উত্তরায় ফিলিং স্টেশন সিলগালা, মালিক-শ্রমিকদের সংবাদ সম্মেলন

রাজধানীর উত্তরায় রাজউক উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) কর্তৃক কসমো ফিলিং স্টেশন নামক একটি প্রতিষ্ঠান সিলগালা করা হয়েছে। এরই প্রতিবাদে ন্যায় বিচার চেয়ে জরুরী সংবাদ সম্মেলন করেছে ফিলিং স্টেশনের মালিক-শ্রমিক কর্তৃপক্ষ। বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক সংলগ্ন উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরে অবস্থিত কসমো ফিলিং স্টেশন সংলগ্ন একটি রেস্তেরায় জরুরী এই সংবাদ সম্মেলন ডাকা হয়। এতে প্রতিষ্ঠানটির মালিক গাজী আব্দুর রব রাজউকের বিরুদ্ধে আদালতের রায় তোয়াক্কা না করে অভিযান পরিচালনা ও প্রতিষ্ঠান সিলগালার অভিযোগ এনেছে।

সংবাদ সম্মেলনে উত্তরার কসমো ফিলিং স্টেশনের মালিক গাজী আব্দুর রব জানান, ২০০০ সালে ২৫ বছরের চুক্তিতে উত্তরার ৭ নম্বর সেক্টরের ৬৯নং প্লটটি রাজউকের কাছ থেকে লিজ নিয়ে সেখানে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেন তিনি। কিন্তু, কিছুদিন পর থেকে রাজউকের একটি মহল অসৎ উদ্দেশ্যে সাধনের লক্ষ্যে তাকে স্থানটি থেকে সরিয়ে দেয়ার অপ-তৎপরতা চালিয়ে আসছিল। সমাধান পেতে আইনী লড়াইয়ে ভুক্তভোগী গাজী আব্দুর রব হাইকোর্টে এ নিয়ে রিট দায়ের করলে ওই প্লটের উপর আদালত স্টে-অর্ডার (ইনজাংশন) জারি করেন।

তিনি জানান, সকালে কোন প্রকার নোটিশ ছাড়াই হঠাৎ করে রাজউকের এক ম্যাজিস্ট্রেট দুই-আড়াইশো লোকজন নিয়ে এসে ফিলিং স্টেশনে অভিযান চালায় এবং এক পর্যায়ে আমার প্রতিষ্ঠানের সামনে টিনের বেড়া দিয়ে সিলগালা করে তারা চলে যায়। এসময় দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেটকে আদালতের স্টে-অর্ডার দেখাতে চাইলে তিনি আদালতের রায়কে তোয়াক্কা না করেই বলপূর্বক ওই ম্যাজিস্ট্রেট আমার দীর্ঘদিনের পরিচালিত প্রতিষ্ঠান সিলগালা করে দেয়। এতে আমার প্রতিষ্ঠান ও কর্মচারীদের বিরাট ক্ষতি হয়েছে।

সংবাদ সম্মেলনে ভুক্তভোগী ওই ফিলিং স্টেশন মালিক বলেন, এর আগেও রাজউক আমার প্রতিষ্ঠান ভাংচুরের চেষ্টা চালায়। সেসময় আদালতের স্টে-অর্ডার দেখালে তারা (রাজউক) চলে যায়। কিন্তু, আজকে রাজউকের ওই ম্যাজিস্ট্রেট গায়ের জোরে ফিলিং স্টেশন সিলগালা করে চলে গেছে। আইনের লোক হয়ে হাইকোর্টের রায়কে তোয়াক্কা না করে লোকজন নিয়ে এভাবে সিলগালা করা, এটা সম্পূর্ণ অন্যায়। এসময় তিনি, রাজউক কর্তৃপক্ষের এমন আচরণের প্রতিবাদ জানান এবং সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের কাছে এর প্রতিকারের দাবী জানান তিনি। সংবাদ সম্মেলনে, ফিলিং স্টেশনে কর্মরত শ্রমিকদের অভিযোগ, অভিযানের সময় তাদেরকে ভয়ভীতি ও মারধর করা হয়েছে।

জানা যায়, ০৬ এপ্রিল (বৃহঃস্পতিবার) উত্তরার ওই স্থানটিতে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক) উচ্ছেদ অভিযান চালায়। এসময় কসমো ফিলিং স্টেশন নামের ওই প্রতিষ্ঠানটিকে সিলগালা করে দেয় রাজউকের দায়িত্বপ্রাপ্ত ম্যাজিস্ট্রেট। উচ্ছেদ অভিযানটির নেতৃত্ব দেন রাজউক জোন-৩ এর উপ-পরিচালক ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট তানজিনা সারোয়ার। এরই প্রতিবাদে এই জরুরী সম্মেলন ডেকে প্রতিবাদ ও প্রতিকারের আবেদন জানায় ওই ফিলিং স্টেশনের মালিক-শ্রমিকরা।

এদিকে, উচ্চ আদালতের রায় তোয়াক্কা না করে ওই অভিযান পরিচালনা ও ফিলিং স্টেশনটি সিলগালার বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযানটিতে নেতৃত্ব দেয়া রাজউক জোন-৩ এর উপ-পরিচালক আজ (শুক্রবার) দুপুরে তাজিনা সারোয়ার যুগান্তরকে বলেন, আদালতের লেটেস্ট কোন কপি আমি পাইনি। গতকাল এমন কিছু পাইনি। তারা পুরাতন কাগজপত্র দেখিয়েছে। কিন্তু, পুরাতন কাগজপত্রের বিপরীতে রাজউকের লেটেস্ট অর্ডার বলেই সেখানে আমি গিয়েছি।

তিনি জানান, অফিসিয়াল আইন শাখার মতামত এসেছে ভাড়াটিয়াকে উচ্ছেদ করতে এখানে (কসমো ফিলিং স্টেশন) কোন বাঁধা নাই এই মতামতের ভিত্তিতে আমাকে সেখানে পাঠানো হয়েছে এবং রাজউক চেয়ারম্যান কর্তৃক ৪ তারিখে স্বাক্ষরিত মতামতের ভিত্তিতে আমি প্রসেড (প্রক্রিয়া) করেছি।

অভিযানে কসমো ফিলিং স্টেশনে শ্রমিকদের ভয়ভীতি ও মারধরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি যুগান্তরকে বলেন, কারো গায়ে কোন হাত দেয়া হয়নি। আমরা তাদেরকে মুখে বলে সেখান থেকে সরে যেতে বলেছি। সেখানে কারো সাথে অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি।

Exit mobile version