কক্সবাজারবান্দরবানবাংলাদেশশিক্ষাঙ্গন

আতঙ্কজনক পরিস্থিতিতে বাসে উখিয়া কেন্দ্রে আনা হলো এসএসসি পরীক্ষার্থীদের

মিয়ানমার সীমান্তে আতঙ্কজনক পরিস্থিতির কারণে বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চ বিদ্যালয়ে এসএসসি পরীক্ষার কেন্দ্রটি সরিয়ে কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলায় স্থানান্তর করা হয়েছে। শনিবার সকালে ওই বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের বাসে করে উখিয়ার কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে নি‌য়ে আসা হয়।

বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে আজ শনিবার সকাল সাতটার দিকে কয়েক শ এসএসসি পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা জড়ো হন। উদ্দেশ্য, সেখান থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে পাশের জেলা কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার কুতুপালং উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে যাওয়া।

ঘুমধুম কেন্দ্রের এসএসসি পরীক্ষার্থীদের উখিয়ার কেন্দ্রে পৌঁছে দিতে একাধিক বাসের ব্যবস্থা করেছে কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগ। এ ছাড়া কক্সবাজার জেলা পুলিশ দুটি বাস ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের পক্ষ থেকে অন্যান্য যানবাহনে করে শিক্ষার্থীদের কেন্দ্রে পৌঁছানোর ব্যবস্থা করা হয়েছে। বাসগুলোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিয়ে কেন্দ্র পর্যন্ত পৌঁছে দিয়েছে উখিয়া থানার পুলিশ। ঘুমধুম থেকে কুতুপালং কেন্দ্রে পৌঁছতে বাসের সময় লাগে ৩৫ থেকে ৪৫ মিনিট। এরপর কুতুপালং উচ্চ বিদ্যালয় কেন্দ্রে বাংলা দ্বিতীয়পত্রের পরীক্ষা শুরু হয়েছে।

উখিয়ার কুতুপালং কেন্দ্রে সহজে আসা–যাওয়ার জন্য কক্সবাজার-টেকনাফ সড়কের মরিচ্যা থেকে কুতুপালং পর্যন্ত প্রায় ১৭ কিলোমিটার সড়ক যানজটমুক্ত রাখা হয়। আজ বেলা ১১টায় শুরু হয় বাংলা দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। পরীক্ষা শেষে পরীক্ষার্থীদের আবারও বাসে করে ঘুমধুমে পৌঁছে দেবে পুলিশ।

কক্সবাজার জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ আদনান বলেন, মিয়ানমার সীমান্তে গোলাগুলির কারণে ঘুমধুম সীমান্ত পরিস্থিতি অস্থিতিশীল হয়ে পড়েছে। সেখানে লোকজনের যাতায়াত সীমিত করা হয়েছে। সেখানকার পরীক্ষার্থীদের সহজ ও নিরাপদ যাতায়াতে ছাত্রলীগের উদ্যোগে কয়েকটি বাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। বিনা মূল্যে পরীক্ষার্থীরা এ সুযোগ পাচ্ছে।

উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শেখ মোহাম্মদ আলী প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশি পাহারায় দুটি বাসে তুলে ঘুমধুম কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের উখিয়ার কুতুপালং কেন্দ্রে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। পরীক্ষার্থীদের কেউ কেউ আগেভাগে ঘুমধুম থেকে অটোরিকশা, ইজিবাইক, মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন পরিবহনে উখিয়ার কুতুপালং কেন্দ্রে পৌঁছেছে।

উখিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইমরান হোসাইন বলেন, শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে কুতুপালং উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ঘুমধুম কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীদের বসার জায়গা নির্ধারণসহ আনুষঙ্গিক প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়। তিনি বলেন, সীমান্ত পরিস্থিতির কারণে এসএসসি কেন্দ্র সরিয়ে আনা হয়েছে। মুঠোফোনের মাধ্যমে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের বিষয়টি জানানোর পাশাপাশি এলাকায় মাইকিং করা হয়েছে।

ঘুমধুম উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রের হল সুপার ও বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খাইরুল বশর বলেন, শুক্রবার রাতেই তাঁরা প্রশাসনের নির্দেশনা পেয়ে ঘুমধুম থেকে কুতুপালং উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে চলে এসেছেন। রাতেই পরীক্ষার সার্বিক প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে। ঘুমধুম কেন্দ্রের পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ৪৯৯।

উল্লেখ্য, শুক্রবার রাত ৮টার দিকে মিয়ানমার থেকে ছোড়া মর্টারশেল এসে পড়ে সীমান্তের নো-ম্যান্স ল্যান্ডে। নাইক্ষ্যংছড়ির ঘুমধুম ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড কোনারপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সেটি বিস্ফোরণে সীমান্ত এলাকায় বসবাসরত মো. ইকবাল (১৭) নামে এক রোহিঙ্গা নিহত হ‌য়ে‌ছেন। এ সময় আহত হয়েছে আরও পাঁচ জন।

এর আগে শুক্রবার বিকালে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্তের ওপারে ‌মিয়ানমারের অভ্যন্তরে ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণে আহত হন উইনু থোয়াইং তঞ্চঙ্গ্যা (২২) নামে এক তরুণ। এই পরিস্থিতির কারণে ঘুমধুমের এসএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র কক্সবাজারের উখিয়ার কুতুপালংয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button