১৩ বছর পর বিশ্বকাপের ফাইনালে পাকিস্তান,হলো ৯২–এর পুনরাবৃত্তি

আজ বুধবার সিডনিতে প্রথম সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে ১৩ বছর পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। গত আসরের রানার্সআপ নিউজিল্যান্ডকে বিদায় নিতে হলো শেষ চার থেকেই।

১৯৯২ বিশ্বকাপেও সেমিফাইনালে নিউজিল্যান্ডকে পেয়েছিল পাকিস্তান। ৩০ বছর আগে কিউদের হারিয়েই ইমরান খানের পাকিস্তান নিজেদের ক্রিকেট ইতিহাসের সবচেয়ে বড় গৌরবের পথে পা বাড়িয়েছিল। ফাইনালে উঠেছিল দারুণভাবে। অকল্যান্ডের সে ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি আজ সিডনিতে।

টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের প্রথম দুটি আসরের ফাইনাল খেলেছিল পাকিস্তান। ২০০৭ সালে প্রথম আসরে রানার্স আপ। এ আক্ষেপ দলটি কাটায় দুই বছর পর ২০০৯ বিশ্বকাপে। জেতে প্রথমবারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা। এরপর দীর্ঘ অপেক্ষা। মাঝে চলে গেছে পাঁচটি আসর। ফাইনালই খেলা হয়নি পাকিস্তানের। অবশেষে সেই অপেক্ষা ফুরাল বাবর আজমদের।

গোটা টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ধুঁকতে থাকা বাবর আজমের পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ডকে ৭ উইকেটে উড়িয়ে দিয়েই নিশ্চিত করেছে ফাইনাল। যে দলটি কয়েক দিন আগেই সুপার টুয়েলভ থেকে বাদ পড়ার শঙ্কায় কাঁপছিল, তারাই এখন স্বপ্ন দেখছে দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জয়ের।

টস জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৪ উইকেটে ১৫২ রান করে নিউজিল্যান্ড। জবাবে বাবর আজম ও মোহাম্মদ রিজওয়ানের ব্যাটে উড়ন্ত সূচনা করা পাকিস্তান লক্ষ্যে পৌঁছায় ৫ বল হাতে রেখে, ১৫৩/৩। ৪৩ বলে ৫৭ রানের ইনিংস খেলা রিজওয়ান হন ম্যাচ সেরা।১৫৩ রানের লক্ষ্যে খেলতে নামা পাকিস্তানের শুরুটা দুর্দান্ত। অফ ফর্মে থাকা বাবর আজম চলমান বিশ্বকাপে তুলে নেন প্রথম ফিফটি। তার সঙ্গে দারুণ ছন্দে ছিলেন মোহাম্মদ ‍রিজওয়ানও। পাওয়ার প্লের ৬ ওভারে পাকিস্তান তোলে বিনা উইকেটে ৫৫।

উদ্বোধনী জুটি ভাঙার আগে পাকিস্তান করতে পারে ১০৫ রান। তখনই পাকিস্তানের জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। বোল্টের বলে মিচেলের হাতে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন বাবর। ৪২ বলে সাত চারে তিনি খেলেন ৫৩ রানের দারুণ ইনিংস।দলীয় ১৩২ রানে বিদায় নেন রিজওয়ান। তিনিও বোল্টের শিকার। ৪৩ বলে ৫ চারে ৫৭ রান করেন তিনি।

হারিস ও শান মাসুদ দলকে নিয়ে যান জয়ের খুব কাছাকাছি। জয় থেকে মাত্র দুই রান দূরে থাকতে সান্টনারের বলে অ্যালেনের হাতে ক্যাচ দেন ২৬ বলে ৩০ রান করা মোহাম্মদ হারিস। শেষ ওভারে দরকার ছিল মাত্র দুই রান। শান মাসুদ অনায়াসেই তা করে দলকে ভাসান ফাইনালে উঠার আনন্দে।

এর আগে টস জিতে ব্যাট করতে নেমে নিউজিল্যান্ডের হয়ে সর্বোচ্চ ৫৩ রানের ইনিংস খেলেন ড্যারেল মিচেল। ৩৫ বলের ইনিংসে তিনি হাকান তিনটি চার ও একটি ছক্কা।দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৬ রানের ইনিংস আসে অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসনের ব্যাট থেকে। ৪২ বলের ইনিংসে তিনি হাঁকান একটি করে চার ও ছক্কা।

পাকিস্তানের বোলিং নিউজিল্যান্ডকে আরাম করে খেলতে দেয়নি। আফ্রিদি দারুণ বোলিং করেছেন। তিনি ৪ ওভারে ২৪ রান দিয়ে তুলে নেন ২ উইকেট। মোহাম্মদ নওয়াজ ২ ওভারে ১২ রান দিয়ে নিয়েছেন ১ উইকেট। এ ছাড়াও নাসিম শাহ ৪ ওভারে ৩০, হারিস রউফ ৪ ওভারে ৩২, মোহাম্মদ ওয়াসিম ২ ওভারে ১৫ আর শাদাব খান ৪ ওভারে ৩৩ রান দেন।

নিউজিল্যান্ডের ইনিংসে ছিল ৩৭টি ডট বল, যার ১১টি আফ্রিদির বলে। ৮টি নাসিম শাহর বলে। আর ৭টি শাদাব খানের বলে। মোহাম্মদ নওয়াজ ২টি, হারিস রউফ ৬টি ও মোহাম্মদ ওয়াসিম দেন ৩টি ডট বল।

Exit mobile version