অপরাধ

সামান্য মোবাইলের জন্য প্রান গেল মেরিন ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাতের

গত শনিবার সন্ধ্যায় হাঁটতে বেরিয়েছিলেন মেরিন ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাত হোসেন মজুমদার।অনেক রাত হয়ে গেলেও বাসায় ফেরেননি,এরপর পুলিশ কে জানানো হলে অনেক খোঁজাখুঁজির পরে গভীর রাতে লেকের রবীন্দ্র সরোবরের পাশে পাওয়া যায় তার ক্ষতবিক্ষত লাশ।

মেরিন ইঞ্জিনিয়ার শাহাদাত হোসেন মজুমদার বিদেশি জাহাজ কোম্পানিতে চাকরি করতেন। সমুদ্রপথে ঘুরে বেড়াতেন বিভিন্ন দেশে। সর্বশেষ গত আগস্টে যুক্তরাষ্ট্র থেকে দেশে আসেন ছুটিতে। এরপর নিয়ম করেই হাঁটতেন ধানমন্ডি লেক রবীন্দ্র সরোবরে।

শাহাদাত গ্রিনরোড এলাকার ভূতের গলির বাসায় স্ত্রী আজমেরী সুলতানা শিউলি, দুই মেয়ে শামিয়া তুজ জোহা ও সাবিহা তুজ জোহা এবং ছেলে সাদমান সাবিককে নিয়ে থাকতেন। বড় মেয়ে শামিয়া এবার এসএসসি পরীক্ষা দিয়েছে, অন্য ছেলেমেয়ে সপ্তম শ্রেণিতে পড়ে।

প্রাথমিকভাবে পুলিশ কর্মকর্তারা মনে করছেন, ছিনতাইকারীদের হাতে খুন হতে পারেন শাহাদাত। তার মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ পাওয়া যায়নি। ধারণা করা হচ্ছে, এগুলো ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দেওয়ায় তাকে ছুরিকাঘাত করে হত্যা করা হতে পারে। তবে সব বিষয় মাথায় রেখেই চলছে তদন্ত।

পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, এরই মধ্যে মো. হৃদয় নামে এক তরুণকে আটক করা হয়েছে। তাকে ছিনতাই ও খুনে জড়িত বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। হৃদয়ের নামে আরও অন্তত পাঁচটি ছিনতাইয়ের মামলা রয়েছে। তবে ঘটনায় একাধিকজন জড়িত বলে ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগের (ডিবি) এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন।

স্বজনরা জানান, শাহাদাত প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টার দিকে ধানমন্ডি লেকের পাড়ে হাঁটতেন। শনিবার রাত ১২টায়ও না ফেরায় তার খোঁজ পড়ে। রাত আড়াইটার দিকে পুলিশ জানায়, রবীন্দ্র সরোবরের পাশে এক ব্যক্তির লাশ পড়ে আছে। তখন সেখানে গিয়ে তার রক্তাক্ত দেহ পাওয়া যায়।

গতকাল দুপুরে শাহাদাতের বাসায় গিয়ে হৃদয়বিদারক দৃশ্য দেখা যায়। সেখানে তার স্ত্রী—সন্তানরা বিলাপ করছিলেন।বিলাপ করে শাহাদাতের স্ত্রী আজমেরী সুলতানা শিউলি বলেন, পুলিশ তাদের বলেছে, ছিনতাইকারীরা ফোন ছিনিয়ে নেওয়ার সময় তার স্বামীকে মেরে ফেলেছে। মোবাইল ফোনটাই কাল হয়েছে।

তিনি বলেন, শাহাদাত একটা কম দামি ফোন চালাত। গত জুনে একবার দেশে এলে সন্তানরা জোরাজুরি শুরু করে দামি ফোন ব্যবহারের জন্য। ওই সময় দামি ফোনটি কেনা হয়।

কাঁদতে কাঁদতে ছেলে সাদমান সাকিব জানায়, তার বাবা চার দিন পরই কর্ণফুলী জাহাজে কর্মস্থলে চলে যাওয়ার কথা ছিল। তার আগেই বাবাকে খুন করে ফেলেছে।

ধানমন্ডি থানার ওসি ইকরাম আলী মিয়া জানান, তারা ধারণা করছেন, মোবাইল ফোন ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার সময় বাধা দেওয়ায় ছিনতাইকারীরা শাহাদাতকে খুন করেছে। ঘটনাস্থলের অদূরেই একটি ছুরি পড়ে ছিল।

পুলিশ জানায়, ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে শাহাদাতের মরদেহ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। তার গ্রামের বাড়ি চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলায়। বাবার নাম আবদুল বারী মজুমদার। দুই ভাই দুই বোনের মধ্যে শাহাদাত ছিলেন ছোট।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button