অর্থ ও বাণিজ্যবাংলাদেশ

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে তৈরি পোশাক রপ্তানিতে ভালো করছে বাংলাদেশ

বাংলাদেশের পোশাক পণ্যের কদর রয়েছে বিশ্বজুড়েই। ইউরোপ-আমেরিকা বাংলাদেশের পোশাকের বড় ক্রেতা। নতুন নতুন বাজারও আসছে, বড় হচ্ছে ক্রেতার তালিকা। দেশের তৈরি পোশাকের চাহিদা বাড়ছে মার্কিন মুল্লুকে। বাংলাদেশ থেকে দেশটির পোশাক আমদানি বেড়েছে অনেকটা।

চলতি বছরের প্রথম ৭ মাসে (জানুয়ারি-জুলাই) যুক্তরাষ্ট্রের ব্র্যান্ড ও ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর কাছে ৫৭১ কোটি ডলারের পোশাক রপ্তানি হয়েছে বাংলাদেশ থেকে। ২০২১ সালের একই সময়ের তুলনায় দেশটিতে এ বছর পোশাক রপ্তানি বেড়েছে ৫৪.৪৩ শতাংশ।

ওটিইএক্সএর চলতি বছরের (২০২২) জানুয়ারি-জুলাই তথ্যমতে, ২০২১ সালের একই সময়ের (জানুয়ারি-জুলাই) তুলনায় বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের পোশাক আমদানি বেড়েছে ৫৪ দশমিক ৪৩ শতাংশ। পুরো বিশ্বে তাদের আমদানি বেড়েছে ৩৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এ সময়ের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্র বাংলাদেশ থেকে ৫ দশমিক ৭১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের পোশাক আমদানি করেছে।এদিকে রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে গত দুই মাসে (জুলাই ও আগস্ট) ১.৪১ বিলিয়ন ডলার মূল্যের পোশাক রপ্তানি হয়েছে, যা আগের অর্থবছরের একই সময়ের তুলনায় ২০.৫২ শতাংশ বেশি।

২০২২ সালের জানুয়ারি-জুলাই সময়ে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি প্রবৃদ্ধির হার ছিল ৪০ শতাংশ। এ সময়ে চীন থেকে যুক্তরাষ্ট্র পোশাক আমদানি করেছে ১২.৭৯ বিলিয়ন ডলারের। একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি বেড়েছে ৩৫.৩০ শতাংশ। আমদানি পৌঁছেছে ১০.৯১ বিলিয়ন ডলারে।

একই সময়ে ভিয়েতনাম থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি বেড়েছে ৩৫ দশমিক ৩০ শতাংশ। আমদানি পৌঁছেছে ১০ দশমকি ৯১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। অন্যান্য শীর্ষ দেশ যেমন ইন্দোনেশিয়া, ভারত, কম্বোডিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া এবং পাকিস্তান থেকে আমদানি একই সময়ে উল্লেখযোগ্য হারে বেড়েছে।

অন্যদিকে ইপিবি’র তথ্য জানায়, জুলাই-আগস্ট এই দুই মাসে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বাজারে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি ২৩.২১ শতাংশ বেড়ে ৩.৪৫ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

ইউএস ডিপার্টমেন্ট অব কমার্সের অফিস অব টেক্সটাইল অ্যান্ড অ্যাপারেলের (অটেক্সা) ২০২২ সালের এক পরিসংখ্যানে এ তথ্য উঠে এসেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশের পোশাকের চাহিদা বাড়ার বিষয় নিয়ে কথা হয় তৈরিপোশাক মালিক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) পরিচালক মহিউদ্দিন রুবেল এর সঙ্গে। তিনি বলেন, মুলত করোনা মহামারি থেকে ঘুরে দাঁড়ানো এবং ভোক্তাদের কেনাকাটা বাড়ার ফলে খুচরা বিক্রয় স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বেড়েছে। তবে, মূল্যস্ফীতি এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে মন্দার কারণে ২০২২ সালের চতুর্থ প্রান্তিকে প্রবৃদ্ধির এ ঊর্ধ্বমুখী ধারা কতটা টিকে থাকবে সেটি ভাবনার বিষয়। দীর্ঘ গ্রীষ্মের কারণে শীতের পোশাকের চাহিদাও তুলনামূলক কম।

এ পোশাকশিল্প উদ্যোক্তা আরও বলেন, বাংলাদেশ ২০২২ সালের আগস্ট পর্যন্ত মোট পোশাক রপ্তানির হারে প্রবৃদ্ধি বজায় রেখেছিল। ফলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের আমদানি সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ইতিবাচক প্রবণতা বজায় রাখতে পারে এবং পরে অর্থনৈতিক অস্থিরতার কারণে খুচরা বিক্রয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়ায় ক্রেতারা সতর্ক অবস্থানে আছেন।

প্রসঙ্গত, যুক্তরাষ্ট্র বরাবরই বাংলাদেশের তৈরি পোশাকের বড় বাজার। সাড়ে ৯ বছর আগে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর বাংলাদেশের পোশাক কারখানার কর্মপরিবেশ নিয়ে প্রশ্ন উঠলে বাজারটিতে রপ্তানি কমে যায়। তারপর কারখানার কর্মপরিবেশ উন্নয়নে ব্যাপক সংস্কার করেন উদ্যোক্তারা। ফলে ধীরে ধীরে ঘুরে দাঁড়াতে শুরু করে বাংলাদেশের পোশাক রপ্তানি।

বাংলা ম্যাগাজিন /এমএ

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button