আওয়ামী লীগএক্সক্লুসিভজাতীয়ঢাকাবাংলাদেশরাজধানীরাজনীতি

যাকে তাকে বিশ্বাস করা যাবে না,আপন-পর চিনতে হবেঃ শেখ সেলিম

আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম বলেছেন, যাকে তাকে বিশ্বাস করা যাবে না। আপন-পর চিনতে হবে। ভবিষ্যতে বঙ্গবন্ধুর মতো আমাদেরও বিপদ হতে পারে। তাই যাকে তাকে বিশ্বাস করবেন না। অতীত জেনে কাজ করবেন। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগ পরিবারের লোকদের দিয়ে কাজ করাবেন। কেউ আমাদের কাছে ঢুকলো, আর তাকে দিয়ে কাজ করাবেন, এ বিশ্বাস করলে ঠিক হবে না।

নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্য শেখ সেলিম বলেন, খালি স্লোগান দিলে হবে না। সেদিনও স্লোগান দিয়েছিল। বাকশাল যখন তৈরি হয়, তখন বলেছিল বঙ্গবন্ধু যেখানে আমরা আছি সেখানে।বৃহস্পতিবার জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন। রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন দলীয় সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।

জাসদের বিপ্লবী সৈনিক সংস্থা ও গণবাহিনীর কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের উদ্দেশ্য ছিল বঙ্গবন্ধুকে টার্গেট করা। জিয়া বন্দি অবস্থায় কর্নেল তাহেরের সঙ্গে পরামর্শ করে ৭ই নভেম্বর সিপাহী জনতার বিপ্লব করে। জিয়া মুক্ত হয়ে ক্ষমতা দখল করে।

জিয়াউর রহমান মুক্ত হয়ে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী জুলফিকার আলী ভুট্টোর পরামর্শে লিবিয়াতে বঙ্গবন্ধুর খুনিদের আশ্রয়ের ব্যবস্থা করেছিল বলে দাবি করেন তিনি। তাহের ও জিয়াউর রহমানের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব হয় উল্লেখ করে শেখ সেলিম বলেন, কর্নেল তাহেরের শর্ত জিয়াউর রহমান মানে না।

সেই সময় সৈনিকদের বিপ্লব হয়। তাদের স্লোগান ছিল সেনা-জনতা ভাই ভাই, অফিসারের কল্লা চাই। একশ’র বেশি কর্মকর্তাকে হত্যা করে জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করলো। আর ছিল একটা একটা বাকশাল ধর, সকাল বিকাল নাস্তা করো। এসব কথা নেতাকর্মীদের মনে রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধু কবরে চলে গেলেন, কিন্তু একজন লোকও সেদিন বের হলো না। সেদিন প্রশাসনের ১০ জনও বের হলে খুনিরা পালানোর জায়গা পেতো না। তিনি বলেন, ১৫ই আগস্টের মতো আরেক কলঙ্কিত অধ্যায় হচ্ছে ৩রা নভেম্বর। মোশতাক, জিয়া, ফারুক, রশিদ ১৫ই আগস্টে বঙ্গবন্ধু শিশু, নারীসহ একই পরিবারের ১৮ জনকে নির্মমভাবে হত্যা করে।

বঙ্গবন্ধুকে হত্যার মাধ্যমে খুনিরা বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল উল্লেখ করে সেলিম বলেন, ‘কিছুদিন যাওয়ার পরে তাদের মনে হলো জেলখানায় ৪ নেতাকে রাখলে পাকিস্তানের নীলনকশা বাস্তবায়ন করতে পারবে না। সেই জন্য তাদের হত্যা করলো।

তিনি বলেন, বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পরে খুনিরা যখন সেনানিবাসে ঢুকলো, তখন সেনাপ্রধান বা সেনা কর্মকর্তারা বাধা দেয়নি। এর অর্থ হলো- এই হত্যাকাণ্ডের মাধ্যমে কেএম সফিউল্লাহ, জিয়া, খালেদ মোশাররফ, শাফায়েত জামিলসহ সব ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এ হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিল। শুধু তাই নয়, তারা রেডিও স্টেশনে দৌড়ে যায়।

সেখানে গিয়ে মোশতাক সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করে। বঙ্গবন্ধুকে যে ৩২ নম্বরে হত্যা করে ফেলে রেখেছিল, সেই খবর তারা জানে। কিন্তু একজন সেনা কর্মকর্তাও সেখানে যায়নি। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার সামরিক কর্মকর্তাদের মধ্যে ক্ষমতার দ্বন্দ্ব হয়েছিল বলে দাবি করেন শেখ সেলিম।

তিনি বলেন, সেই দ্বন্দ্বের ফল হচ্ছে ৩রা নভেম্বর। সেদিন খালেদ মোশাররফ ক্ষমতা দখল করেন। তিনি জিয়াকে সেনানিবাসে বন্দি করে রাখেন। সাধারণ মানুষের ধারণা হয়েছিল খালেদ মোশাররফ হয়তো বঙ্গবন্ধুর খুনিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু হলো বিপরীত।

তিনি ক্ষমতা দখল করলেন, আর জেলখানায় ৪ নেতাকে হত্যা করা হলো। সেই ঘটনা খালেদ মোশাররফ গোপন রেখেছিলেন বলে দাবি করে শেখ সেলিম বলেন, সেই সময় তিনি বঙ্গভবনে মোশতাক, ফারুক, রশিদদের সঙ্গে বৈঠক করেন। পরে বঙ্গবন্ধু ও ৪ নেতার খুনিদের বিশেষ বিমানে করে ব্যাংককে পাঠিয়ে দিলেন।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button