ইউরোপবিশ্ব সংবাদ

লিজ ট্রাসের পদত্যাগের ঘোষণায় যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে গভীর সংকট

দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র দেড় মাসের মাথায় পদত্যাগের ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাস। এর মধ্য দিয়ে দেশটির ইতিহাসে সবচেয়ে কম মেয়াদের প্রধানমন্ত্রী হলেন তিনি। লিজ ট্রাসের পদত্যাগের ঘোষণা যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে গভীর সংকট তৈরি করেছে। নজিরবিহীন এ পরিস্থিতিতে এক বছরে তৃতীয় দফা প্রধানমন্ত্রী নির্বাচন করতে হচ্ছে ব্রিটিশদের।

জ্বালানির মূল্যবৃদ্ধি ও মূল্যস্ফীতিতে টালমাটাল অর্থনীতি সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে যুক্তরাজ্যের সরকার। এমন পরিস্থিতিতে গতকাল লিজ ট্রাস বলেছিলেন, তিনি একজন যোদ্ধা। কিন্তু নিজের দল কনজারভেটিভ পার্টি, পার্লামেন্ট ও সরকারের মধ্যে বিশৃঙ্খলার কারণে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন তাঁর পক্ষে আর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করা সম্ভব না। শেষমেশ নিজেই আজ বৃহস্পতিবার সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিলেন ট্রাস।

লিজ ট্রাস বিপদে পড়তে যাচ্ছেন, সেটির আঁচ কয়েক দিন ধরেই পাওয়া যাচ্ছিল। নিজের গদি বাঁচানোর জন্য সম্প্রতি ঘনিষ্ঠ মিত্র ও অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ারতেংকে দায়িত্ব থেকে সরিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। এরপর গতকাল পদত্যাগ করেন তাঁর সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুয়েলা ব্রেভারম্যান। তাঁর পদত্যাগে প্রধানমন্ত্রী লিজ ট্রাসের ওপর চাপ বাড়বে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছিল।

এ অবস্থায় আধুনিক সময়ে এসে যুক্তরাজ্যের রাজনীতিতে দ্রুত পটপরিবর্তন ঘটছে। এখন প্রশ্ন হলো কনজারভেটিভ পার্টি নতুন নেতা নির্বাচন করতে নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে সাধারণ নির্বাচন এড়াতে পারে কি না।

নতুন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর গত ২৩ সেপ্টেম্বর বড় ধরনের কর ছাড়ের ঘোষণা দেন তৎকালীন অর্থমন্ত্রী কাওয়াসি কোয়ারতেং। বলা হয়েছিল, এটা ৫০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ কর ছাড়। সংক্ষিপ্ত ওই বাজেট ঘোষণার পর যুক্তরাজ্যের মুদ্রাবাজারে অস্থিরতা দেখা দেয়। কনজারভেটিভ পার্টির মধ্যেও ব্যাপক ক্ষোভ তৈরি হয়। পদত্যাগের মধ্য দিয়ে তারই মাশুল গুনলেন লিজ ট্রাস।

ট্রাস জানিয়েছেন, পদত্যাগের ঘোষণা দেওয়ার আগে আজই দলের ‘১৯২২ কমিটির’ চেয়ারম্যান স্যার গ্রাহাম ব্র্যাডির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। সেখানে আগামী সপ্তাহের মধ্যে দলের নেতা ও পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনের বিষয়ে তাঁরা একমত হয়েছেন। সে পর্যন্ত দায়িত্বে থাকবেন বলে জানিয়েছেন লিজ ট্রাস।

করোনা বিধিনিষেধের মধ্যে বাসায় পার্টি করাসহ নানা কেলেঙ্কারিতে জড়িয়ে যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর পদ ছাড়তে বাধ্য হয়েছিলেন বরিস জনসন। বরিস সরকারের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস কনজারভেটিভ পার্টির সদস্যদের ভোটে দলীয় নেতা নির্বাচিত হন। গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব নেন তিনি।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button