অপরাধএক্সক্লুসিভঢাকাদুর্নীতিবাংলাদেশরাজধানী

সংসদ সচিবালয়ের উপ-পরিচালক বেগম জেব-উন-নেছার অভিনব কৌশল

১৫ দিনের শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটি নিয়েছিলেন তিনি। এ জন্য সংসদ সচিবালয়ের অর্থ শাখা থেকে টাকা তুলেছেন ৫৫ হাজার ১১০ টাকা। কিন্তু তিনি ছুটি কাটাননি। একই সময় তিনি অফিস করার তথ্য দিয়ে ওভারটাইম তোলেন ১১ হাজার টাকা। পরে ওভারটাইমের সঙ্গে ২৮শে সেপ্টেম্বর তার অ্যাকাউন্টে খাবার বিল হিসেবে যোগ হয় আরও তিন হাজার ২৯০ টাকা।

এভাবে সরকারের তহবিল থেকে অনৈতিকভাবে টাকা তুলেছেন সংসদ সচিবালয়ের উপ-পরিচালক (গ্রন্থাগার) বেগম জেব-উন-নেছা। একই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে অতীতেও এ ধরনের ঘটনার অভিযোগ রয়েছে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৭ই আগস্ট উপ-পরিচালক জেব-উন-নেছা ১৫ দিনের শ্রান্তি ও বিনোদন ছুটির আবেদন করেন। এ প্রেক্ষিতে ১৯শে আগস্ট থেকে ২রা সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ছুটি মঞ্জুর হয়। ওই ছুটি কাটাতে তিনি সংসদ সচিবালয়ের অর্থ শাখা থেকে ৫৫ হাজার ১১০ টাকা তোলেন।

সংসদ সচিবালয়ের অর্থ শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী সচিব আলমগীর হোসেন জানান, সংসদ সচিবালয়ের সব শাখা ও প্রত্যেক স্টাফকে এসব বিষয়ে নোটিশ দেয়া হয়েছিল। সেখানে বলা হয়েছিল কেউ যদি ছুটিতে থাকেন তা যেন আমাদেরকে জানানো হয়।

জেব-উন-নেছা যদি তথ্য গোপন করে টাকা তুলে থাকেন তাহলে তিনি অন্যায় করেছেন। এটা তিনি করতে পারেন না। এক প্রশ্নে তিনি জানান, এ ধরনের অপরাধের কোনো শাস্তি নেই। যে টাকা তিনি তুলেছেন তা ফেরত দেয়াটাই শাস্তি হিসেবে গণ্য করা হয়। এ প্রসঙ্গে জেব-উন-নেছার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাকে পাওয়া যায়নি। মোবাইল ফোনে মেসেজ পাঠালেও কোনো উত্তর তিনি দেননি।

সংসদ অধিবেশনের সময় দায়িত্বরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা ওভারটাইম বিল পেয়ে থাকেন। ওই বিল পেতে ছুটিতে না গিয়ে তিনি ১১ দিনের বিপরীতে ১১ হাজার টাকা ওভারটাইম বিল তোলেন। ১লা আগস্ট থেকে ৩১শে আগস্টের মধ্যে যারা অতিরিক্ত কাজ করেছেন তাদের ওভারটাইম দেয়া হয়েছে।

নিয়ম অনুযায়ী কোনো কর্মকর্তার ছুটি পাস হলে তিনি কোনো ধরনের ওভারটাইম বিল পাবেন না। কিন্তু জেব-উন-নেছা ছুটির তথ্য গোপন রেখে বাড়তি টাকা তোলেন। এ প্রসঙ্গে সংসদ সচিবালয়ের অর্থ শাখার দায়িত্বে থাকা সহকারী সচিব বলেন, যদি কোনো কর্মকর্তার ছুটি মঞ্জুর হয় তাহলে তিনি অন্য কোনো আর্থিক সুবিধা নিতে পারবেন না। তিনি ওই সময়টা ছুটিতে আছেন বলে গণ্য হবে।

তবে বিশেষ প্রয়োজনে যদি ছুটি নেয়ার পরও অফিস করতে হয় সেটা তিনি করতে পারেন। কিন্তু ওভারটাইম তুলতে পারেন না। তিনি বলেন, অতীতে অডিট করতে গিয়ে এ ধরনের কয়েকটি ঘটনা ধরা পড়ে। পরে যারা অতিরিক্ত টাকা নিয়েছিলেন তাদের সেই টাকা ফেরত দিতে হয়েছে। আমাদের এখানে ১৪শ’ কর্মকর্তা ও কর্মচারী। কে কখন ছুটিতে যাচ্ছেন তা আমাদের পক্ষে মনিটরিং করা সম্ভব না।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button