টাঙ্গাইলের গোপালপুরে বিয়ের দাবিতে প্রেমিক শিমুলের বাড়িতে অনশনরত অবস্থায় শ্লীলতাহানি ও অমানুষিক নিযার্তনের শিকার হয়েছেন প্রেমিকা। স্থানীয়রা অসুস্থ প্রেমিকাকে উদ্ধার করে গোপালপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ভর্তি করেছেন।
চাঞ্চল্যকর এমন ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সূতি নয়াপাড়া গ্রামে। গত ২৯শে সেপ্টেম্বর থেকে বিয়ের দাবিতে আমরণ অনশন শুরু করে ঐ তরুণী। সে দিনাজপুর জেলার বিরামপুর উপজেলায় কেশবপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে ফৌজিয়া আক্তার তানিয়া।
জানা যায়, দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলার কেশবপুর গ্রামের আফজাল হোসেনের মেয়ে ফৌজিয়া আক্তার তানিয়ার সাথে গোপালপুর উপজেলার সূতি নয়াপাড়া গ্রামের সুরুজ মিয়ার পুত্র বরাতুল ইসলাম শিমুলের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরা উভয়ে গাজীপুরের একটি গার্মেন্টে চাকরি করতো। পরিনয়কে বিয়েতে রুপান্তরিত করার উদ্দেশ্যে বাবা-মা’র মতামত নেয়ার জন্য শিমুল গত ২৯শে সেপ্টেম্বর তানিয়াকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে আসে।
কিন্তু বাবা-মা রাজি না হওয়ায় তাদের বিয়ে হয়নি। তানিয়া শিমুলের বাড়িতে অবস্থান করতে থাকে। গত ১লা অক্টোবর গ্রামে একটি সালিশি বৈঠকে শিমুলকে বিয়ের জন্য চাপ দিলে সে বাবা-মাসহ বাড়ি থেকে গাঢাকা দেয়।কিন্তু তানিয়া বিয়ে না করে কর্মস্থলে ফিরে যেতে অস্বীকার করেন এবং ওই বাড়িতে অনশন শুরু করে।
আজ মঙ্গলবার সকাল নয়টায় গোপালপুর থানা পুলিশ তানিয়ার খোঁজখবর নেয়ার জন্য ওই বাড়িতে গেলে শিমুলের মামা এরশাদ আলী, মামাতো ভাই শাকিল, দুই খালা জল্পনা খাতুন ও আল্পনা খাতুন মিলে তানিয়াকে বেদম মারপিট করে এবং চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে বের করে আনে। এতে তার পরনের কাপড়ও ছিঁড়ে যায়।
পরে থানা পুলিশের সহযোগিতায় তাকে উদ্ধার করেন। এ মারপিট ও নির্যাতনের ঘটনায় এলাকাবাসী ক্ষোভে ফুঁসে উঠে। পরে সহস্রাধিক গ্রামবাসি এ নির্যাতনের প্রতিবাদে বিক্ষোভ শুরু করে। তারা আহত তানিয়াকে একটি রিকশাভ্যানে উঠিয়ে বিক্ষোভ মিছিলসহ উপজেলা নির্বাহী অফিসারের কার্যালয় ঘেরাও করেন।
গ্রামবাসীর অভিযোগ গোপালপুর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান মীর রেজাউল হক ছেলের পক্ষ নিয়ে প্রশাসনিক পর্যায়ে নানাভাবে দেনদরবার করায় ছেলেপক্ষ আপোষ রফায় না গিয়ে উগ্র হয়ে উঠে। পরিণতিতে আজ মঙ্গলবার এ নারী নির্যাতনের ঘটনা ঘটে। তিনি এ নির্যাতনের দায় এড়াতে পারেন না।
এদিকে হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক তাপস সাহা জানান, ভিক্টিমের শরীরে নির্যাতনের অনেক চিহ্ন রয়েছে। তার শরীর খুবই দুর্বল। তবে আশঙ্কামুক্ত।
এদিকে এ ঘটনায় আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নারী নির্যাতন আইনে গোপালপুর থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এ বিষয়ে গোপালপুর থানার ওসি মো. মোশারফ হোসেন বলেন, লিখিত অভিযোগের বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।