ঢাবির ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ নেতা কর্মীর জামিন নামঞ্জুর

আজ মঙ্গলবার ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে ম্যাজিস্ট্রেট মাহাবুব আহমেদ এ আদেশে মারধর ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে রাজধানীর শাহবাগ থানায় দায়ের করা মামলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় (ঢাবি) ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আকতার হোসেনসহ ২৪ নেতা কর্মীর জামিন নামঞ্জুর করেছে আদালত।

এদিন আসামিপক্ষে ঢাকা আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি মাসুদ আহমেদ তালুকদার, জীশান মহসীন, খাদেমুল ইসলাম, বিপ্লব পোদ্দার, সরকার নূরে এরশাদ সিদ্দিকী, মো. পারভেজ প্রমুখ আইনজীবী জামিন শুনানি করেন।   অপরদিকে রাষ্ট্রপক্ষ জামিনের বিরোধিতা করেন। শুনানি শেষে বিচারক জামিন নামঞ্জুর করে আদেশ দেন।

গত শনিবার শাহবাগ থানার পুলিশের পক্ষ থেকে ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৪ জন নেতা-কর্মীকে আদালতে হাজির করা হয়। পরে আদালত তাঁদের কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।

গত শুক্রবার বিকেলে ‘আবরার ফাহাদ স্মৃতি সংসদ’-এর ব্যানারে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে বুয়েট ছাত্র আবরার হত্যার তিন বছর পূর্তি উপলক্ষে স্মরণসভার আয়োজন করে ছাত্র অধিকার পরিষদ। সেখানে ছাত্রলীগ হামলা করে তাঁদের ধাওয়া দিয়ে ক্যাম্পাস থেকে বের করে দেয়। হামলায় পরিষদের অন্তত ১৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারামারির ঘটনায় ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দিন ও আমিনুর রহমান ছাত্র অধিকার পরিষদের ২৫ জন নেতা-কর্মী ও অজ্ঞাতনামা ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় দুটি পৃথক মামলা করেন।

গত ৮ অক্টোবর আকতার হোসেনসহ ২৪ জনকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এ সময় মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ-পরিদর্শক মুহাম্মদ আরিফুল হক তপু তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাদের কারাগারে আটক রাখার আবেদন করেন।

হামলার পর গত ৭ অক্টোবর সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজিম উদ্দীন বাদী হয়ে ছাত্র অধিকার পরিষদের ঢাবি শাখার সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ ২৫ নেতাকর্মী ও অজ্ঞাতনামা ১৪০ থেকে ১৫০ জনকে আসামি করে শাহবাগ থানায় দুটি পৃথক মামলা করেছেন। মামলা নম্বর ১৪ ও ১৫ ।

আসামিদের মধ্যে একজনকে ‘পলাতক’ দেখানো হয়েছে, বাকি ২৪ জনকে শনিবার সকাল ৯টা ২০ মিনিটে সিএমএম আদালতে হাজির করা হয়। দুটি মামলার আসামি একই। মামলার অভিযোগ থেকে জানা যায়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থী আবরার ফাহাদ হত্যার তৃতীয় বার্ষিকীতে ঢাবিতে সমাবেশের আয়োজন করে বাংলাদেশ ছাত্র অধিকার পরিষদ।

সেখানে আসামিরা কাউকে কিছু না জানিয়েই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে ক্যাম্পাসকে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করার উদ্দেশ্যে বেআইনিভাবে সমাবেশ থেকে উচ্ছৃঙ্খল বক্তব্য ও স্লোগান দিতে থাকেন। আসামিরা তাদের বক্তব্যে সরকার, সরকার প্রধান ও বিভিন্ন মন্ত্রী, রাজনৈতিক নেতাদের উদ্দেশ্যে কুরুচিকর মন্তব্য করেন। তখন ছাত্রলীগ প্রতিবাদ করলে আসামিরা রড, হকিস্টিক, বাঁশের লাঠি দিয়ে হত্যার উদ্দেশ্যে এলোপাথাড়ি মারধর করেন। এসময় আসামিরা সাড়ে ১০ হাজার টাকা চুরি করে নেন।

যাদের জামিন নামঞ্জুর করেছে তারা হলেন- ঢাবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি আকতার হোসেন, মো. সাদ্দাম হোসেন, মো. তসলিম হোসাইন অভি, আব্দুল কাদের, মো. তরিকুল ইসলাম, মামুনুর রশিদ, নাজমুল হাসান, রাকিব, আরিফুল ইসলাম, আসিফ মাহমুদ, তাওহীদুল ইসলাম তুহিন, এইচএম রুবেল হোসেন, ইউসুফ হোসেন, মিজান উদ্দিন, বেলাল হোসেন, ওমর ফারুক জিহাদ, আবু কাউছার, জাহিদ আহসান, মোয়াজ্জেম হোসেন রনি, সানাউল্লাহ, শাহ ওয়ালিউল্লাহ, মো. রাকিব, সাজ্জাদ হোসেন পারভেজ।

ছাত্র অধিকার পরিষদের গ্রেপ্তার নেতা-কর্মীদের মুক্তির দাবি জানিয়ে গত শনিবার গণ অধিকার পরিষদের সদস্যসচিব নুরুল হকের নেতৃত্বে পল্টন থেকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালত অভিমুখে একটি মিছিল হয়।
আদালতের সামনে পৌঁছানোর পর গণ অধিকারের নেতা নুরুল হক সাংবাদিকদের বলেছিলেন, নেতা–কর্মীদের মুক্তি দেওয়া না হলে তাঁরা স্বেচ্ছায় কারাবরণ করবেন।

Exit mobile version