জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১২ জেলায় চেয়ারম্যান পদে হেরেছে আওয়ামী লীগ

জেলা পরিষদ নির্বাচনে ১২ জেলায় চেয়ারম্যান পদে হেরেছেন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থীরা। একটিতে জয়ী হয়েছে জাতীয় পার্টি। বাকি ৪৫টিতে জিতেছেন আওয়ামী লীগ প্রার্থী। এর মধ্যে ২৬টিতে আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হন আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী।.

জেলা পরিষদের দ্বিতীয় এ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী ছিলেন ৯২ জন। সদস্য পদে এক হাজার ৪৮৫ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ৬০৩ জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ৫৭টি জেলায় সাধারণ ওয়ার্ড সংখ্যা ৪৪৮, সংরক্ষিত ওয়ার্ড ১৬৬টি। ভোটকেন্দ্র ৪৬২টি ও ভোটকক্ষ ৯২৫টি। মোট ভোটার ছিলেন ৬০ হাজার ৮৬৬ জন। কেবল স্থানীয় সরকারের নির্বাচিত প্রতিনিধিরাই এতে ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন।

তিনটি পার্বত্য জেলা বাদে দেশের ৬১টি জেলায় নির্বাচন হওয়ার কথা থাকলেও দুটি জেলা ভোলা ও ফেনীতে সব পদে বিনাপ্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যাওয়ায় ভোট হয়নি। বাকি দুই জেলা নোয়াখালী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জের নির্বাচন আদালতের নির্দেশে স্থগিত রয়েছে।

এর আগে বড় ধরনের কোনো অঘটন ছাড়াই দেশের ৫৭টি জেলা পরিষদের নির্বাচন সম্পন্ন হয়। আজ সোমবার সকাল ৯টা থেকে একযোগে ভোটগ্রহণ শুরু হয়ে দুপুর ২টায় শেষ হয়। সম্পূর্ণ ইভিএমে অনুষ্ঠিত এ ভোট এক হাজার ৪০০টি ক্লোজ সার্কিট (সিসি) ক্যামেরার মাধ্যমে নির্বাচন ভবন থেকে পর্যবেক্ষণ করে ইসি।

নির্বাচন অত্যন্ত সুষ্ঠু, সুন্দর ও সুশৃঙ্খলভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে দাবি করে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী হাবিবুল আউয়াল।এ নির্বাচনে ভোটের আগেই বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় ২৭ জন চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এ ছাড়া সাধারণ সদস্য পদে ৬৯ জন এবং সংরক্ষিত সদস্য পদে ১৯ জন প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।

জেলা পরিষদ নির্বাচন সন্তোষ প্রকাশ করে সিইসি বলেন, ‘শুরু থেকেই আমরা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করেছি। অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। কোথাও থেকে সহিংসতা-গোলযোগ-গণ্ডগোলের তথ্য আমাদের কাছে আসেনি। কেন্দ্রগুলো থেকে যে তথ্য পেয়েছি, তাতে আমরা সন্তুষ্ট।’ভোটগ্রহণ শেষে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সাংবাদিকদের তিনি এসব কথা বলেন।

গাইবান্ধা উপনির্বাচনের পর জেলা পরিষদের নির্বাচন নিয়ে বেশ সতর্ক ছিল নির্বাচন ইসি। ভোটকেন্দ্রের আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রতিটি কেন্দ্রে কঠোর অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। নির্বাচনে প্রতিটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ মনিটরিং করার জন্য প্রতি ভোটকেন্দ্রে স্থাপিত ঢাকায় পর্যবেক্ষণ করবেন কমিশনার ও ইসির কর্মকর্তারা। তবে নির্বাচনে স্থানীয় এমপি, মন্ত্রী বা প্রভাবশালী ব্যক্তির প্রভাব নিয়ন্ত্রণে সতর্ক থাকা হলেও কোথাও কোথাও ভোটকেন্দ্রে এমপিদের সরব উপস্থিতি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে।

সিসিটিভির মাধ্যমে নির্বাচন পর্যবেক্ষণকে নতুন অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে সিইসি বলেন, ‘আগামীতে এ অভিজ্ঞতা আমাদের সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের সুযোগ করে দেবে। আমরা শুরু থেকেই বলে আসছি, সুষ্ঠু নির্বাচন চাই। ভোটাররা এখন সুষ্ঠুভাবে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারছেন।’

তিনি বলেন, ‘গাইবান্ধা নির্বাচন সিসিটিভির মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করে গুরুতর অনিয়ম লক্ষ্য করেছি। কমিশন বাধ্য হয়ে নির্বাচনটা বন্ধ করে দিয়েছে। সেখান থেকে একটা মেসেজ এসেছে। যেহেতু নির্বাচন সিসি ক্যামেরার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়, তাই অনিয়ম হলে সেটি বন্ধ করে দেওয়া যাবে। আমাদের মনে হয় এর একটি পজিটিভ ইমপ্যাক্ট এই নির্বাচনে পড়েছে।’

Exit mobile version