প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রটোকল অফিসার পরিচয়ে প্রতারণা ও কোটি টাকা আত্মসাৎ

গতকাল সোমবার (৭ নভেম্বর) রাতে রাজধানীর বনানী থেকে জাতীয় নিরাপত্তা গোয়েন্দা সংস্থা (এনএসআই) ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে প্রধানমন্ত্রীর পরিবারের প্রটোকল অফিসারের পরিচয়ে বদলি বাণিজ্য, টেন্ডারবাজি ও প্রতারণার মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ চক্রের মূলহোতা হরিদাস চন্দ্র ওরফে তাওহীদকে এক সহযোগীসহ গ্রেফতার করা হয়।

সোমবার রাতে এনএসআই ও র‍্যাবের যৌথ অভিযানে গ্রেপ্তার হয় চক্রের মূলহোতা হরিদাস চন্দ্র ও তার সহযোগী ইমরান মেহেদি। তাদের কাছ থেকে চারটি মোবাইল ফোন এবং জালিয়াতিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন কাগজপত্র জব্দ করা হয়।বিষয়টি নিয়ে আজ মঙ্গলবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‍্যাবের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন করা হয়।

মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) দুপুরে কারওয়ানবাজার র‍্যাব মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে র‍্যাবের লিগ্যাল অ্যান্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, হরিদাস ওরফে তাওহীদের (৩৪) বাড়ি বগুড়ার শিবগঞ্জে।

হরিদাস ষষ্ঠ শ্রেণিতে অধ্যয়নকালীন ২০০২ সালে ভারতে তার এক আত্মীয়ের কাছে চলে যান। সেখানকার স্থানীয় একটি স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক সম্পন্ন করেন। পরে ২০১০ সালে দেশে ফিরে উত্তরায় পুরাতন এসি কিনে মেরামত করে বিক্রির কাজ শুরু করেন।

র‍্যাবের মুখপাত্র জানান, হরিদাস ২০১৪ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তার একটি ছবি এডিট করে প্রতারণা শুরু করেন। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নাম ব্যবহার করে বা তাদের প্রটোকল অফিসার কিংবা বিভিন্ন মন্ত্রীর ভুয়া এপিএস পদ ব্যবহার করে মানুষের সঙ্গে প্রতারণার মাধ্যমে অর্থ আত্মসাৎ করে আসছেন। ২০১৯ সালে হরিদাস ধর্মান্তরিত হয়ে তাওহীদ ইসলাম নাম ধারণ করেন।

র‍্যাবের মুখপাত্র জানান, হরিদাস ওরফে তাওহীদ তার শ্বশুরের পরিচয়ে ময়মনসিংহের ফুলবাড়িয়া এলাকায় কিছু জমি কেনেন। তার শ্বশুরের মাধ্যমে এলাকার লোকের সঙ্গে একজন বিত্তশালী লোক হিসেবে পরিচিত হন।ঐ জমিতে গড়ে তোলেন ‘প্যারিস সুইমিংপুল এন্টারটেইনমেন্ট পার্ক’ নামে রিসোর্ট। পার্ক করার সময় এলাকার বিত্তশালীদের কাছ থেকে শেয়ারের নামে হাতিয়ে নিয়েছেন বিপুল টাকা। বিভিন্নভাবে প্রতারণা করে অনুমানিক পাঁচ কোটি টাকার মালিক হয়েছেন তিনি।

র‍্যাবের মুখপাত্র আরও জানান, মেহেদির বাড়ি ময়নসিংহের ত্রিশালে। তিনি ছাড়াও এ চক্রে আরও ৫-৬ জন সদস্য রয়েছেন। তাদের নম্বর তাওহীদের মোবাইলে বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নামে সেভ করা থাকে। প্রতারিত ব্যক্তিদের সামনে এসব নম্বরে কল দিয়ে নিজেকে প্রভাবশালী হিসেবে উপস্থাপন করতেন তিনি।

আসামিরাও জিজ্ঞাসাবাদে তাঁদের কৃতকর্মের বিষয়টি স্বীকার করেন। তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান র‍্যাবের মুখপাত্র খন্দকার আল মঈন।

Exit mobile version