এক্সক্লুসিভকিশোরগঞ্জঢাকাবাংলাদেশ

চিকিৎসককে অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড়

কিশোরগঞ্জে একটি কোচিং সেন্টারের কার্যালয় থেকে ডা. মির্জা কাউসার (২৮) নামের এক চিকিৎসককে কালো গাড়িতে করে ‘অজ্ঞাত পরিচয় ব্যক্তিরা’ তুলে নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। গত শনিবার সন্ধ্যা ৭টার দিকে জেলা শহরের সমবায় ভবনের দোতলায় প্রতিষ্ঠিত মেডিক্স কোচিং সেন্টার থেকে ওই চিকিৎসককে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়।

ডা. মির্জা কাউসার কিশোরগঞ্জের প্রেসিডেন্ট আবদুল হামিদ মেডিকেল কলেজের ফার্মাকোলজি বিভাগের প্রভাষক এবং মেডিক্স কোচিং সেন্টারের পরিচালক। তিনি জেলার বাজিতপুর উপজেলার উজানচর এলাকার আবদুল হাকিমের ছেলে। কিশোরগঞ্জ শহরের খরমপট্টি এলাকার একটি বহুতল ভবনের দ্বিতীয় তলায় পরিবার নিয়ে বসবাস করেন।

ঘটনা জানাজানি হওয়ার পর জেলা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে সিসিটিভির ফুটেজ সংগ্রহ করে।কিশোরগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ রাসেল শেখ পিপিএম (বার) জানান, এ ব্যাপারে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো অভিযোগ দেয়া হয়নি। তবে আমরা সিসিটিভি ফুটেজ বিশ্লেষণসহ সবদিক বিবেচনায় নিয়ে তদন্ত করছি। আশা করছি সহসাই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ সম্ভব হবে।

মেডিক্স কোচিং সেন্টারের ম্যানেজার মাহবুব আলম জানান, কোচিং সেন্টারের কার্যালয়ে পাশাপাশি চেয়ারে বসে শনিবার সন্ধ্যায় তিনি এবং ডা. মির্জা কাউসার কাজ করছিলেন। সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিটে ‘অজ্ঞাত পরিচয়’ কয়েকজন লোক এসে ডা. কাউসার কে জানতে চান। এ সময় ডা. মির্জা কাউসার নিজের পরিচয় দিলে তারা তাকে তাদের সঙ্গে যেতে বলেন। কয়েক মিনিট পর তাকে নিয়ে তারা নিচে নামে।

এরপর ডা. কাউসারকে একটি কালো মাইক্রোবাসে উঠিয়ে দ্রুত চলে যায়। পুরো ঘটনাটি সন্ধ্যা ৬টা ৫২ মিনিট থেকে ৭টা ২মিনিটের মধ্যে ঘটে বলেও মাহবুব আলম জানান। মেডিক্স কোচিং সেন্টারের পরিচালক ডা. আব্দুস সাহিদ সুমন জানান, ‘অজ্ঞাত পরিচয়’ ৫-৬ জন লোক ডা. কাউসারকে প্রথমে বারান্দায় ডেকে নিয়ে যান।

সেখানে কিছুক্ষণ কথা বলে তারা ডা. কাউসারকে নিয়ে নিচে নামেন। এ সময় ডা. সুমনও তাদের সঙ্গে নিচে নামেন। নিচে নামার পর কালো রংয়ের একটি হায়াসের ভেতরে থাকা একজন আরেকজনকে জিজ্ঞেস করেন এটাই ডা. কাউসার কিনা? একজন বলেন, ইনিই। পরে কালো গাড়িটির দরোজা খুলে একজন ডা. কাউসারকে ধাক্কা দিয়ে গাড়িতে উঠতে বলেন।

এ সময় ডা. কাউসার ডা. সুমনকে বলেন, সুমন তুমি ডা. নওশাদ স্যারকে ফোন দাও। এ সময় ডা. সুমন ফোন বের করতেই একজন ফোনটি কেড়ে নিয়ে তাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দেন। এ সময় ডা. সুমন কালো গাড়িতে পুলিশের পোশাক পরা একজনকে সামনের সিটে বসে থাকতে দেখেন বলে জানান।

পরে একজন দাড়ি-টুপিওয়ালা ব্যক্তি গাড়ির দরোজা বন্ধ করে দিয়ে গাড়ি চালাতে নির্দেশ দিয়ে সঙ্গে আসা একটি সাদা মাইক্রোবাসে করে তিনিও চলে যান। এরপর কালো গাড়িটি খরমপট্টি বকুল তলার মোড় দিয়ে এগিয়ে আওয়ামী লীগ অফিসের সামনে দিয়ে সোজা গাইটাল বাসস্ট্যান্ড হয়ে ময়মনসিংহ-ভৈরব রোড ধরে বিন্নাটি গিয়ে ডানে মোড় নিয়ে সোজা পাকুন্দিয়ার দিকে চলে যায়। মেডিক্স কোচিং সেন্টারের একটি মোটরসাইকেলে করে দুইজন কালো গাড়িটিকে অনুসরণ করে এসব বিষয় নিশ্চিত হয়।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button