অর্থ ও বাণিজ্যবাংলাদেশরাজধানী

ফুটপাথে বিক্রেতারা গরম পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসলেও মিলছে না ক্রেতার দেখা

ফুটপাথে শীতের পোশাকের ব্যবসায় চলছে মন্দা। করোনা মহামারির পর ফুটপাথের ব্যবসায়ীরা  আশায় ছিলেন এবছর ভালো ব্যবসা হবে। কিন্তু আশানুরূপ  ব্যবসা না হওয়ায় হতাশ তারা। ফুটপাথে বিক্রেতারা গরম পোশাকের পসরা সাজিয়ে বসলেও মিলছে না ক্রেতার দেখা।

শীতের সময় চলে এলেও রাজধানীতে শীতের দেখা নেই। নভেম্বরের মাঝামাঝিতেও চালাতে হচ্ছে ফ্যান। এদিকে মানুষের হাতেও টাকা নেই। এতে করে জমে উঠেনি গরম পোশাকের বেচা-বিক্রি। আগে গরম পোশাকের ব্যবসায় এমনটা হয়নি বলে জানান ব্যবসায়ীরা।

ফার্মফিউ সুপার মার্কেটের সামনের ফুটপাথে বাচ্চাদের গরম কাপড় বিক্রি করতো জলিল। তার কথা- বিক্রি নাই। দাম যত পারছি কমায় দিছি। বাচ্চাদের ফুলপ্যান্ট বিশ টাকা আর ফুল হাতা গেঞ্জি মাত্র পঞ্চাশ টাকা। কেউ তিনটা প্যান্ট নিলে পঞ্চাশ টাকায় দিয়া দেই। এখন বেচতে পারলেই বাঁচি। তারপরও খুব কম বিক্রি হয়। সবকিছুর দাম বাড়ে শুধু গরম কাপড়ের দাম বাড়ে না।

ফুটপাথে সব বয়সী মানুষের শীতের হাত-পা, মোজা, টুপি, মাফলার  বিক্রি করেন  শফিউল।তিনি বলেন, করোনা আমাদের পথে বসায় দিছে, এইবার ভাবছি শীতে ভালো ব্যবসা হবে। কিন্তু রাস্তায় মানুষ আছে ক্রেতা নাই। একে তো ঢাকায় শীত নাই। আবার মানুষের হাতেও টাকা নাই। সবার অবস্থাই খারাপ।

এখন আর শখ কইরা কেউ কোনো কিছু কিনে না। দরকারি জিনিসটাও না কেনার চেষ্টা করে। এতদিন শীত আসার আগেই মানুষ গরম পোশাকের কেনাকাটা শুরু করতো। শীতের এই সব আইটেম বিক্রি কইরা প্রতিদিন তিন-চার হাজার টাকা আয় করতাম আর এখন পাঁচশ’ টাকাও আয় হয় না। এই যে এত মাল উঠাইছি এর আসল দামও মনে হয় উঠবে না।

কাওরান বাজারে কম্বল বিক্রি  করেন করিম। তেমন কম্বল বিক্রি নেই বলে জানান তিনি। করিম বলেন- এখানে দুইশ’ টাকা থেইকা হাজার টাকা পর্যন্ত কম্বল পাওয়া যায়। গরিব মানুষরাই বেশি কম্বল কিনে আমার কাছ থেইক্যা। করোনার পরে জিনিসপত্রের দামের কারণে এমনিতেই অনেক  মানুষ দেশে চইলা গেছে। এই জন্য কম্বলের ক্রেতা নাই।

আবার বড়লোকরা যারা গরিবদের কম্বল দান করতো তারা এখন আর দান করে না। আর ঢাকায় তো শীতের দেখা নাই। সামনে যদি শীত পড়ে তখন যদি ব্যবসা বাড়ে- এই আশায় আছি। এখন তো সবার অবস্থাই খারাপ। খাইতেই পারে না আর কি কম্বল কিনবো!

ফুটপাথে নারী-পুরুষের গায়ের চাদর বিক্রি করে মঞ্জিল। ঘড়ির কাঁটায় দুপুর দুইটা। মাত্র একটা চাদর বিক্রি করতে পেরেছে। কাওসার বলেন- প্রতিদিন সকালে চাদর নিয়ে বসি, কোনোদিন একটা, কোনোদিন দুইটা আবার কোনোদিন বিক্রি হয় না। এই  যে মাল উঠাইছি কতোদিন হইছে শেষ করতে পারছি না। করোনার আগে কতো ভালো ব্যবসা ছিল। আগে শীতে দুইদিনেই মাল শেষ হইয়া যাইতো। কতো লাভ করছি। আর এখন পেট চলে না।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button