এক্সক্লুসিভজাতীয়ঢাকাবাংলাদেশ

ঢাকা বিভাগে দেশের সবচেয়ে বেশী লোডশেডিং

বিদ্যুৎ সরবরাহ পরিস্থিতির কিছুটা উন্নতি হলেও থামেনি লোডশেডিং। সারা দেশেই সরকারের পরিকল্পিত লোডশেডিং চলছে। গ্রামে অনেক এলাকায় মানা হচ্ছে না লোডশেডিংয়ের সময়সূচি। তবে ঢাকার বাইরে বড় শহরগুলোতে লোডশেডিংয়ের মাত্রা কিছুটা কমে এসেছে। এখন বিদ্যুৎ না থাকার সবচেয়ে বেশি ভুগছে ঢাকা শহর ও এর আশপাশের মানুষ।

বিতরণ কোম্পানিগুলোকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে একমাত্র সরকারি সংস্থা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি)। পিডিবি সূত্র বলছে, সক্ষমতা থাকলেও জ্বালানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যাচ্ছে না। গ্যাসের অভাবে অর্ধেকের বেশি বিদ্যুৎকেন্দ্র বসে থাকছে।

দেশের বিদ্যুৎ সরবরাহকারী ছয়টি বিতরণ কোম্পানির দায়িত্বশীল কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে এমন পরিস্থিতির কথা জানা গেছে। তাঁরা বলছেন, চাহিদার চেয়ে সরবরাহ কম পাওয়ায় তাঁদের বাড়তি লোডশেডিং করতে হচ্ছে। ঢাকায় গতকাল শ্যামপুর এলাকায় আট ঘণ্টা লোডশেডিংয়ের সময়সূচি দেওয়া হয়েছে আগে থেকেই। অনেক এলাকায় চলছে তিন থেকে চার ঘণ্টার লোডশেডিং।

বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বলেন, পশ্চিমাঞ্চলের বিদ্যুৎ আনা যাচ্ছে না। বিল বকেয়া থাকায় বেসরকারি খাতের তেলভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালানো যাচ্ছে না। তাই ঢাকাতে লোডশেডিং করতে হচ্ছে। তবে পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতে লোডশেডিং নেই।

পশ্চিমাঞ্চলে চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ উৎপাদন পরিস্থিতি ভালো হওয়ায় লোডশেডিং তেমন হচ্ছে না। এতে বড় ভূমিকা রাখছে কয়লাভিত্তিক পায়রা তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র। বরিশাল, খুলনা, রাজশাহী ও রংপুর বিভাগের মানুষ এখন তুলনামূলক স্বস্তিতে আছে। চট্টগ্রাম ও সিলেটে আগের চেয়ে কমেছে লোডশেডিং।

ঢাকার বিদ্যুৎ বিতরণকারী সংস্থা ঢাকা পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানির (ডিপিডিসি) ব্যবস্থাপনা পরিচালক বিকাশ দেওয়ান বলেন, আগের চেয়ে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। বেশির ভাগ এলাকায় লোডশেডিং দুই ঘণ্টায় নামিয়ে আনা হয়েছে। আর ঢাকার আরেক বিতরণ সংস্থা ঢাকা ইলেকট্রিক সাপ্লাই কোম্পানির (ডেসকো) ব্যবস্থাপনা পরিচালক আমির কাউসার আলী বলেন, অনেক কমে এসেছে। দিনের বেলায় দুই ঘণ্টার বেশি লোডশেডিং করতে হচ্ছে না।

তবে চট্টগ্রাম বিভাগের কুমিল্লা অঞ্চলে এখনো বাড়তি লোডশেডিং হচ্ছে। আর ঢাকা শহর, সাভার, কেরানীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর, নারায়ণগঞ্জ, ময়মনসিংহ, নেত্রকোনা এলাকার অধিকাংশ এলাকায় ঘন ঘন লোডশেডিং হচ্ছে।দেশে পরিকল্পিত লোডশেডিং শুরু হয় জুলাইয়ে।

এরপর সেপ্টেম্বরে ঢাকায় সহনীয় হয়ে এলেও অক্টোবরের শুরু থেকে বাড়তে থাকে লোডশেডিং। সাপ্তাহিক ছুটির দিনে কিছুটা কমলেও অন্য দিনগুলোতে লোডশেডিং বেড়ে যায়। মোহাম্মদপুরের বাসিন্দা তামান্না আক্তার বলেন, দিনে রাতে মিলিয়ে পাঁচ থেকে ছয়বার বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে। কোনো সময়ও ঠিক থাকে না। মধ্যরাতের পরও ঘুমের সময় বিদ্যুৎ চলে যাচ্ছে।

বিদ্যুৎ বিতরণ সংস্থার কর্মকর্তারা বলছেন, দিনভর গ্রাহকের অভিযোগ আসতেই থাকে। শিল্পকারখানাতেও বিদ্যুৎ দেওয়া যাচ্ছে না। মানুষের বকা খেতে হচ্ছে। বিদ্যুৎ সরবরাহে হিমশিম অবস্থা। সরবরাহ না পেলে লোডশেডিং দেওয়া ছাড়া তাঁদের কিছু করার নেই।

ঢাকার আশপাশের, বিশেষ করে শিল্প এলাকা নিয়ে স্বস্তিতে নেই দেশের সবচেয়ে বড় বিতরণকারী সংস্থা পল্লী বিদ্যুতায়ন বোর্ড (আরইবি)। এ সংস্থাটির একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, ঢাকার আশপাশে ১২টি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির আওতায় সবচেয়ে বেশি লোডশেডিং দিতে হচ্ছে। গতকাল রোববার বিকেলেও মোট ২৮টি সমিতির আওতায় প্রায় এক হাজার মেগাওয়াট লোডশেডিং দিতে হয়েছে। দিনভর মোটামুটি একই রকম পরিস্থিতি ছিল।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button