উন্নয়নএক্সক্লুসিভজাতীয়বাংলাদেশবিদ্যুৎ ও জ্বালানী

আগামী বছরের রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র উৎপাদনে যাবে

পাবনার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের প্রথম ইউনিটের ৭০ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে। আর দ্বিতীয় ইউনিটের কাজ শেষ হয়েছে ৪৮ শতাংশ। আগামী বছরের শেষের দিকে বিদ্যুৎকেন্দ্রটির প্রথম ইউনিট উৎপাদনে যাবে। তবে সেটি থেকে জাতীয় গ্রিডে বিদ্যুৎ কবে যাবে, তা নির্ভর করবে বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) কবে নাগাদ সঞ্চালন লাইন বসাবে।

মঙ্গলবার রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের অগ্রগতি দেখতে এসে প্রকল্প–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা এসব তথ্য জানান। আজ বিদ্যুৎকেন্দ্রের দ্বিতীয় ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল (পারমাণবিক চুল্লি) বসানোর কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে।

দেশের প্রথম এই পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের কাজের অগ্রগতি দেখে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী স্থপতি ইয়াফেস ওসমান। ২০২৩ সালের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে উৎপাদন শুরু হবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমাদের কাজ উৎপাদন করা। যারা ওই বিদ্যুৎ কিনবে, তাদের সঞ্চালন লাইন বসানোর কাজ কতটুকু, এগুলোর ওপরে নির্ভর করবে ওই বিদ্যুৎ কবে জাতীয় গ্রিডে যোগ হবে।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে আজ বুধবার সকাল ১০টার দিকে ভার্চ্যুয়ালি যুক্ত হয়ে রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল বসানোর কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন। এর আগে গত বছরের ১০ অক্টোবর প্রথম ইউনিটের রিঅ্যাক্টর প্রেশার ভেসেল স্থাপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেছিলেন তিনি। বিদ্যুৎকেন্দ্রটি নির্মাণে সহায়তাকারী রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় পারমাণবিক শক্তি করপোরেশনের (রোসাটম) মহাপরিচালক অ্যালেক্সি লিখাচেভ আগামাকীল রূপপুরে উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন।

রূপপুর প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের বিজ্ঞানী ও প্রকল্পের পরিচালক মো. শৌকত আকবর বলেন, প্রকল্প–সংক্রান্ত অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের তুলনায় অবকাঠামোর কাজের অগ্রগতি বেশি হয়েছে। আগামী বছরের অক্টোবরে বিদ্যুৎকেন্দ্রের জ্বালানি ইউরেনিয়াম বাংলাদেশে আসবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমরা নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে কাজ শেষ করতে পারব।’

বসতি পাশে হওয়ায় তেজস্ক্রিয়তা ছড়ানোর ঝুঁকি রয়েছে কি না, সে বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘আমরা পৃথিবীর সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করছি। বিদ্যুৎকেন্দ্র চালু হওয়ার পর তেজস্ক্রিয়তা ছড়াচ্ছে কি না, তা পরিমাপের বিশেষ ব্যবস্থা থাকবে। সে তথ্য নিয়মিত প্রকাশ করা হবে। সুতরাং সাধারণ মানুষের আতঙ্কিত হওয়ার কারণ নেই। এখানে চুল্লির ৩০০ মিটারের মধ্যেই তেজস্ক্রিয়তা থাকবে।’

প্রকল্পের নির্মাণকাজ নির্দিষ্ট সময় ও নির্দিষ্ট বাজেটের মধ্যে শেষ হবে বলে আশাবাদী ইয়াফেস ওসমান। রাশিয়া–ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে প্রকল্প শেষ হতে দেরি হবে কি না, ওই প্রকল্পের জন্য রাশিয়ার কাছ থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধে সমস্যা হবে কি না, সে প্রশ্ন করা হয়েছিল।

জবাবে মন্ত্রী বলেন, তাদের কাছ থেকে নেওয়া ঋণের অর্থ ডলার না রুবল না অন্য কোনো মুদ্রায় পরিশোধ করা হবে, তা নিয়ে রাশিয়া ও বাংলাদেশের আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করছে। বাংলাদেশ সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে এ ব্যাপারে ছাড় দেওয়ার মানসিকতা ও নির্দেশনা রয়েছে।

পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের চারপাশে মানুষের বসতি থাকার নিয়ম নেই। কিন্তু প্রকল্প এলাকার চারপাশে লাগোয়া বসতি আছে—সাংবাদিকেরা এই প্রশ্ন তুললে মন্ত্রী ইয়াফেস ওসমান বলেন, আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থার (আইইএ) প্রতিনিধিরা প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করে গেছেন। তারা এ ব্যাপারে কোনো আপত্তি করেননি।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button