গাজীপুরঢাকাবাংলাদেশবিএনপিরাজনীতি

গাজীপুরে পুলিশ ও বিএনপি সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৩৫ জন আহত

গাজীপুরে পুলিশ ও বিএনপির নেতা–কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষে ৪ পুলিশ সদস্যসহ ৩৫ জন আহত হয়েছেন। সোমবার বিকেলে এ ঘটনা ঘটে। দেশের বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের হত্যা ও হয়রানির প্রতিবাদে জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে শোকমিছিল বের করলে পুলিশ লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ করে। এতে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যায়। এ ঘটনায় ১২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।

পুলিশ বলছে, বিএনপির সভায় কোনো বাধা সৃষ্টি করা হয়নি। কিন্তু সভা শেষ করে সড়কে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে নেতা–কর্মীরা শোকমিছিল করতে যান। তাঁদের নিষেধ করলে পুলিশকে লক্ষ্য করে তাঁরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করেন। পরে কয়েক রাউন্ড কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা করে তাঁদের ছাত্রভঙ্গ দেওয়া হয়।

সংঘর্ষে আহত নেতা–কর্মীদের মধ্যে ১৬ জনের পরিচয় পাওয়া গেছে। এরা হলেন কালীগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সদস্য জাকির হোসেন, কালিয়াকৈর উপজেলা যুবদল নেতা শাহ আলম, যুবদল নেতা মনিরুজ্জামান, লতিফ হায়দার, কালিয়াকৈর উপজেলা যুবদল কর্মী জাকির হোসেন, জহিরুল ইসলাম, কামরুজ্জামান, নাজমুল ইসলাম, শাহাবুদ্দিন, আবির হোসেন, সোহেল মিয়া, মহিদ হোসেন, বুলবুল আহমেদ, আরিফ হোসেন, ইব্রাহীম হোসেন, হাফিম মোস্তাফিজ।সংঘর্ষে আহত পুলিশ সদস্যরা হলেন এসআই উৎপল, কনস্টেবল কামরুল ইসলাম, মনির হোসেন ও মো. সাব্বির।

নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধি ও সরকারের অনিয়ম–দুর্নীতির প্রতিবাদে বিএনপির সমাবেশে পুলিশের গুলিতে ও আওয়ামী সন্ত্রাসীদের হামলায় আবদুর রহিম, নূরে আলম, শাওন প্রধান, শহিদুল শাওন, আবদুল আলীমের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে সভা ও শোকমিছিলের আয়োজন করা হয়।

গাজীপুর জেলা বিএনপির আয়োজনে গাজীপুর জেলা শহরের বিএনপির কার্যালয়ের সামনে গতকাল বিকেল চারটায় এসব কর্মসূচির আয়োজন করা হয়। কর্মসূচিতে সভাপতিত্ব করেন গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল হান্নানের সঞ্চালনায় আয়োজিত শোকসভায় বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল, হুমায়ূন কবির খান, হেলাল উদ্দিন প্রমুখ।

গাজীপুর জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও কেন্দ্রীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী সাইয়েদুল আলম বাবুল বলেন, ‘পূর্বঘোষিত গাজীপুর জেলা বিএনপির শান্তিপূর্ণ শোকমিছিলে পুলিশের হামলা, এলোপাতাড়ি গুলি ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ খুবই দুঃখজনক। এ ধরনের ঘৃণ্য কাজের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

প্রত্যক্ষদর্শী ও বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গাজীপুর শহরের রাজবাড়ী সড়কের জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে বিকেল চারটায় আলোচনা শুরু হয়। বিকেল পৌনে পাঁচটায় সভা শেষ হওয়ার পর শোকমিছিল বের করা হয়।

মিছিল রাজবাড়ী সড়ক প্রদক্ষিণ করার সময় পুলিশ তাঁদের বাধা সৃষ্টি করে। এ সময় সেখানে উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে সেখানে বিক্ষোভ সমাবেশ করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। এ সময়ে কিছু নেতা–কর্মী পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে উভয়ের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।

পরে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ বেশ কয়েকটি কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপ ও লাঠিপেটা শুরু করে। এতে বিএনপির নেতা–কর্মীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। পুলিশের লাঠিপেটা ও কাঁদানে গ্যাসের শেল নিক্ষেপে কমপক্ষে ৩০ থেকে ৩৫ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে গাজীপুরের বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে।

বিএনপির শোকমিছিলে পুলিশের হামলার অভিযোগের বিষয়ে গাজীপুরের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার রেজওয়ান আহমেদ বলেন, ‘গাজীপুর জেলা বিএনপির অনুষ্ঠান ছিল। তারা অনুষ্ঠান সুন্দরভাবে শেষ করে। এতে তাদের কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।

কিন্তু অনুষ্ঠান শেষ করে মিছিল বের করে রাস্তা অবরোধ করলে আমরা বাধা দিতে তারা আমাদের ওপর আতর্কিত হামলা করে। এতে আমাদের চার পুলিশ সদস্য আহত হন। তাঁদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। পরে আমরা নিজেদের রক্ষার জন্য কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট নিক্ষেপ করে তাদের ছত্রভঙ্গ করা হয়েছে।’গাজীপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জিয়াউল ইসলাম বলেন, এখন পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে ১২ জনকে আটক করা হয়েছে। এ ঘটনায় আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button