৩০ অক্টোবর, ১৯৬০। আর্জেন্টিনার বুয়েন্স আয়ার্সের প্রদেশ লানুস শহরে জন্ম নিয়েছিলেন ইতিহাসের অন্যতম সেরা ফুটবলার দিয়েগো ম্যারাদোনা। সোনার ছেলে, ফুটবল জাদুকর, ফুটবল ঈশ্বর যেই নামেই ডাকা হোক না কেন, তার আজ ৬২তম জন্মদিন।
সর্বদা হাসি আর আনন্দে ব্যস্ত থাকা এই কিংবদন্তি ফুটবলার এখন ধরাছোঁয়ার বাইরে। নশ্বর এই পৃথিবী ছেড়ে অবিনশ্বর পরলোকে পাড়ি জমিয়েছেন দুই বছর আগে।আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয়ী অধিনায়ক তিনি। তার একক নৈপুণ্যে ১৯৮৬ সালে মেক্সিকোর বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা। শুধু তাই নয়, ১৯৯০ সালে বিশ্বকাপের ফাইনালও খেলে আলবিসেলেস্তারা।
অল্প বয়সের কারণে ১৯৭৮ বিশ্বকাপ খেলতে না পারলেও, ১৯৮২ বিশ্বকাপে খেলেছেন তিনি। তবে ব্রাজিলের বিপক্ষে ম্যাচে লাল কার্ড দেখে সেবার শেষ হয় তার বিশ্বকাপ মিশন। পরের আসর মেক্সিকোতে বিশ্বকে দেখান তার সামর্থ্য ও প্রতিভার ঝলক। নৈপুণ্য ও নেতৃত্বে দ্বিতীয়বারের মতো বিশ্বকাপ জেতে আর্জেন্টিনা।
কিন্তু এর চার মিনিট পরেই অবিশ্বাস্যভাবে করেন শতাব্দীর সেরা গোল। প্রায় মাঝ মাঠ থেকে ছয় ইংলিশ ফুটবলারকে কাটিয়ে একাই বল টেনে নিয়ে গিয়ে করেন ম্যাচের এবং নিজের দ্বিতীয় গোল।এরপর ১৯৯০ বিশ্বকাপেও আর্জেন্টিনাকে তুলেছিলেন ফাইনালে। ২০ বছরের আন্তর্জাতিক ও ক্লাব ক্যারিয়ারে আর্জেন্টাইন এই মহাতারকা মোট গোল করেছেন ৩৪৬টি।
বল পায়ে দক্ষ নিয়ন্ত্রণ, চিতার ক্ষিপ্রতায় প্রতিপক্ষ ফুটবলারদের কাটিয়ে এগিয়ে যাওয়াসহ আরও অনেক ঐতিহাসিক মুহূর্ত, দৃষ্টিনন্দন সব গোল আর বিশ্বসেরা ফুটবলারের বিতর্ক, সব কিছুই তাকে রেখেছে অনেক উঁচুতে।কারো মতে, শ্রেষ্ঠত্বের চূড়ায় জ্বলজ্বলে তারা একমাত্র ম্যারাদোনাই।
স্বপ্রতিভায় ফুটবল বিশ্বকে সব সময় বিমোহিত করেছেন ম্যারাদোনা। দুই দশকের পেশাদার ফুটবল ক্যারিয়ারে ৬টি ক্লাবে খেলেছেন আর্জেন্টাইন এই মহাতারকা। ১৫ বছর বয়সে যোগ দেন নিজ শহরের ক্লাব আর্জেন্টিনোস জুনিয়র্সে।
ক্যারিয়ারে কোচিংও করিছেয়েন ম্যারাদোনা। ২০০৮ সালে ছিলেন লিওনেল মেসিদের কোচ। অনেক চড়াই-উতরাই পেরিয়ে আর্জেন্টিনা নিশ্চিত করে ২০১০ বিশ্বকাপের টিকিট। বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে জার্মানির কাছে ৪-০ গোলে হেরে বিদায় নেয় আর্জেন্টিনা।
২০২০ সালে বুয়েন্স আয়ার্সের হাসপাতালের আইসোলেশনে থেকে ৬০তম জন্মদিন পালন করেন তিনি। এর এক মাসের মধ্যেই এই কিংবদন্তি পাড়ি জমান না ফেরার দেশে। ২০২০ সালের ২৫ নভেম্বর মাত্র ৬০ বছর বয়সে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান দিয়েগো ম্যারাদোনা।