এক্সক্লুসিভজাতীয়ঢাকানির্বাচনবাংলাদেশবিএনপিরাজধানীরাজনীতি

আন্দোলন সফল করতে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে বিএনপি নেতা–কর্মীদের শপথ

আন্দোলন সফল করতে প্রয়োজনে মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে নেতা–কর্মীদের শপথ পড়িয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক আমানউল্লাহ (আমান)। আজ বুধবার বিকেলে রাজধানীর ভাটারার ছোলমাইদে আয়োজিত দলীয় এক সভায় নেতা-কর্মীদের তিনি শপথ পাঠ করান।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির ভাটারা, উত্তরা পূর্ব ও পশ্চিম এবং বিমানবন্দর থানা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠনের নেতা-কর্মীদের নিয়ে এ যৌথ কর্মী সভার আয়োজন করা হয়েছিল।এ সময় সভায় উপস্থিত নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে আমানউল্লাহ বলেন, ‘রাজপথে ফয়সালার জন্য, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকার প্রতিষ্ঠার জন্য আগের শহীদদের মতো, আপনারা কি রক্ত দিতে প্রস্তুত আছেন? মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত আছেন? প্রস্তুত থাকলে হাত তোলেন।’

কর্মী সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে আমানউল্লাহ বলেন, “একটাই দাবি আমাদের, এই সরকারের অধীনে আর কোনো নির্বাচন নয়। ফয়সালা হবে রাজপথে। রাজপথ ছাড়া কোনো দিন ফয়সালা হয়নি। বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন থেকে শুরু করে ’৬৯–এর গণ-অভ্যুত্থান, ’৭১–এর মুক্তিযুদ্ধ এবং ’৯০–এর স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলন—সবকিছুরই ফয়সালা রাজপথে হয়েছে। সরকার পতনের এই আন্দোলনেরও রাজপথেই ফয়সালা হবে।”

এরপরে তিনি উপস্থিত নেতা–কর্মীদের শপথ পড়ান। শপথে বলা হয়, ‘আমি আল্লাহর নামে ওয়াদা করছি, হাসিনার পতন ছাড়া, নির্দলীয়-নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া, বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করা ছাড়া, তারেক রহমানকে দেশে না আনা পর্যন্ত এবং বিএনপিকে ক্ষমতায় না আনা পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরব না। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। আমিন।’

দলের নেতাদের সামনে থেকে আন্দোলনে নেতৃত্ব দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আপনারা এক একজন নেতা। আপনাদের শত শত নেতা-কর্মী অনুসরণ করেন। আপনারা যদি পেছন পেছন দৌড় দেন, তাহলে তাঁরাও দৌড় দেবেন। আপনারা সামনে যাবেন না? বীর মরে কতবার, আর কাপুরুষ মরে কতবার? আপনারা আন্দোলন-সংগ্রামে রাজপথে থাকবেন। তখন বিএনপির কোটি কোটি সমর্থক রাস্তায় নামবেন।’

দলের নেতা-কর্মীরা কী চান, জানতে চেয়ে বিএনপি নেতা আমানউল্লাহ বলেন, ‘২০১৪ ও ২০১৮ সালের মতো আওয়ামী লীগ আবার ভোট চুরি ও ডাকাতি করে ক্ষমতায় যাক, এটা কি আপনারা চান? আমরা যদি সেটা না চাই তাহলে আমাদের নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করতে হবে।’

আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে নির্বাচনে অংশ নিলে জয় সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেন তিনি, বিএনপি পায় ৬টি আসন, জাতীয় পার্টি পায় ৩০ আসন। এটি কি মেনে নেওয়া যায়? ডাকসুর সাবেক ভিপি আমানউল্লাহ বলেন, ‘আমি নিজে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন করে চারবার নির্বাচিত হয়েছি। যদি হাসিনার অধীনে নির্বাচন করতাম, তাহলে কি জিততে পারতাম? বিএনপির কেউ পেরেছে?’

গণতন্ত্র পুনরায় উদ্ধারে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে উল্লেখ করে আমানউল্লাহ বলেন, এই আওয়ামী সরকার সারা দেশে হত্যা, গুম, খুন করে। তাদের হাত এখন রক্তে রঞ্জিত। পুরো দেশের মানুষ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। আওয়ামী সরকারের লুটপাটের কারণে দেশের মানুষ দুর্ভিক্ষের মধ্যে পড়েছে। দ্রব্যমূল্য আজ খেটে খাওয়া মানুষের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে। তাই প্রয়োজনে আরেকটি যুদ্ধ করতে হবে।

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সদস্যসচিব আমিনুল হকের সঞ্চালনায় কর্মী সভায় অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আতিকুল ইসলাম, চেয়ারম্যান আতাউর রহমান, এ জি এম সামসুল হক, সাবেক যুবনেতা এস এম জাহাঙ্গীর হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আজিজুর রহমান, মহানগরের সদস্য আব্দুস সালাম সরকার, এ বি এম এ রাজ্জাক, আফাজ উদ্দিন, কাউন্সিলর আলী আকবর, ভাটারা থানা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সেলিম মিয়া, বিমানবন্দর থানা বিএনপির দেলোয়ার হোসেন দিলু প্রমুখ বক্তব্য দেন।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button