আওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভজাতীয়বাংলাদেশবিএনপিরাজনীতি

দয়া করে জানাবেন, বিএনপির আমলে গ্যাস–বিদ্যুতের দাম কত ছিল

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ এবং বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদের মধ্যে বাহাস হয়েছে। এই বাহাসে আজ মঙ্গলবার কিছু সময়ের জন্য সংসদে উত্তাপ তৈরি হয়। হারুনের বক্তব্যের প্রতিবাদে হইচই করেন সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা।

আজ সংসদে জ্বালানি ও খনিজসম্পদ এবং বিদ্যুৎ বিভাগের প্রশ্নোত্তর পর্ব ছিল। একটি সম্পূরক প্রশ্নের জবাব দিতে গিয়ে প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিএনপির আমলে গ্যাসের পরিস্থিতির সঙ্গে বর্তমান সময়ের বিভিন্ন তুলনামূলক তথ্য তুলে ধরেন এবং গ্যাস নিয়ে বিএনপি সরকারের নীতির সমালোচনা করেন।

এরপর সম্পূরক প্রশ্ন করতে দাঁড়ান বিএনপির সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ। তিনি বলেন, ‘প্রতিমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে অন্তত ৫০ বার বিএনপি–জামায়াত সরকারের কথা বলেছেন। দয়া করে জানাবেন, বিএনপির আমলে গ্যাস–বিদ্যুতের দাম কত ছিল।’

বিদ্যুৎ খাতে কেন ১৫ বছর ধরে দায়মুক্তি বজায় রাখা হয়েছে প্রশ্ন রেখে হারুন বলেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে যে হরিলুট ও ভয়ানক অব্যবস্থাপনা চলছে, তা নিয়ে এক দিন আলোচনার জন্য সংসদে সময় দেওয়া হোক। বিএনপির সংসদ সদস্যরা দীর্ঘ আলোচনা করবেন।

জাতীয় সংসদে প্রশ্নোত্তর পর্বে হারুন অভিযোগ করেন, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে হরিলুট ও ভয়ানক অব্যবস্থাপনা চলছে। জবাবে নসরুল হামিদ বিএনপির আমলে এই খাতে দুর্নীতির নানা অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, আগামী নির্বাচনের আগে বিদ্যুৎ-জ্বালানি খাতের বিএনপির দুর্নীতির ফিরিস্তি তুলে ধরা হবে।

নসরুল হামিদের উদ্দেশে হারুন বলেন, ‘আপনি ভূতের মুখে রাম নাম গল্প শোনায়েন না। আমি আপনার কাছে স্পষ্টত জানতে চাচ্ছি, বিএনপি সরকার গ্যাসের যে চুক্তি করেছে, সেটা আছে কি না? সেটা সংসদে উপস্থাপন করবেন। বিএনপির আমলে নিত্যপণ্যের দাম কত ছিল, তার উত্তর দিন। শুধু বিএনপি জোট সরকারের সময় এই হচ্ছে, ওই হচ্ছে গল্প শোনাচ্ছেন।’

এ সময় সরকারি দলের সংসদ সদস্যরা হইচই করে হারুনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানান। হারুন বলেন, মানুষ বিদ্যুৎ নিয়ে হাহাকার করছে। বিদ্যুৎ পাচ্ছে না। জ্বালানি উপদেষ্টা বলছেন দিনের বেলা বন্ধ রেখে রাতে বিদ্যুৎ দেওয়া হবে। এ সময় স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী হারুনুর রশিদকে সুনির্দিষ্ট প্রশ্ন করার আহ্বান জানান। তখন হারুন বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রীর কাছে জানতে চান বিএনপি সরকারের সময় গ্যাস, বিদ্যুৎ, চাল–ডালসহ নিত্যপণ্যের দাম কত ছিল?

বিদ্যুৎ প্রতিমন্ত্রী বলেন, খাম্বা কোম্পানি দিয়ে তারেক রহমান যে পরিমাণ লুটপাট করেছে, তার হিসাব সরকারের কাছে আছে। সময় হলে সব বের করা হবে।হারুনের উদ্দেশে নসরুল হামিদ বলেন, ‘নির্বাচন সামনে আসছে তো, প্রস্তুত থাকেন। সব দেখাব।’নসরুল হামিদ বলেন, ‘বিএনপি জোট সরকারের সময় অন্ধকারে ১৭ ঘণ্টা ছিলেন। উনি বিদ্যুতের দামের কথা বলেন। আরে অন্ধকারে থাকার যে খরচ, সেই খরচের কথা বলেন।’

নসরুল হামিদ বলেন, নাইকো মামলা নিয়ে যে পরিমাণ প্রমাণ আমাদের হাতে আছে, তাদের নেতা তারেক জিয়ার বন্ধু এফবিআইয়ের কাছে যে পরিমাণ ওপেন সাক্ষাৎকার দিয়েছেন, সেগুলো আমরা দেখাব। সেই সময় আমি তাঁর (হারুনের) বক্তব্য শুনতে চাই, তিনি কী বলেন। সিদ্ধিরগঞ্জ পাওয়ার প্লান্টে যে পরিমাণ টাকা চুরি করেছে, সেগুলোর প্রমাণপত্র আমাদের হাতে আছে। সেগুলোই ডকুমেন্টসহ সংসদের ভিডিও স্ক্রিনে তাদের দেখাব।’

বিএনপির আমলে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া টঙ্গীতে বিদ্যুৎকেন্দ্র উদ্বোধন করে ঢাকায় ফেরার আগেই সেটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল উল্লেখ করে নসরুল হামিদ বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘আমি জানি না, কোন মুখে আপনারা কথা বলার সাহস করেন। হয়তো লজ্জা–শরম আপনাদের মাঝে নাই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বলত পারব। তথ্য না, শুধু প্রমাণদিসহ।’

নসরুল হামিদ বলেন, বিএনপি আমলে বিদ্যুতে ৪৪ শতাংশ অপচয় ছিল। এটা দুর্নীতির মধ্যে পড়ে। তিন–তিনবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন কি খামোখা হয়েছে তারা। এ সময় পাশ থেকে একজন সংসদ সদস্য বলেন, তিনবার নয়, টানা পাঁচবার, চ্যাম্পিয়ন হয়েছে। তখন প্রতিমন্ত্রী সংশোধন করে বলেন পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন।

নসরুল হামিদ বলেন, ‘কোনো প্রয়োজন নাই চাল, ডাল, গমের কী দাম ছিল। আরে ভাই আপনারা তো খাদ্যই দিতে পারেন নাই। গুলি করে মানুষ মেরেছেন। আবার দামের কথা জিজ্ঞেস করেন! আপনারা বিদ্যুতই দিতে পারেন নাই ১৮ ঘণ্টা। কানসাটে গুলি করে মানুষ মেরেছেন।’

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button