বরিশালভোলা

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে বিদ্যুৎহীন পুরো ভোলা জেলা

আন্দামান সাগর হয়ে বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপে সৃষ্ট ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ভোলার দক্ষিণের চরপাতিলা, ঢালচর ও কুকড়িমুকড়ি পানির নিচে ডুবে যাচ্ছে। বিদ্যুৎহীন অবস্থায় রয়েছে পুরো ভোলা জেলা।গতকাল সকাল থেকে হালকা বৃষ্টিপাত থাকলেও আজ দুপুর ১২টার পর থেকে বৃষ্টি ও বাতাস বেড়েছে বহুগুণ।

পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম জানিয়েছেন বিদ্যুৎ বন্ধ রয়েছে পুরো ভোলাজুড়ে। সকলকে নিরাপদে যেতে জেলা শহরেও মাইকিং করছে জেলা প্রশাসন। ঢাল চর কুঁকড়িমুকড়ি জহিরুদ্দিনের মানুষদের আশ্রয়ের জন্য সকল তদন্ত কেন্দ্র খুলে দেয়া হয়েছে।

চরফ্যাশনের বাসিন্দা মো. কবির হোসেন জানিয়েছেন, জোয়ারের আগেই ডুবে গেছে চরপাতিলা। কুকড়িমুকড়ির রাস্তার ওপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হওয়ায় এবং ঝড়ে গাছ উপড়ে পড়ে যাতায়াত বন্ধ হয়ে গেছে। এতে চরবাসীদের উদ্ধার করে সরিয়ে আনার কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে। মনপুরা উপজেলার নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে।

ঝড়ো বাতাস এভাবে চলতে থাকলে আরো নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। নদী ও সাগরের মাঝখানের দুর্গম চরাঞ্চল থেকে লোকদের সরিয়ে আনার কথা বললেও এখনো চরের মধ্যেই অরক্ষিত রয়েছে সেখানকার মানুষজন। এদিকে চর জহিরুদিন, দক্ষিণ আইচা, ঢালচর, কাকড়িমুকড়ি, চর ডেম্পেয়ার ও মনপুরায় সিডেক এ বেড়িবাঁধ না থাকায় সেখানকার মানুষ আতংকে রয়েছেন।

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবিলায় জেলা প্রশাসক সম্মেলন কক্ষে জেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

সভায় জেলা প্রশাসক মো. তৌফিক-ই-লাহী চৌধুরী জানান, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং মোকাবেলায় জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। সকল সরকারি দপ্তরের কর্মকর্তা-কর্মচারিদের কর্মস্থলে থাকতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। ইতোমধ্যে জেলার ৭৪৬টি আশ্রয় কেন্দ্র ও এক হাজার ৩০৬টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রস্তুত করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে। জেলার সাত উপজেলায় খোলা হয়েছে ৮টি কন্ট্রোল রুম। ১৩ হাজার ৬০০ জন ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচি (সিপিপি) স্বেচ্ছাসেবক প্রস্তুত রয়েছে। জেলার ৭০টি ইউনিয়ন ও সাতটি উপজেলায় একটি করে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে এবং জেলার বিচ্ছিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের নিরাপদ আশ্রয়ে আনার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। দুর্যোগকালীন সময়ে আশ্রয় কেন্দ্রে অবস্থান নেয়া মানুষদের জন্য শুকনো খাবারের প্যাকেট প্রস্তুত করা হচ্ছে।

ভোলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. হাসানুজ্জামান জানান, ভোলার মেঘনা- তেঁতুলিয়া নদীর পানি স্বাভাবিক রয়েছে। ভোলায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের ৩০০ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ রয়েছে। এগুলোর ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলো ইতোমধ্যে মেরামত করা হয়েছে। তারপরও সকল কর্মকর্তাদের বিভিন্ন পয়েন্টে পাঠানো হয়েছে। যাতে করে ঘূর্ণিঝড়ে কোনো বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হলে সাথে সাথে তা মেরামত করা যায়।

বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) ভোলা নদী বন্দরের উপ-পরিচালক মো. শহীদুল ইসলা জানান, ভোলার নদী বন্দরগুলোকে ৭ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button