বরিশালবিএনপিরাজনীতি

গণসমাবেশে যোগ দিতে বরিশালে পৌঁছাতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা

আগামী ৪ ও ৫ নভেম্বর ছোট বড় সব ধরনের পরিবহন ধর্মঘট এবং পথে বাধার সম্মুখীন হতে পারার আশঙ্কায় গতকাল বুধবার থেকেই জনসভার মাঠে আসতে শুরু করেছেন নেতাকর্মীরা। আত্মীয়স্বজনসহ সুবিধাজনক স্থানে থাকছেন তারা।আগামী ৫ নভেম্বর গণসমাবেশে যোগ দিতে দূরবর্তী জেলাগুলো থেকে বরিশালে পৌঁছাতে শুরু করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা।

বরগুনা, পটুয়াখালী, ঝালকাঠি, পিরোজপুর ও ভোলা জেলা বিএনপির বিভিন্ন পর্যায়ের নেতারা জানিয়েছেন, লঞ্চ, বাস ও অন্যান্য গণপরিবহন বন্ধ হয়ে গেলেও বিকল্প ব্যবস্থা রেখে প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তারা। এমনকি অনেক জেলা-উপজেলা থেকে দু-তিন দিন আগেই নগরের আশপাশের এলাকায় ও পাশের জেলা, উপজেলায় গিয়ে অবস্থান নিতে পারেন—এমন কৌশলও আছে। ইতোমধ্যে দূরবর্তী জেলার নেতারা বরিশালে আসতে শুরু করেছেন।

বিএনপি নেতারা অভিযোগ করেছেন, লিফলেট বিতরণ করতে গিয়েও বাধার মুখে পড়ছেন। বিভাগীয় গণসমাবেশ ঘিরে বরিশালের ছয় জেলা এবং ৪২ উপজেলায় বিএনপির কার্যালয়গুলোও সরগরম হয়ে উঠেছে। চলছে সমাবেশে যোগদানের প্রস্তুতি, বাধা উপেক্ষা করার কৌশল নির্ধারণ। দিনরাত নেতাকর্মীরা প্রচার ও পথসভায় ব্যস্ত সময় পার করছেন।

বিএনপির প্রশিক্ষণবিষয়ক সম্পাদক এ বি এম মোশাররফ হোসেন বলেন, সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে সমাবেশ সফল করতে বরিশাল বিভাগের নেতাকর্মীরা এখন প্রস্তুত। দূরবর্তী জেলার অনেক নেতাকর্মী ইতোমধ্যে বরিশালে আসা শুরু করেছেন। গণসমাবেশকে ঘিরে যে আগ্রহের সৃষ্টি হয়েছে, তাতে করে তারা কেউ-ই এলাকায় থাকবেন না; পায়ে হেঁটে বা নদী সাঁতরে হলেও তারা গণসমাবেশে আসবেন।

গতকাল বুধবার বিএনপির মিডিয়া সেলের আহ্বায়ক জহির উদ্দিন স্বপন বলেন, ভোলার চরফ্যাশন, বানারীপাড়া, বাকেরগঞ্জ, আগৈলঝাড়া-গৌরনদীসহ বিভাগের বিভিন্ন স্থানে লিফলেট বিতরণের সময় হামলা করা হচ্ছে। কোনো নেতাকর্মী তাদের বাসাবাড়িতে থাকতে পারছেন না।

বরিশাল নগরীর আবাসিক হোটেলগুলোর খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে পুলিশ। হোটেল মালিকরা বলছেন, নতুন করে বোর্ডার বা অতিথি তোলার ক্ষেত্রে প্রশাসন থেকে দিক-নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। তবে পুলিশ বলছে, নিয়মিত তদারকির অংশ হিসেবে নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

কোতোয়ালি মডেল থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আজিমুল করিম বলেন, হোটেল তদারকি আমাদের নিয়মিত কাজের অংশ। হোটেল কর্তৃপক্ষ সঠিকভাবে নিয়ম অনুসরণ করছেন কি না এসব খোঁজখবর নিতেই হোটেলে যাওয়া হচ্ছে।তিনি আরও বলেন, একটি রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে আমাদের নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।

সমাবেশকে সামনে রেখে মিছিল ও স্লোগানে সরগরম হয়ে উঠছে বরিশাল বঙ্গবন্ধু উদ্যান (বেলস পার্ক)। বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকাল থেকেই দলে দলে নেতাকর্মীদের আসা যাওয়া করতে দেখা গেছে।

কাঁঠালিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকির হোসেন কবির হাওলাদার বলেন, পরিবহন বন্ধ হবে বলে আগে থেকেই বরিশালে অবস্থান করছি। প্রয়োজনে রাতে নেতাকর্মীদের নিয়ে মাঠেই থাকব। সমাবেশ সফল করতে আমরা সবকিছুর মুখোমুখি হতে প্রস্তুত আছি।

বরিশাল মহানগর ছাত্রদলের সিনিয়র সহসভাপতি তরিকুল ইসলাম তারেক জানান, গণসমাবেশ উপলক্ষে কেন্দ্রীয় নেতাদের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে সমাবেশস্থল বঙ্গবন্ধু উদ্যানের আশপাশ এলাকাসহ জিলা স্কুল মোড়ে বেশকিছু ব্যানার ও ফেস্টুন টাঙিয়েছিলেন। বুধবার রাতে যে কোনো সময়ে কে বা কারা যেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান এবং তার ছবি সংবলিত ব্যানারগুলো ভেঙে ফেলে।

বৃহস্পতিবার (৩ নভেম্বর) সকালে তার অনুসারীরা বিষয়টি প্রত্যক্ষ করে তাকে অবহিত করেন। এই বিষয়ে ক্ষমতাসীন দলীয় দায়িত্বশীল কোনো নেতার বক্তব্য না পাওয়া গেলেও ব্যানার-ফেস্টুন ভাঙা বা ছেঁড়ার নেপথ্যে বিএনপির অঙ্গসংগঠন ছাত্রদলের কোনো পক্ষ জড়িত থাকার আভাস দিয়েছে একটি সূত্র।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button