ইউক্রেনজুড়ে ব্যাপক মিসাইল হামলা শুরু করেছে রাশিয়া। ক্রিমিয়া উপদ্বীপের সাথে রাশিয়াকে সংযুক্তকারী ইউরোপের বৃহত্তম রেল ও সড়ক সেতুতে ভয়াবহ হামলাকে রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন সন্ত্রাসী হামলা বলে ঘোষণা করার পর সোমবার (১০ অক্টোবর) সকাল থেকে রাজধানী কিয়েভসহ পুরো ইউক্রেনে এই হামলা শুরু হয়েছে।
ধারণা করা হচ্ছে, ক্রাইমিয়া সেতুতে বিস্ফোরণের প্রতিশোধ নিতেই এ হামলা চলছে। বহুদিন কিয়েভসহ ইউক্রেনের পশ্চিমাঞ্চলীয় শহরগুলোতে হামলা বন্ধ রেখেছিল রাশিয়া। তবে সোমবার আবারও একটু পরপরই কেঁপে উঠছে কিয়েভ। এছাড়া হামলা চলছে লিভিভ, দনিপার, টার্নিপোল, ক্রেমেচুটস্কি, খারকিভ, সুমি, ঝিতোমির ও রিভাইনসহ বেশ কিছু শহরে। এরমধ্যে বেশ কয়েকটি শহর বিদ্যুৎহীন হয়ে আছে।
মূলত ক্রিমিয়ার সেতুতে হামলা ও বিস্ফোরণের জবাবে রাশিয়া প্রতিশোধমূলক হামলা চালাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। সোমবার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ক্রিমিয়ার সেতুতে হওয়া বিস্ফোরণকে সন্ত্রাসী হামলা বলে ঘোষণা করার পর রাশিয়া সোমবার সকালে আপাত প্রতিশোধমূলক হামলায় ইউক্রেনজুড়ে শহরগুলোতে বোমাবর্ষণ করেছে।
কিয়েভের মেয়র ভিটালি ক্লিচকো তার টেলিগ্রাম চ্যানেল থেকে মিসাইল হামলার কথা জানান সকালে। তিনি শহরের বাসিন্দাদের নিরাপদে আশ্রয় নেয়ার আহ্বান জানান। এছাড়া রাজধানীতে সফর না করার অনুরোধ করেন সবাইকে। ইউক্রেনের সিকিউরিটি সার্ভিস এসবিইউ-এর কার্যালয় লক্ষ্য করেও হামলা হয়েছে বলে জানিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর উপদেষ্টা অ্যান্টন গেরাশেঙ্কো। তিনি টেলিগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করে যেখানে দেখা যাচ্ছে কিয়েভের কেন্দ্র থেকে আকাশে ধোয়া উড়ছে।
একই টেলিগ্রাম পোস্টে ইউক্রেন জুড়ে রাশিয়ার হামলার কথা নিশ্চিত করেছেন প্রেসিডেন্ট ভোলোদিমির জেলেনস্কিও। তিনি বলেন, দুঃখজনকভাবে এসব হামলায় অনেকে হতাহত হয়েছেন। রাশিয়ানরা আমাদেরকে ধ্বংস এবং পৃথিবী থেকে মুছে ফেলতে চাইছে। রাশিয়ার তরফ থেকে এখনও এ হামলা নিয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি। কিয়েভে হামলা থামলেও আরও মিসাইল ও ড্রোন হামলা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ইউক্রেন। সেখানে একটানা সাইরেন বাজানো হচ্ছে। কিয়েভ এতদিন বেশ নিরাপদ ছিল। এমনকি কিয়েভের কেন্দ্রে এর আগে কখনই হামলা হয়নি।
ঐ হামলায় বেশ কয়েকটি গাড়িতে আগুন লেগে পুড়ে গেছে। এছাড়া বন্ধ করে দেয়া হয়েছে কিয়েভের সাবওয়ে সেবাও। সকল আন্ডারগ্রাউন্ড স্টেশন শেল্টার হিসেবে কাজ করছে। গেরাশেঙ্কো পরে আবার দাবি করেন, এই হামলায় এখন পর্যন্ত ৫ বেসামরিক নিহত এবং ১২ জন আহত হয়েছেন।
এছাড়া হামলার পর কিয়েভের প্রধান তারাস শেভচেঙ্কো ইউনিভার্সিটির ভবনের জানালা উড়ে গেছে। ইউক্রেনের ন্যাশনাল গার্ড সৈন্যরা সম্পূর্ণ যুদ্ধের সরঞ্জামে এবং অ্যাসল্ট রাইফেল নিয়ে কিয়েভের একটি শিক্ষা ইউনিয়ন ভবনের বাইরে অবস্থান নিতে দেখা যায়।
বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ