবরাইল (আ.)। লেজারটি জাবাল আল-নূর পাহাড়ের উপর স্থাপন করা হয়। এটি কাবা শরিফ থেকে ৪ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে এবং হেরা গুহার সামনাসামনি স্থাপন করা হয়েছে।

এ নিয়ে মক্কা ইতিহাস কেন্দ্রের পরিচালক ড. ফাওয়াজ আল-দাহাস বলেছেন, সাধারণভাবে মুসলমানদের কাছে জাবাল আল-নূরের একটি ঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে এবং এটি মক্কার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ও প্রত্যতাত্ত্বিক স্থান। তিনি বলেন, ইতিহাসে এটি হেরা পর্বত হিসেবে পরিচিত ছিল। তবে পবিত্র কোরআনের প্রথম আয়াত নাজিলের পরে সারা পৃথিবীতে যে আলো বিচ্ছুরিত হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে এর নামকরণ করা হয়েছে জাবাল আল-নূর বা আলোর পর্বত।

ড. ফাওয়াজ বলেন, মক্কার যে বৈশিষ্ট্য বিশ্বের অন্যান্য শহর থেকে একে আলাদা করে সেটি হল এটি একটি উন্মুক্ত জাদুঘর। এর সমস্ত পর্বত, উপত্যকা, পাথর এবং কবরস্থানগুলো একটি অনন্য ইতিহাসের প্রতিনিধিত্ব করে, যা নবী এবং তার সম্মানিত সঙ্গীদের অমর গল্প বলে।। নবী এবং তার সম্মানিত সঙ্গীদের অমর কাহিনীগুলো জানায়।

জাবাল আল-নূরের বাসিন্দা আবদুল্লাহ আল-আজহারী বলেন, জাবাল আল-নূরে লেজারের আলোর মাধ্যমে পবিত্র কোরআনের প্রথম নাজিলকৃত আয়াতের উপস্থাপন স্থানটিকে একটি আধ্যাত্মিক মাত্রা দিয়েছে। স্থানটির প্রতি আরও শ্রদ্ধা-ভক্তির উদ্রেক করেছে।সৌদি আরবের ভিশন ২০৩০ এর অন্যতম লক্ষ্য হলো মুসলিমদের জন্য ঐতিহাসিক গুরুত্ব বহনকারী স্থানগুলোতে দর্শনার্থীদের ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক অভিজ্ঞতাকে সমৃদ্ধ করা।

লেজারের মাধ্যমে আয়াতটি উপস্থাপন করেছিল সাময়া ইনভেস্টমেন্ট কোং, যেটি মক্কায় দুটি সাংস্কৃতিক প্রকল্পও তৈরি করছে। তারা মক্কায় দুটি সাংস্কৃতিক প্রকল্পও তৈরি করছে, সেগুলো হলো- জাবাল আল-নূরে মিউজিয়াম অফ রিভেলেশন এবং মিউজিয়াম অফ মাইগ্রেশন। এগুলোর লক্ষ্য হচ্ছে, প্রাক-ইসলামী যুগ থেকে বর্তমান পর্যন্ত বিভিন্ন ধরনের উপস্থাপনার মাধ্যমে নবীর মিশনের ইতিহাস এবং উত্তরাধিকারের সাথে দর্শকদের পরিচিত করা।

রয়্যাল কমিশন ফর মক্কা সিটি অ্যান্ড হোলি সাইটস এবং অন্যান্য সংস্থার সরাসরি তত্ত্বাবধানে ৬৭ হাজার বর্গমিটারেরও বেশি এলাকায় হীরা সাংস্কৃতিক জেলা প্রতিষ্ঠার কাজও শুরু হয়েছে। অনেকগুলো সাংস্কৃতিক এবং পর্যটন স্পট যেমন রিভিলেশন গ্যালারি এবং পবিত্র কোরআন জাদুঘর নিয়ে এটি গঠিত হবে। গ্যালারিগুলোতে উন্নত প্রযুক্তিগত উপস্থাপনার মাধ্যমে নবীর ঘটনা এবং কোরআনের বিভিন্ন আয়াতের বিষয়বস্তু উপস্থাপন করবে।

স্থানীয় বাসিন্দা মোহাম্মদ আল-হুসাইনি মন্তব্য করেন, এই সাংস্কৃতিক প্রকল্পগুলোর মাধ্যমে ইসলামের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের যেসব বিষয় এখানে সেখানে ছড়ানো-ছিটানো ছিল, সেগুলো সুসংগঠিত রূপ লাভ করবে। আমরা পুরো প্রকল্পের সমাপ্তির জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি, যেটি আধ্যাত্মিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ইসলামের ইতিহাস-ঐতিহ্যকে প্রতিফলিত করবে।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button