রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগের শিকার নগরবাসী

ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পানিবন্দি হয়ে দুর্ভোগের শিকার হয়েছেন নগরবাসী। বিভিন্ন এলাকার অলি-গলিতে জমেছে হাঁটু পানি। পাশাপাশি অনেকের ঘরে ঢুকে গেছে এই পানি।
তল্লাবাগের বাসিন্দা গণমাধ্যমকর্মী আফরিদা হিমিকা থাকেন ভবনের নিচতলায়। দিনভর বৃষ্টিতে বাড়ির সামনের সড়কে পানি জমলেও রাতে রাস্তা গড়িয়ে পানি ঢুকে পড়েছে তার ঘরে। তিনি বলেন, দরজা দিয়ে অনবরত পানি ঢুকছে। বাধ্য হয়ে মালামাল উঁচুস্থানে তুলেছি। কিছু মালামাল এরই মধ্যে নষ্ট হয়েছে। এমন একটা অবস্থা, খাটে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র তো দূরের কথা ঘুমানোর জায়গাও নেই।
আজ সকাল থেকে রাজধানীর ধানমন্ডি ২৭, পূর্ব তেজতুরী বাজার, মোহাম্মদপুরের নবদয় হাউজিং, নবদয় বাজার, হাউজিং লিমিটেড এলাকা পানিতে তলিয়ে রয়েছে। বকশিবাজার, লালবাগ, শংকর, শুক্রাবাদ, তল্লাবাগ, মহাখালি রাজাবাজারসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় রয়েছে জলাবদ্ধতা।
ধানমণ্ডির বাসিন্দা ফারিজা বলেন, ঘরে পানি ঢুকেছে দুপুরের পরই। বাইরে পানি, ভেতরে পানি। আমরা যাব কই?টানা বৃষ্টির কারণে মহাখালী, শান্তিনগর, খিলগাঁও, শ্যামপুর, উত্তরখান, মিরপুর, বনশ্রী, বসুন্ধরা, খিলক্ষেত, এয়ারপোর্টসহ বিভিন্ন স্থানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। এসব এলাকার বাসিন্দাদেরও ভোগান্তি নিয়ে চলতে হচ্ছে।
সকালে রাজধানীর বাড্ডা এলাকায় দেখা যায়, শিক্ষার্থী, অফিসগামী এবং কর্মজীবী মানুষরা গন্তব্যে যেতে চরম ভোগান্তির মধ্যে পড়েছেন। গলিতে পানি জমে থাকায় মূল সড়কে আসতে তাদের রিকশায় ভর করতে হচ্ছে। আর এ সুযোগে রিকশাচালকরা বেশি ভাড়া হাঁকচ্ছেন বলে অভিযোগ করা হয়েছে।
রিকশা না পাওয়া কিংবা রিকশায় না আসা অলি-গলির মানুষদের। তাদেরকে এক হাতে ছাতা, অন্যহাতে জুতা; কেউ কেউ এক হাতে জুতা, অন্যহাতে হাঁটু পর্যন্ত কাপড় উঠিয়ে ধীরে ধীরে রাস্তা পার হচ্ছেন।এমন অবস্থাতেই হাঁটু সমান পানি মারিয়ে মানুষ জীবিকার তাগিদে ঘর থেকে বের হচ্ছেন। এতে ভিজে একাকার হয়ে যাচ্ছেন ঘরের বাইরে আসা এসব এলাকার মানুষ। কেউ আবার রিকশার সিটের ওপরে বসে, কেউবা ভ্যানে করে কোনোভাবে পানি পার হচ্ছেন।
ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন জানিয়েছেন, ডিএনসিসির ১০টি অঞ্চলেই জলাবদ্ধতা দূর করার জন্য সোমবার (২৪ অক্টোবর) থেকেই একাধিক টিম কাজ করছে।এর আগে, সোমবার রাতে প্রচণ্ড বেগে উপকূলে আছড়ে পড়ে রীতিমতো তাণ্ডব চালায় ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং। অবশ্য রাতেই এটি দুর্বল হয়ে স্থল নিম্নচাপে পরিণত হয়।