জাতীয়ডাক্তার পরামর্শবাংলাদেশস্বাস্থ্য ও চিকিৎসা

আজ বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস

বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস আজ। ২০০৭ সাল থেকে বাংলাদেশসহ এশিয়ার ১২টি দেশে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালন করা হয়। জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরোধ ও নির্মূলের লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে দিবসটি পালিত হয়ে আসছে।দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। এবারের প্রতিপাদ্য ‘জলাতঙ্ক: মৃত্যু আর নয়, সবার সঙ্গে সমন্বয়’।

আজ বুধবার বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস। দিবসটির এবারের মূল প্রতিপাদ্য ‘মৃত্যু আর নয়, সবার সঙ্গে সমন্বয়’। আক্রান্ত রোগী পানি দেখে বা পানির কথা মনে পড়লে প্রচণ্ড আতঙ্কিত হয়ে পড়ে বলে এই রোগের নাম হয়েছে জলাতঙ্ক। এটি প্রাণিবাহিত র‌্যাবিস ভাইরাসঘটিত রোগ, রোগের লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পর আক্রান্ত রোগীর বেঁচে থাকার সম্ভাবনা প্রায় নেই বললেই চলে। স্বাস্থ্য বিভাগ বলছে, এ রোগ ভাইরাসজনিত। এটি প্রাণী থেকে মানুষে ছড়ায়। এ রোগে মৃত্যু অনিবার্য হলেও শতভাগ প্রতিরোধযোগ্য।

বিজ্ঞানী লুই পাস্তর ২৮ সেপ্টেম্বর মৃত্যুবরণ করেছিলেন। এ মহান বিজ্ঞানী মৃত্যুর আগে জলাতঙ্কের টিকা আবিষ্কার করেছিলেন। তার এ অবদানকে বিশ্বের বুকে অবিস্মরণীয় করে রাখতে এবং এ রোগের ভয়াবহতা অনুধাবন করে জনসচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে বাংলাদেশেও ২০০৭ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর থেকে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালন করে আসছে।

দিবসকে সামনে রেখে সরকার, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও দেশীয় সংগঠনের পক্ষ থেকে ব্যাপক কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। এ কর্মসূচির আওতায় জাতীয়, বিভাগীয়, জেলা এবং উপজেলা পর্যায়ে সেমিনার, মুক্ত আলোচনা, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয়েছে।

এ রোগের ভয়াবহতা উপলব্ধি, জনসচেতনতা বাড়ানো ও প্রতিরোধ এবং নির্মূলের লক্ষ্যে ২০০৭ সাল থেকে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উদযাপিত হয়ে আসছে। পৃথিবীর ১২টি দেশের সঙ্গে মিল রেখে বাংলাদেশে ২০০৭ সালে প্রথম বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত হয়। এরপর থেকে বাংলাদেশে প্রতিবছর ২৮ সেপ্টেম্বর বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস পালিত হয়ে আসছে।

জলাতঙ্ক বা র্যাবিস ভাইরাসজনিত একটি মারাতক সংক্রামক রোগ। র্যাবিস ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত কুকুর রোগটির প্রধান বাহক। এছাড়া অন্যান্য প্রাণি যেমন বিড়াল, শিয়াল, বেজি, বানরও রোগটি ছড়াতে পারে। বর্তমানে বিশ্বে বছরে ৫৯ হাজার মানুষ এ রোগে মারা যায়। রোগের লক্ষণ একবার প্রকাশ পেলে মৃত্যু নিশ্চিত। তবে সময়মত অর্থাৎ কামড় বা আঁচড়ের সঙ্গে সঙ্গে আক্রান্ত স্থান সাবান পানি দিয়ে ধুয়ে পূর্ণ ডোজ টিকা নিলে রোগটি শতভাগ প্রতিরোধ করা সম্ভব।

সাধারণত জলাতঙ্কের লক্ষণ দেখা দেওয়ার এক সপ্তাহের মধ্যেই রোগী মারা যায়। কোনো অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ এই ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না। কিছু উপশম প্রশমনের চিকিৎসা ছাড়া জলাতঙ্কের বিরুদ্ধে তেমন কার্যকর কোনো চিকিৎসা নেই। তবে জলাতঙ্কের বিরুদ্ধে কার্যকর টিকা রয়েছে, যা রোগের লক্ষণ প্রকাশের আগে শরীরে প্রয়োগ করতে পারলে মৃত্যু এড়ানো যায়।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে উষ্ণমণ্ডলীয় অবহেলিত রোগগুলোর মধ্যে জলাতঙ্ক অন্যতম কারণ। এ রোগে সাধারণত গ্রামীণ জনপদের হত-দরিদ্র জনগোষ্ঠী ও শিশুরা সর্বাধিক আক্রান্ত হয়। অজ্ঞতার দরুণ তারা চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হয়।

এ কর্মসূচির আওতায় জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রাম রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য অধিদপ্তর প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও দেশজুড়ে বিশ্ব জলাতঙ্ক দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন পর্যায়ে সেমিনার, মুক্ত আলোচনা, জনসচেতনতামূলক কার্যক্রমসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠান গ্রহণ করা হয়েছে।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button