বরিশাল

৯৯৯ নম্বরে ফোন করে পুলিশের সহায়তা চাইলেন চোর

চুরির পর পুলিশকে ফোন দিলেন চোর। জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করে তিনি পুলিশের সহায়তা চাইলেন । পরে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে আসে।বরিশাল সদর উপজেলার চরকাউয়া ইউনিয়নের এআরখান বাজার সংলগ্ন এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে।এতে অবাক হয়েছে পুলিশ। এলাকায় ছড়িয়েছে ব্যাপক চাঞ্চল্য।

ঐ ব্যক্তির নাম মো. ইয়াছিন খাঁ (৪১)। তার বাড়ি ঝালকাঠির নলছিটি উপজেলার ছিলারিশ গ্রামে।তিনি পরিবার নিয়ে বরিশাল নগরীর কালুশাহ সড়ক এলাকার একটি ভাড়া বাসায় থাকতেন। বুধবার বিকালে তাকে চুরি মামলায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়।

পুলিশ জানায়, মো. ইয়াছিন খাঁ একজন চোর। দীর্ঘদিন ধরে এ কাজ করছেন তিনি।বিভিন্ন থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক চুরির মামলা ও অভিযোগ আছে। চুরি করাকেই তিনি পেশা বানিয়েছেন। ঐ টাকায় তার সংসার চলে।

স্থানীয়রা জানান, চরকাউয়া ইউনিয়নের এআরখান বাজারের ঝন্টু হাওলাদারের মুদি দোকানের ভেতর থেকে বন্দর থানা (সাহেবেরহাট) পুলিশ এক ব্যক্তিকে উদ্ধার করে। ওই সময় স্থানীয় কেউ কিছু বুঝে উঠতে পারছিল না।ওই ব্যক্তি কীভাবে তালাবদ্ধ দোকানে ঢুকেছে। কেনই বা পুলিশ তাকে উদ্ধারের জন্য এসেছে। তবে কিছুক্ষণের মধ্যে সবকিছু স্পষ্ট হয়।

তারা জানান, উদ্ধারের পর ঐ ব্যক্তি পুলিশকে জানান, চুরির উদ্দেশ্যে তিনি ভোররাতে ঝাপের তালা ভেঙে দোকানে ঢুকেছিলেন। কিন্তু মালামাল চুরি ও তা নিয়ে যাওয়ার জন্য ব্যাগভর্তি করতে সময় গড়িয়ে সকাল হয়ে যায়। দোকানের সামনে লোকজনের আনাগোনা বেড়ে যায়। তখন আর দোকান থেকে মালামাল নিয়ে পালানোর সুযোগ ছিল না। আর ধরা পড়লে জনতার হাতে মারধরের শিকার হবেন, এমন আশঙ্কা থেকে ৯৯৯-এ কল করে সহায়তা চেয়েছেন।

বন্দর থানার (সাহেবেরহাট) ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আসাদুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে বলেন, ‘আটক মো. ইয়াছিন খাঁ সকালে জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে জানান, তিনি খুব বিপদে পড়ছেন। তাকে যেন দ্রুত পুলিশ এসে উদ্ধার করে। এসময় তাকে কনফারেন্সে রেখে ৯৯৯ থেকে বন্দর থানার (সাহেবেরহাট) ডিউটি কর্মকর্তাকে জানানো হয়- সম্মানিত একজন সিটিজেন বিপদে পড়েছেন। তাকে দ্রুত উদ্ধারের ব্যবস্থা নেন। এসময় কনফারেন্সে থাকা ইয়াছিন খাঁ তাকে কোথা থেকে উদ্ধার করার প্রয়োজন সেই ঠিকানা জানান। কিন্তু চুরি করতে গিয়ে আটকে পড়েছেন, এ বিষয়ে ৯৯৯ বা ডিউটি কর্মকর্তাকে কিছুই বলেননি ইয়াছিন খাঁ। ’

তিনি বলেন, থানা থেকে আমাকে বিষয়টি জানানো হলে দ্রুত ঘটনাস্থলে একদল পুলিশ পাঠানো হয়। পুলিশ সদস্যরা গিয়ে দোকানের ভেতর থেকে তাকে উদ্ধার করেন। তাকে উদ্ধারের সময় দোকানের মালামাল তছনছ করা ছিল। দোকানের দামি মালামাল ব্যাগে ভর্তি করা হয়েছিল। তার ওপর পুলিশের সন্দেহ হচ্ছিল।

এরপর দোকান থেকে বের হতে তার অসুবিধা কোথায় জানতে চাইলে পুলিশ সদস্যদের ইয়াছিন খাঁ বলেন, চুরির মালামাল গুছিয়ে ব্যাগ ভর্তি করতে তার বেশি সময় লেগেছে। সময় গড়িয়ে সকাল হয়ে গেছে। লোকজন দোকানের পাশে অবস্থান করছিল। এ অবস্থায় সেখান থেকে বের হলে, তার রক্ষা হতো না। তার জীবনের ঝুঁকি ছিল। তার এসব কথা শুনে উদ্ধার করতে যাওয়া পুলিশ সদস্যরা কিছুটা অবাক হয়েছেন। পরে তাকে একটি চুরি মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়,’- বলেন ওসি।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button