ইয়েমেনে যাকাত নিতে গিয়ে ৭৮ জনের মৃত্যু, আহত ৩২২

আন্তর্জাতিক ডেস্ক : যাকাত নিতে গিয়ে ইয়েমেনের রাজধানী সানার একটি স্কুলে পিষ্ট হয়ে কমপক্ষে ৭৮ জন প্রাণ হারিয়েছেন বলে জানিয়েছেন দেশটির কর্মকর্তারা। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ পাওয়া ভিডিও ফুটেজে ঘটনার পরে ওই স্থানের (বাব-আল-ইয়েমেন) বিশৃঙ্খলার দৃশ্য দেখা যায়। নিহতদের মধ্যে নারী ও শিশুও রয়েছে। এছাড়া পদদলিত হয়ে কমপক্ষে আরো ৩২২ জন আহত হয়েছেন।

হুথির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য হতাহতের সঠিক সংখ্যা প্রদান করেনি। তবে তারা বলেছে, কয়েকজন ব্যবসায়ীর এলোমেলোভাবে অর্থ বিতরণের সময় পদদলিত হওয়ার কারণে কয়েক ডজন মানুষ মারা গেছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচারিত ভিডিওগুলোতে একটি বড় কমপ্লেক্সের ভেতরে মাটিতে মৃতদেহ পড়ে থাকতে দেখা গেছে। ওই সময় চারপাশে অবস্থান করা মানুষদের চিৎকার করতেও দেখা যায়। তবে এএফপি স্বাধীনভাবে এই ভিডিও ফুটেজটি যাচাই করতে পারেনি।

সংবাদ মাধ্যম রয়টার্স জানিয়েছে, শত শত মানুষ যাকাত গ্রহণের জন্য স্কুলে ভিড় করেছিল। সেখানে মাথাপিছু প্রায় ৯ ডলার করে যাকাত দেওয়া হচ্ছিল। ২০১৫ সালে সরকারকে উৎখাত করার পর থেকে হুথি বিদ্রোহীরা এই শহরটি পরিচালনা করছে। দেশটির স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, যাকাত বিতরণের সঙ্গে জড়িতদের আটক করা হয়েছে এবং তদন্ত চলছে।সানার একজন স্বাস্থ্য কর্মকর্তা জানিয়েছেন, অনেক আহত হয়েছেন এবং আহতদের মধ্যে ১৩ জনের অবস্থা গুরুতর। দেশটির অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস নিউজ এজেন্সি দুইজন প্রত্যক্ষদর্শীর উদ্ধৃতি দিয়ে বলেছেন, হুথি যোদ্ধারা ভিড় নিয়ন্ত্রণের জন্য ফাঁকা গুলি চালিয়েছিল। সেই গুলি গিয়ে আঘাত করে একটি বৈদ্যুতিক তারে যার ফলে একটি বিস্ফোরণ ঘটে। এতেই চারদিকে আতঙ্কের সৃষ্টি হয় এবং সবাই ছোটাছুটি শুরু করে।

২০১৫ সালে হাউথিরা দেশের পশ্চিমের বিশাল অংশের নিয়ন্ত্রণ দখল করতে গিয়ে ইয়েমেন বিধ্বস্ত হয়। প্রেসিডেন্ট আবদরাব্বুহ মনসুর হাদি বিদেশে পালিয়ে যান এবং সৌদি নেতৃত্বাধীন আরব রাষ্ট্রগুলোর একটি জোট তার শাসন পুনরুদ্ধার করতে হস্তক্ষেপ করে। কয়েক বছর সামরিক অচলাবস্থার মধ্যে পড়ে দেশটি। এই লড়াইয়ে ১ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা যায়।

গত সপ্তাহে ইয়েমেনে যুদ্ধরত পক্ষের মধ্যে একটি বড় বন্দীর অদলবদল শুরু হয়। যা আট বছরের বিধ্বংসী সংঘাতের অবসান ঘটানোর প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে দেখা হচ্ছে।সূত্র : বিবিসি, এএফপি

Exit mobile version