আওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভছাত্রলীগঢাকাবাংলাদেশরাজধানীরাজনীতি

ইডেনে পড়াশুনা করেছেন,এই বিষয়টি বলতেই লজ্জা পেতে হয়

সম্প্রতি রাজধানীর ইডেন মহিলা কলেজে ছাত্রলীগ কাণ্ডে সমালোচনার ঝড় বইছে সারা দেশে। কলেজ ক্যাম্পাসে আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি অবস্থানে প্রকাশ পেয়েছে ছাত্রলীগ নেত্রীদের নানা অপকর্মের কথা। এমনকি ছাত্রলীগের পদধারী নেত্রীরাই ফাঁস করেছে কলেজের সুন্দরী শিক্ষার্থীদের নিয়ে কলেজ ছাত্রলীগ সভাপতি তামান্না জেসমিন রিভার অনৈতিক কর্মকান্ডের বিষয়গুলো।

হয়তো গুটি কয়েক শিক্ষার্থীর কারণেই পুরো ক্যাম্পাসটাকেই কথা শুনতে হচ্ছে উল্লেখ করে ইডেন কলেজ ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা সুমাইয়া বলেন, ‘আমরা যারা ইডেনের পরিবার বা আমাদের যারা অভিভাবক আছে তারা সবাই কিন্তু লজ্জার সম্মুখীন হচ্ছি, অনেকেই আমাদের প্রশ্ন করছেন , তাহলে পরিবেশটা কি এরকমেরই। আমরাও কি এমনই? বাজে ধরণের ইঙ্গিত আমাদের দিকে আসছে।’

ব্যাপক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে ইডেনে ছাত্রলীগ কান্ডে সাধারণ শিক্ষার্থীদের অনৈতিক কাজে বাধ্য করার বিষয়টি। যা নিয়ে ব্যাপকভাবে বিব্রত ইডেনের শিক্ষার্থীরা। তারা বলছেন, ‘এখন নাকি ইডেনে পড়াশুনা করেছেন, এই বিষয়টি বলতেই লজ্জা পেতে হয় তাদের’ ঠিক এমনটিই বলছিলেন ইডেন কলেজ ছাত্র দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক সৈয়দা সুমাইয়া।

এ বিষয়ে সৈয়দা সুমাইয়া বলেন, ‘আমরা ইডেনের শিক্ষার্থী এখন বাইরে গিয়ে বলতেই লজ্জা পাই। ইডেনে ছাত্রলীগ কাণ্ডের পর থেকেই বিভিন্ন আত্মীয় স্বজন আমাদের দিকে আড় চোখ তাকানো শুরু করেছে, আবার অনেকেই ফোন দিয়ে জিজ্ঞেস করছে বিষয়গুলো নিয়ে।’

ইডেন কলেজের সাবেক ছাত্রী শাকেরা আরজুর ‘ইডেন লাইফ কষ্টের’ শিরোনামে একটি লেখা এখন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল। শাকেরা তার অভিজ্ঞতায় লিখেছেন-‘ইডেন নিয়ে মুখ খুললে শেষ হবে না। কিসের লেখাপড়া? সতীত্ব নিয়ে বেঁচে থাকাই দায়। শুধু ইডেন নয়; মেয়েরা এখন কোনো ভার্সিটিতেই নিরাপদ নয়। সুন্দরী হলে তো বর্গা ফ্রি। হল তো হল নয়; যেন…।

জীবনে বহু বান্ধবীর কাছ থেকে শুনেছি তাদের সতীত্ব হারানোর হৃদয়বিদারক কাহিনী। অনেক মেয়ে ওপেন মুখ না খুললেও, বান্ধবীদের কাছে বলে। শাকেরা নিজের কথা বর্ণনা করেছেন এভাবে-আমার ইডেন লাইফ কেটে গেছে। প্রতিদিন দু’রাকাত নামাজ পড়ে সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করতাম যেন, শকুনদের চোখে না পড়ি। আল্লাহ পাক দোয়া কবুল করেছেন। আমাদের  মেস মেম্বাররা সবাই ছিলাম নামাজি।

ইডেন লাইফের এক্সপেরিয়েন্স আছে অনেক। অনেক সময় দেখতাম, চোখের সামনেই এক বান্ধবীকে ডেকে নিয়ে গেছে, একটু কান দিলে শুনতাম তার কষ্টের গোঙানির শব্দ। পাশের  মেসে ঢুকতেই দেখিছি বহু কিছু। কিছুই করার নেই, ছিল না। নিজেকে সেইফ রাখতে পারাই যে বড়ো বিষয়।

পাশের রুমের এক বোন গেছে তিন দিন আগে। কয়েকজন ‘পৌরুষ ষাঁড়’ নিজেদের কাম বাসনা পূরণ করে ছেড়ে দিয়েছে। অগত্যা হলে এসে কাঁদলো। শুনলাম, সান্ত্বনা দিলাম, যাওয়ার আগেই তো ভাবতে পারতে। এইগুলা তো রুটিন হিসেবে চলে। অনেক মেয়ে ভিভিআইপি হোস্টেলে নম্বর দিয়ে আসে।

ইডেনের ছাত্রীদের টেস্ট করলে অনেক মেয়ের ব্লাডে জীবাণু পাওয়া যাবে। হলগুলোতে সতীত্ব ঠিক রেখে থাকা কষ্টের। ইডেন নয়; বান্ধবীরা যারা অন্যান্য কলেজ-ভার্সিটিতে পড়ে খবর নিয়েছি, ফিজিক্যালি যন্ত্রণা আছেই। ভোগের রাজ্যে সবাই পাহারাদার। সবই চলে নিয়মিত, বাড়িতে যায় ভদ্র সেজে।

এভারেজ ছেলেরা দায়ী নয়; কিছু মেয়েও আছে দুশ্চরিত্রের। ওরা যত পুরুষা’ঙ্গ দেখেছে, জীবনে এত কাঁচা মরিচও দেখে নাই। অনেক মেয়ে নিজ থেকেই ছেলে পটায়, নাইট কাটে নিজ খরচে। আজিমপুর, বকশীবাজারে  মেস নেয় কয়েকজন মিলে। এই তো  মেস নয়; সেক্স পাওয়ার কম্পিটিশন হাউস। এই  মেসেই কুমারিত্ব শেষ। সব হারিয়ে বাড়িতে যায়। আর বউ হয়ে ঢাকায় ফিরে।’

শাকেরার এ লেখা পড়ে চমকে উঠতে হয়। তার পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি। কিন্তু গত ক’দিন ধরে ইডেন কলেজে যা হচ্ছে শাকেরার কথার প্রতিধ্বনিই শোনা যাচ্ছে ছাত্রলীগ নেত্রীদের মুখে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button