Bangla News

বাড়ির পাশে মেহগনি বাগানের পতিত জমিতে এলাচ চাষ, এলাকায় চাঞ্চল্য

বাংলা ম্যাগাজিন ডেস্ক: জেলার চৌগাছায় বাণিজ্যিকভাবে সুগন্ধি মসলা এলাচ চাষ করেছেন নজরুল ইসলাম। বসত বাড়ির পাশে মেহগনি বাগানের পতিত জমিতে এলাচ চাষ করে এলাকায় সাড়া ফেলেছেন তিনি। বাংলানিউজের প্রতিবেদক উত্তম ঘোষ-এর প্রতিবেদনে উঠে এসেছে বিস্তারিত।

নজরুল ইসলামের আশা, দেশে উৎপাদিত এই এলাচ আমদানি নির্ভরতা কমাবে এবং একইসঙ্গে উপজেলার কৃষিতে একটি নতুন সংযুক্তির মাধ্যমে অর্থনৈতিক মুক্তির পথ দেখাবে। নতুন এ মসলা চাষে তিনি ব্যাপক সম্ভাবনাও দেখছেন।

জানা যায়, শখের বসে বেনাপোলে শাহাজান আলীর এলাচ বাগান দেখতে গিয়ে এই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন নজরুল ইসলাম। তিনি জেলা শহরের ৬ নম্বর ওয়ার্ডের মৃত মানিক মাস্টারের ছেলে।

নজরুল ইসলাম জানান, ২০২০ সালের শেষের দিকে কয়েকজন বন্ধু মিলে বেনাপোলে শাহাজান আলীর এলাচ বাগান দেখতে যান। সেখানে গিয়ে তিনি এই চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেন। তবে শাহাজাহান আলীর বাগানে চারার দাম বেশি হওয়ায় তিনি ভারতে গিয়ে তিন হাজার ২০০ টাকায় ১০০টি চারা সংগ্রহ করেন। সেখান থেকেই চাষ পদ্ধতি শিখে আসেন ও বসত ভিটার আঙিনায় এক বিঘা মেহগনি বাগানে চারাগুলো রোপণ করেন।

পরে ইউটিউব দেখে পরিচর্যা ও নানা খুঁটিনাটি রপ্ত করেন তিনি। বর্তমানে তার এলাচ বাগানের বয়স প্রায় তিন বছর। এখন পর্যন্ত তার বাগানে মোট খরচ হয়েছে ৪০ থেকে ৫০ হাজার টাকা। বর্তমানে বাগান ফুলে ফলে সুশোভিত হয়ে উঠেছে।

তিনি বলেন, ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় এলাচ চাষে আগ্রহীরা আমার কাছ থেকে চারা কিনেতে আগ্রহী হয়েছেন। তারাও বাণিজ্যিকভাবে এলাচ চাষ শুরু করতে চান। এ বছর থেকেই চারা বিক্রি শুরু করব। পাঁচ বিঘা জমির জন্য চারার অর্ডারও পেয়েছি। চলতি বছরে চারা বিক্রি করে পাঁচ লাখেরও বেশি টাকা আয় হবে বলে জানান তিনি।

নজরুল ইসলাম জানান, সরকার যদি এলাচ চাষে আগ্রহীদের আর্থিক সহযোগিতা করে অথবা স্বল্প সুদে ঋণের ব্যবস্থা করে তাহলে ভবিষ্যতে দেশের চাহিদা মিটিয়ে এলাচ বিদেশে রপ্তানি করা সম্ভব। এতে দেশের বেকারত্ব সমস্যা কমার পাশাপাশি তৈরি হবে অনেকের কর্মসংস্থান।

তিনি বলেন, এলাচ গাছে ফল আসতে তিন থেকে পাঁচ বছর সময় লাগে। এক একর জমিতে একহাজার ২০০টি এলাচ চারা রোপণ করা যায়। পাঁচ বছর পর থেকে এক একর জমির এলাচ গাছ থেকে বছরে প্রায় একহাজার ৫০০ কেজি ফল পাওয়া যাবে। এর বাজারমূল্য ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকা। এছাড়া একটি এলাচ গাছ ৩০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকে ও ফল দেয়।

এ বিষয়ে চৌগাছা উপজেলা উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম বলেন, নজরুল ইসলামের এলাচ ক্ষেত পরিদর্শন করেছি। তাকে সবধরনের সহযোগিতার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

উল্লেখ্য, বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশও এলাচ চাষের জন্য উপযোগী। অন্য মসলার মতো এলাচ চাষের জন্য আলাদা কোনো জমির প্রয়োজন হয় না। এটা অন্য গাছের ছায়াতলে চাষ করা যায়। এলাচ চাষে রাসায়নিক সার খুবই কম লাগে। জৈব সারই যথেষ্ট, যা অন্য মসলা চাষের তুলনায় অনেক লাভজনক।

Flowers in Chaniaগুগল নিউজ-এ বাংলা ম্যাগাজিনের সর্বশেষ খবর পেতে ফলো করুন।ক্লিক করুন এখানে

Related Articles

Back to top button