আওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভজাতীয়বরিশালবাংলাদেশবিএনপিরাজনীতি

বরিশালে ৫ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে উত্তেজনা

বরিশালে ৫ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশকে ঘিরে হঠাৎ করেই উত্তেজনা বাড়ছে। গতকাল সোমবার রাতে বরিশাল নগরের ৩০টি ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা একযোগে মিছিল-সমাবেশ করার পর উত্তেজনা ছড়ানোর আভাস পাওয়া যাচ্ছে।

সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) বরিশাল মহানগর কমিটির সাধারণ সম্পাদক রফিকুল আলম বলেন, ৫ নভেম্বর বরিশাল নগরে বিএনপির বড় জমায়েতকে ঘিরে আওয়ামী লীগের এ ধরনের কর্মসূচি সংঘাত ও অস্থিরতাকে অনিবার্য করে তুলতে পারে। দুই পক্ষেরই এ জন্য পরস্পরের প্রতি সহিষ্ণু ও সংযত হওয়া প্রয়োজন। ক্ষমতাসীন দল হিসেবে আওয়ামী লীগের এ ক্ষেত্রে বেশি ভূমিকা রাখা উচিত।

আওয়ামী লীগের নেতারা বলেছেন, ১১ নভেম্বর ঢাকায় যুবলীগের মহাসমাবেশ হবে। এ ছাড়া ২৪ ডিসেম্বর আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন এবং আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে দল গোছানো, নেতা-কর্মীদের সংগঠিত করার জন্য সারা দেশেই সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড বাড়ানো হয়েছে। বিশেষ করে ঢাকায় যুবলীগের মহাসমাবেশ সফল করতে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত বরিশাল নগরের ৩০টি ওয়ার্ডে ধারাবাহিক মিছিল ও সমাবেশ করা হবে।

তবে বিএনপির নেতারা বলছেন, ৫ নভেম্বর বিএনপির বিভাগীয় গণসমাবেশের জনস্রোত রুখতে আওয়ামী লীগ এই কৌশল নিয়েছে। মানুষ যাতে সমাবেশে যোগ না দেয়, সে জন্য আতঙ্ক সৃষ্টি করতে দলের ক্যাডারদের দিয়ে আগাম মহড়া, পথে পথে বাধা, মারধর, নির্যাতনের পথে এগোচ্ছে।

চট্টগ্রাম, ময়মনসিংহ, খুলনা ও সবশেষ রংপুরে এটা করেছে। একইভাবে বাস, ট্রাক, ট্রেনসহ সব ধরনের পরিবহন বন্ধ করে দিয়েছিল। কিন্তু তাতে কোনো ফল হয়নি। মানুষের বাঁধভাঙা স্রোত ঠেকানো যায়নি।বরিশাল মহানগর বিএনপির নেতারা দাবি করেছেন, তাঁদের গণসমাবেশের আগে মহানগর আওয়ামী লীগের ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে মিছিল-সমাবেশের এমন কর্মসূচি আওয়ামী লীগের ধারাবাহিক ষড়যন্ত্রের অংশ ছাড়া কিছুই নয়।

মহানগর আওয়ামী লীগের গুরুত্বপূর্ণ দুই নেতা বলেছেন, বিএনপি দেশের বিভাগীয় শহরগুলোয় গণসমাবেশ করে মাঠ দখলে নেওয়ার চেষ্টা করছে। দলটি এর মাধ্যমে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের মনোবলে চিড় ধরানোর কৌশল নিয়েছে। একই সঙ্গে আওয়ামী লীগের জনপ্রিয়তা হ্রাস পেয়েছে বলে দেশে-বিদেশে প্রমাণ করতে চাইছে।

এটাকে একটি রাজনৈতিক অপকৌশল বলে মনে করছেন তাঁরা। বিএনপির এই অপকৌশল রোধের জন্যেই তাঁরা মাঠে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। এ জন্য ৯ নভেম্বর পর্যন্ত প্রতিদিন সন্ধ্যায় নগরের ৩০টি ওয়ার্ডে মিছিল-সমাবেশ করার জন্য মহানগর আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

বিএনপির মহাসমাবেশ ঘিরে যানবাহন বন্ধের নানা পদক্ষেপ ও কৌশল নিয়ে বরিশাল মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক মনিরুজ্জামান খান বলেন, ‘বাস চলাচল বন্ধের পর তিন চাকার যান বন্ধ করেছে। এরপর একে একে ভাড়ায়চালিত মোটরসাইকেল, মাইক্রোবাস, ট্রাক, লঞ্চ, রিকশা, নৌকাও বন্ধ করবে। এসব মাথায় নিয়েই আমরা মাঠে নেমেছি। জনগণকে ঠেকানো যায়নি, যাবেও না। মানুষ সাঁতরে হলেও গণসমাবেশে যোগ দেবে।’ এসব ঘটনা আওয়ামী লীগের আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি প্রমাণ করে বলে তিনি মন্তব্য করেন।

বরিশাল নগরে আওয়ামী লীগের এই কর্মসূচির সঙ্গে বিএনপির সমাবেশের কোনো সম্পর্ক নেই উল্লেখ করে মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এ কে এম জাহাঙ্গীর বলেন, ‘বিএনপির গণসমাবেশ নিয়ে আমাদের কোনো ধরনের মাথাব্যথা নেই। ঢাকায় যুবলীগের মহাসমাবেশ হবে। সেখানে আমরা বরিশাল থেকে কয়েক হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে যোগ দেব। তাই নিজেদের সংগঠিত করার জন্য ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে।’

জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তালুকদার মো. ইউনুস বলেন, আওয়ামী লীগের আত্মবিশ্বাসের কোনো ঘাটতি নেই। আর বিএনপির সমাবেশ ব্যাহত করার কোনো ইচ্ছাও নেই। বিএনপি শান্তিপূর্ণ পরিস্থিতিকে ঘোলাটে করতে এ ধরনের অভিযোগ তুলে মাঠ গরম করছে বলে তাঁর অভিযোগ।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button