যে কারণে গ্রেপ্তার সিলেটের আবাসন চেয়ারম্যান শেরিন

গতকাল বুধবার (২৮ সেপ্টেম্বর)  সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মাহববুল হক শেরিনকে গ্রেপ্তার করেছে অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।জগন্নাথপুর উপজেলার মিরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসি গ্রামের নিজ বাড়ি থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।টাকা আত্মসাৎ এর মামলায় তাকে গ্রেপ্তার করা হয় বলে জানিয়েছেন সিআইডির সিলেট মেট্রোর বিশেষ পুলিশ সুপার সুজ্ঞান চাকমা।

যুক্তরাজ্য প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে সিলেটের আবাসন এসোসিয়েটের চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরিনের বিরুদ্ধে। প্রায় ১৪ বছর ধরে আম্বরখানার ওই প্রকল্প নিয়ে অনেক পানি ঘোলা হয়েছে। প্রবাসী বিনিয়োগকারীরা এখানে অন্তত ২৫  কোটি টাকা বিনিয়োগ করে কোনো সুরাহা পাচ্ছিলেন না। কারও কারও নাম কোম্পানির পরিচালকদের তালিকায় থাকলেও অনেকের নাম নেই। অথচ তাদেরকে পরিচালক করা হচ্ছে জানিয়ে ২০ থেকে ৩০ লাখ টাকা পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়েছে। আর এসবই করেছেন কোম্পানির চেয়ারম্যান মাহবুবুল হক শেরিন। তার মূল বাড়ি জগন্নাথপুরে। তিনি জগন্নাথপুরের মিরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানও। নগরীর আম্বরখানা পয়েন্টের পাশেই আবাসন হাউজিং। ২০০৬ সাল থেকে ব্যস্ততম আম্বরখানা পয়েন্টের পাশে এ প্রকল্পের সাইনবোর্ড রয়েছে।

সাবেক অর্থ ও পরিকল্পনামন্ত্রী এম সাইফুর রহমানকে দিয়ে উদ্বোধন করে এটির যাত্রা শুরু হয়েছিলো। কোম্পানির প্রবাসী পরিচালকরা জানিয়েছেন- ইতিমধ্যে আবাসন এসোসিয়েট ও আবাসন ডেভেলপার কোম্পানির নামে মোট ৬৭ জনকে পরিচালক করা হয়েছে। এরমধ্যে আবাসন এসোসিয়েটে রয়েছেন ৩৭ জন। আর বাকিদের ডেভেলপার কোম্পানিতে পরিচালক করা হয়েছে। এরমধ্যে প্রায় সবাই হচ্ছেন প্রবাসী বিনিয়োগকারী। আবাসনে ফ্ল্যাট কিংবা প্লটের লোভনীয় অফার দিয়ে তাদের কোম্পানির পরিচালক করা হয়।

সবাইকে আবাসন এসোসিয়েটে পরিচালক করার কথা বলে টাকা গ্রহণ করা হয়েছিলো। পরবর্তীতে অনেককে আবার আবাসন ডেভেলপার কোম্পানির পরিচালক করা হয়। যারা ডেভেলপার কোম্পানির পরিচালক হয়েছেন তারা কোনো জমির মালিকানা পাননি। ফলে গোটা প্রকল্প নিয়ে এখন অনিশ্চয়তায় পড়েছেন বিনিয়োগকারী শতাধিক প্রবাসী।

সিআইডি জানায়- চেয়ারম্যান শেরিন-এর বিরুদ্ধে সিলেট নগরস্থ আম্বরখানা পয়েন্ট সংলগ্ন ‘আম্বরখানা আবাসন এসোসিয়েট প্রাইভেট লি. কোম্পানি’ নামে একটি কোম্পানিতে বিনিয়োগে আগ্রহ দেখিয়ে মামলার বাদীসহ বহু প্রবাসীকে কোম্পানির পরিচালক করা হবে এমন শর্তে তাদের নিকট থেকে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। এ মামলাসহ এসএমপি’র এয়ারপোর্ট থানায় আরও ৩ টি প্রতারণার মামলা তদন্তাধীন রয়েছে। মামলা দায়ের করার পর আসামি শেরিন বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি ও ভয়ভীতি প্রদান করে যাচ্ছেন।

এসব অপরাধ করার সুনির্দিষ্ট অভিযোগে চেয়ারম্যান শেরিনকে গ্রেপ্তার করতে বুধবার দুপুর আড়াইটায় জগন্নাথপুরের মিরপুর ইউনিয়নের শ্রীরামসি গ্রামস্থ নিজ বাড়িতে অভিযান চালান অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)-এর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পুলিশ পরিদর্শক শেখ মোহাম্মদ রুবেল ও পুলিশ পরিদর্শক  শাহ মুহাম্মদ মুবাশ্বির।

এসময় নিজ বাড়ি থেকে প্রতারক চেয়ারম্যান শেরিনকে গ্রেপ্তার করা হয়।অভিযানে সিআইডিকে সহায়তা করে জগন্নাথপুর থানা পুলিশ।

Exit mobile version