সীমান্তে নো ম্যান্স ল্যান্ডে পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা কিশোরের মৃত্যু

গতকাল রোববার ভোরে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি ঘুমধুম ইউনিয়নের কুনারপাড়া এলাকার সীমান্তে  মিয়ানমার সীমান্তরক্ষী বাহিনী বর্ডার গার্ড পুলিশের (বিজিপি) পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে রোহিঙ্গা কিশোরের দুই উড়ে গেছে। এতে ঘটনাস্থলে মারা যায় ওমর ফারুক (১৬) নামের ওই কিশোর। এ ঘটনায় আহত হন মো. সাহাবুল্লাহ (৩০) নামে আরেক যুবক।

নিহত যুবকের বাবার নাম মো. আয়ুব। রবিবার সকালে বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তের পূর্বে পাহাড়ি এলাকা থেকে ওইখানে বসবাসরত রোহিঙ্গাদের সহযোগিতায় লাশের উদ্ধার ও দাফন সম্পন্ন হয়েছে।

নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম শূন্যরেখা রোহিঙ্গা শিবিরের মাঝি আবদুর রহিম জানান, ‘শূন্যরেখার বাসিন্দা ওমর ফারুক ও মো. আবদু ইয়্যা নামে দুই রোহিঙ্গা সকালে তুমব্রু সীমান্তের পাহাড়ি ছড়ায় মাছ শিকারে বের হয়। এ সময় সীমান্তে মিয়ানমারের সীমান্ত রক্ষাকারী বাহিনীর (বিজিপি) পুঁতে রাখা স্থলমাইন বিস্ফোরণে ওমর ফারুকের দুই পা বিচ্ছিন্ন হয়ে মৃত্যু হয়। তবে এ ঘটনায় আবদু ইয়্যা নামে আরেক জন প্রাণে রক্ষা পায়। পরে তার মাধ্যমে খবর পেয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে সীমান্তের একটি কবরস্থানে দাফন করা হয়।’

সীমান্তে দায়িত্বে থাকা নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিজিবির এক কর্মকতা জানান, ‘বাংলাদেশ-মিয়ানমার সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে এক রোহিঙ্গার মৃত্যুর খবর গোয়েন্দাদের কাছ থেকে শুনেছি। বিষয়টি কর্তৃপক্ষকে অবহিত করা হয়েছে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, ‘মাইন বিস্ফোরণের বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।’

এর আগে গত ১৭ই সেপ্টেম্বর শূন্য রেখায় রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মিয়ানমার থেকে ছোঁড়া মর্টারশেলের আঘাতে মোহাম্মদ ইকবাল (১৮) নামে এক রোহিঙ্গা যুবক নিহত হন। এর আগের দিন (১৬ সেপ্টেম্বর) তুমব্রু সীমান্তে মাইন বিস্ফোরণে অন্য থাইন চাকমা নামে এক বাংলাদেশি যুবক আহত হন।

গত ১৩ আগস্ট থেকে তুমব্রু সীমান্তের বিপরীতে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যের একটি পাহাড়ে দেশটির নিরাপত্তা বাহিনীর সঙ্গে স্বাধীনতাকামী সশস্ত্রগোষ্ঠী আরাকান আর্মির যুদ্ধ চলছে। প্রায় দুই মাস ধরে চলা এই যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। সর্বশেষ গত ২৮ আগস্ট এবং ৩ সেপ্টেম্বর দুই দফায় চারটি মর্টারশেল এসে পড়েছিল তুমব্রু উত্তরপাড়া ও বাইশফাঁড়ি এলাকায়। এ ঘটনায় ঢাকায় দেশটির রাষ্ট্রদূত উ অং কিয়াউ মো-কে ডেকে প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ।

Exit mobile version